পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব হিসেবে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়াদ বাড়াতে সম্মত হয়েও তাঁকে দিল্লিতে ডেকে পাঠাল কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে, বর্তমান মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য। আর কেন্দ্রের এই নির্দেশের পরই এই ঘটনায় শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক তরজা। একদিকে যেখানে তৃণমূলের তরফে এই নির্দেশকে রাজনৈতি প্রতিহিংসা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে, অন্যদিকে বিজেপির তরফে বিষয়টিকে প্রশাসনিক আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
৩১ মে সকাল ১০টায় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নয়াদিল্লির নর্থ ব্লকে পার্সোনেল ট্রেনিং দফতরে উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'এই বিজেপির প্রতিহিংসাপূর্ণ একটি কাজ। নির্বাচনে এত বড় হার তাঁরা হজম করতে পারছেন না। এটা নোংরা রানীতি হিসেবে ইতিহাসে লেখা থাকবে। এক আমলাকে তাঁর অবসরের আগে ডেকে পাঠানো হচ্ছে, যখন তিনি ঘূর্ণিঝড় বিদ্ধস্ত এলাকা পরিদর্শনে ব্যস্ত। এচাই প্রমাণ করে যে বিজেপি কতটা বাংলা বিরোধী, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কতটা বাংলা বিরোধী।'
এদিকে এই ঘটনাকে পুরোপুরি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত আখ্যা দিয়ে বিতর্ক এড়াতে চেয়েছেন বঙ্গ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। এই বিষয়ে তিনি বলেন, 'আইএএস আধিকারিকদের চাকরিতে নিয়োগ করা হয় কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারা। এগুলি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। এটা কোনও রাজনৈতির বিষয় নয়, যে আমি এর বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব।'
উল্লেখ্য, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কার্যকালের মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রের কাছে অনুরোধ করেছিল রাজ্য। সেইসময় কেন্দ্র ইতিবাচক সাড়াও দিয়েছিল। ৬ মাস না হলেও ৩ মাসের জন্য বাড়িয়ে দিয়েছিল আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কার্যকালের মেয়াদ। তবে ফের কেন আলাপনকে ডেকে পাঠানোর নির্দেশ দিল কেন্দ্র?
উল্লেখ্য শুক্রবার কলাইকুণ্ডায় ইয়াস পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পর্যালোচনা বৈঠকে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও সেখানেই ছিলেন। কিন্তু দু'জনের কেউই আজ প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে যাননি। পর্যালোচনা বৈঠকও অনুপস্থিত ছিলেন তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনের ঘটনা মোটেই ভাল চোখে দেখেনি বিজেপি, কিংবা কেন্দ্রীয় সরকার। আর এর ঘণ্টাখানেক পরেই রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশ।