আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের শুনানির উপর অনাস্থা প্রকাশ করতে গিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মাননীয় প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও তাঁর স্ত্রীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বসলেন এক যুবক। যার জেরে খেসারতও দিতে হল তাঁকে। সুমিত কুণ্ডু নামে বারাসতের বাসিন্দা ওই যুবককে বুধবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আরজি কর কাণ্ডের আবহে সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে অসংখ্য আলোচনা ও সমালোচনা। কেউ কেউ শালীনতার মাত্রা ছাড়াচ্ছেন। এমনকী তোয়াক্কা করছেন না আইনি বিধিনিষেধেরও। যাচাই না করেই বহু ভুয়ো তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।
এর আগে নিগৃহীতার নাম, পরিচয়, ছবি ও ভিডিয়ো পর্যন্ত দেদার পোস্ট করছেন বহু ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। এই বিষয়ে আদালত যেমন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, তেমনই পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকেও বারবার আমজনতাকে সতর্ক করা হয়েছে।
এত কিছুর পরও অনেকেই সচেতন হচ্ছেন না। ঠিক যেমনটা হননি বারাসতের সুমিত কুণ্ডু। আরজি কর কাণ্ডের জেরে ইদানীং সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও 'উত্তরবঙ্গ লবি' নিয়ে অনেক কথা চালাচালি চলছে। অনেকেই আবার শীর্ষ আদালতের অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। সুমিতও তেমনটা করতে গিয়েই বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন।
নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে রাজ্যের চিকিৎসা ক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গ লবির তথাকথিত 'মাথা'র সঙ্গে দেশের প্রধান বিচারপতির স্ত্রীর আত্মীয়তা রয়েছে বলে দাবি করেন সুমিত। একই কারণে আরজি কর কাণ্ডে শীর্ষ আদালতের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের অবস্থান নিয়েও সরাসরি প্রশ্ন তোলেন।
বিষয়টি পুলিশের নজরে আসতেই কড়া পদক্ষেপ করে তারা। বুধবার রাতে সুমিতের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে বারাসত থানার পুলিশ। রাতেই বারাসত হাসপাতালে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। পুলিশ সূত্র খবর, এরপর আইন অনুসারেই সুমিতকে আদালতে পেশ করা হবে।
এদিকে, পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরই মুখে কুলুপ আঁটেন সুমিত কুণ্ডু। বুধবার রাতে সাংবাদিকরা তাঁকে বারবার এই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করলেও কোনও উত্তর দেননি তিনি। বরং, একটা সময় পর ক্যামেরা থেকে নিজের মুখ আড়াল করতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন ওই যুবক।
ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, অনেকেই আইন না জেনে সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন সব পোস্ট করে বসেন, যা দণ্ডনীয় অপরাধ। আরজি কাণ্ডের পর বারবার এমন ঘটনা সামনে আসছে। এর থেকেই স্পষ্ট, মানুষ সামাজিক মাধ্যমে মতামত জানাতে যতটা উদগ্রীব, নিজেদের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে ততটা সচেতন নন। আর তার ফলে অন্যরা যেমন সমস্যায় পড়েন, তাঁদের নিজেদেরও বিড়ম্বনা বাড়ে।