উন্নাওয়ে নাবালিকাকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হল বহিষ্কৃত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গার। আগামী বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণা করবে দিল্লির তিস হাজারি আদালত। 'ক্ষমতাশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য' নির্যাতিতার প্রশংসা করেন বিচারক।
ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারা ও পকসো আইনে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে সেঙ্গার। তবে প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালায় পেয়েছে সেঙ্গারের সহযোগী শশী সিং।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর লখনউয়ের একটি আদালত থেকে দিল্লির আদালতে মামলাটি সরিয়ে আনা হয়। গত ৫ অগস্ট থেকে মামলাটির প্রতিদিন শুনানি হয়। আজ সেঙ্গারকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। রায় পড়ে শোনানোর সিবিআইকেও তিরস্কার করেন বিচারক ধর্মেশ শর্মা। আদালতের পর্যবেক্ষণ, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা দেরিতে চার্জশিট পেশ করায় শুনানি পিছিয়ে গিয়েছিল। পাশাপাশি, যুবতীর বাড়ি না গিয়ে তাঁকে বারবার সিবিআই অফিসে ডাকার জন্য তদন্তকারী অফিসারকেও তুলোধনা করেন বিচারক।
২০১৭ সালের ৪ জুন ওই নাবালিকাকে (বর্তমানে যুবতী) ধর্ষণ করে সেঙ্গার। অভিযোগ জানালেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে দাবি করেন যুবতী। ইতিমধ্যে গত বছর ৩ এপ্রিলে যুবতীর বাবাকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসানো হয়। বিচারের আশা প্রায় ছেড়ে দিয়ে ৮ এপ্রিল উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বাড়ির সামনে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দেন তিনি। তারপরই ধর্ষণের অভিযোগ সামনে আসে। কিন্তু, পরদিনই 'রহস্যজনক পরিস্থিতিতে' লক-আপে মৃত্যু তাঁর বাবার। যদিও তাঁকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে।
তবে এখানেই শেষ হয়নি। পরিবার-সহ তাঁকে সেঙ্গার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে জুলাইয়ে সুপ্রিম কোর্টে চিঠি লেখেন যুবতী। সেই মাসেই রায়বরেলিতে আইনজীবী ও দুই কাকিমার সঙ্গে যাওয়ার সময় তাঁদের গাড়িতে ধাক্কা মারে একটি বেপরোয়া লরি। সেটির নম্বর প্লেট কালি লেপে দেওয়া ছিল। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তাঁর এক কাকিমার। যিনি এই মামলায় অন্যতম সাক্ষীও ছিলেন। গুরুতর জখম হন যুবতী নিজেও।
তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দিল্লির এইমসে নিয়ে আসা হয়। গত সেপ্টেম্বরে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। তাঁর পরিবার অভিযোগ করে, যুবতীকে খুন করতেই পরিকল্পিতভাবে ওই ধাক্কা মারা হয়েছিল। সেই সময় যুবতীর সঙ্গে কোনও নিরাপত্তারক্ষীও ছিলেন না। এফআইআরে যুবতীর কাকা দাবি করেন, তাঁর ভাইঝির যাত্রা নিয়ে সেঙ্গারকে সব তথ্য দিত পুলিশ। পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যুবতী ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তায় সিআরপিএফ জওয়ানদের মোতায়েন করা হয়।
তবে সেঙ্গারের বিরুদ্ধে আরও চারটি মামলার শুনানি চলছে।