বিধানসভা ভোটের আগে ফের বর্ধমানের রাজনীতিতে চড়ছে পারদ। দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে পূর্ব বর্ধমানের বৈকুন্ঠপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান-সহ মোট ছয়জন তৃণমূল নেতাকে তিন বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। শনিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানান বর্ধমান ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি পরমেশ্বর কোঙার।
আরও পড়ুন: বিজয়া সম্মিলনী যোগ দিয়ে ভোটের বার্তা, বিজেপিকে নিশানা অভিষেকের
সাসপেন্ড হওয়া নেতাদের মধ্যে রয়েছেন পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জয়দেব বন্দ্যোপাধ্যায়, লবকুমার দাস, সব্যসাচী চৌধুরী, তুষার সামন্ত, অম্বিকা দাস ও জরু আলম। ব্লক সভাপতির অভিযোগ, এঁরা দলীয় শৃঙ্খলা ভেঙে প্রকাশ্যে দল ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছিলেন। শুধু তাই নয়, তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে। পরমেশ্বর কোঙারের বক্তব্য, দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার মতো একাধিক ঘটনার অভিযোগ এসেছে। তাই ব্লক কমিটির বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে উপপ্রধান-সহ ছয় জনকে তিন বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হবে। তিনি আরও জানান, ঘটনাটি জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে জানানো হয়েছে।
তবে পালটা সুরে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন সাসপেন্ডেড উপপ্রধান জয়দেব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ব্লক সভাপতি যদি দুর্নীতির অভিযোগ করেন, তাহলে প্রমাণ দেখান। মুখে মুখে অভিযোগ করলে হবে না। শুধু তাই নয়, তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ব্লক সভাপতি কীভাবে জেলা কমিটির সদস্যকে সাসপেন্ড করতে পারেন? জয়দেবের কথায়, দলবিরোধী কাজ করলে আগে শোকজ করা হয়। সেটা না করেই সাসপেন্ড করা হল, এটা দলের নিয়মবিরুদ্ধ। রাজনৈতিক মহলের মত, এই সাসপেনশন আসলে বর্ধমান ২ ব্লকে ক্রমবর্ধমান গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেরই বহিঃপ্রকাশ। দীর্ঘদিন ধরেই ব্লক সভাপতি ও উপপ্রধানের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। অভিযোগ, জয়দেব ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে একের পর এক পোস্ট করছিলেন। অবশেষে সেই বিরোধ এবার প্রকাশ্যে এসে পড়ল সাসপেনশনের মধ্য দিয়ে। ঘটনাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।