দুর্গাপুজোর সময় কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে ত্রিপুরা সরকারকে নিরন্তর নজরদারি জারি রাখা ও সচেতনতা প্রসারের নির্দেশ দিল রাজ্যের উচ্চ আদালত। উল্লেখ্য, সম্প্রতি কোভিড-১৯ নির্দেশিকা সংশোধন করেছিল রাজ্য সরকার। যেখানে পরিস্থিতি বিচার করে নিরাপদে উৎসব পালনের একাধিক নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
রাজ্য সরকারের পেশ করা কোভিড-১৯ সংক্রান্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি অখিল কুরেশি ও বিচারপতি শুভাশিস তলাপাত্রের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ৭ অক্টোবরের ১০ শতাংশ সংক্রমণের তুলনায় ১১ অক্টোবর সংক্রমণের হার কমে দাঁড়িয়েছে ৫ শতাংশ। তবে সংক্রমণের হার কমলেও, এখনই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলা যাচ্ছে না।
এ দিন কেরালায় ওনাম উৎসবের পর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত করোনাভাইরাস সংক্রমণের উদাহরণ টেনে রাজ্য সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্ক করে উচ্চ আদালত। রাজ্য সরকার জনবহুল স্থানে দুর্গাপুজো আয়োজনের নির্দেশাবলী প্রকাশ করলেও, পুজো উদ্যোক্তা, কমিউনিটির নেতৃত্বে থাকা সদস্য ও সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সচেতনতা প্রসারের জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
অন্য দিকে সরকারকে একটি মেল আইডি তৈরির কথাও বলেছে আদালত। যেখানে যে কোনও সরকারি সেন্টার বা হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীদের পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয়ে সাধারণ মানুষ পরামর্শ ও অভিযোগ পাঠাতে পারবেন।
শুধু তাই নয়, সচেতনতা প্রসারের জন্য সংবাদমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রসঙ্গও তুলে ধরে উচ্চআদালত। সঠিক সংবাদ পরিবেশন ও জনমানসে সামাজিক দায়িত্ব পালনের সচেতনতা গড়ে তোলা সংবাদমাধ্যমের কর্তব্য বলে উল্লেখ করে হাই কোর্ট। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সংবাদমাধ্যমের কাছে উচ্চ আদালতের প্রত্যাশা, বর্তমান অতিমারীর সময় তারা জরুরি সতর্কতা গ্রহণ, সরকারি নির্দেশ পালনের মতো বিভিন্ন বিষয় জনগণের সামনে তুলে ধরা ও সচেতনতা প্রসারের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।
আইনমন্ত্রী রতন লাল নাথ জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশ যথাযথ ভাবে পালিত হচ্ছে কি না, তা সুনিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় নজরদারি চালানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর ত্রিপুরা রাজ্য সরকার একটি নির্দেশিকা জারি করে, যেখানে পুজো উদ্যোক্তাদের অনলাইনে সাবস্ক্রিপশান সংগ্রহ করতে বলা হয়। আবার পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে পুজোমণ্ডপ কমিয়ে আনার বিষয়ও উল্লেখ ছিল ওই নির্দেশিকায়। পাশাপাশি পুজোমণ্ডপে আসা-যাওয়ার জন্য সংকীর্ণ রাস্তা এড়িয়ে যাওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। মণ্ডপে এক সঙ্গে ৫-১০ জনের বেশি কাউকে প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে না বলেও জানানো হয়েছে।
তবে ১১ অক্টোবর সংশোধিত নির্দেশিকা প্রকাশ করে সরকার। সেখানে দুর্গাপুজোর আগে সকল পুরোহিত ও পুজো উদ্যোক্তাদের কোভিড টেস্ট করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। আবার মাইক্রোফোনে পুষ্পাঞ্জলির আয়োজন করতে বলা হয়, সে ক্ষেত্রে একসঙ্গে ১০-১৫ পুষ্পাঞ্জলি দিতে পারবেন। পুষ্পাঞ্জলির জন্য ফুলও আনতে হবে বাড়ি থেকে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আগরতলার গোবিন্দ পন্থ হাসপাতালের বিরুদ্ধে দুর্বল স্বাস্থ্য পরিষেবার অভিযোগ উঠলে সেপ্টেম্বর মাসে উচ্চআদালতের তরফে সুয়ো মোটো মামলা করা হয়।