বাংলা নিউজ > কর্মখালি > Class 10th Exam Topper: ১৬ কিমি সাইকেল চালিয়ে যেত স্কুলে, পড়ত গাছের তলায়- দশমের পরীক্ষায় চতুর্থ হল চানু

Class 10th Exam Topper: ১৬ কিমি সাইকেল চালিয়ে যেত স্কুলে, পড়ত গাছের তলায়- দশমের পরীক্ষায় চতুর্থ হল চানু

নিজের সেই সাইকেলের সঙ্গে সিনাম জাইফাবি চানু। (ছবি সৌজন্যে হিন্দুস্তান টাইমস)

সোমবার দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষার ফলপ্রকাশ করেছে অসমের মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। রাজ্যে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে সিনাম জাইফাবি চানু। ৬০০-র মধ্যে ৫৯১ নম্বর পেয়েছে ১৬ বছরের মেয়ে। তবে সেখানে থামতে চায় না চানু। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়তে চায়।

বিশ্বকল্যাণ পুরকায়স্থ

স্পিচ ডিস-অর্ডার আছে। ১৬ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে যেত স্কুলে। গাছের তলায় পড়াশোনা করে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিত। সেই মেয়ে অসমের দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় চতুর্থ স্থান দখল করল শিলচরের চাঁদপুর গ্রামের মেয়ে সিনাম জাইফাবি চানু। ৬০০-র মধ্যে ৫৯১ নম্বর পেয়েছে ১৬ বছরের মেয়ে। তবে সেখানে থামতে চায় না চানু। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করতে চায়। বাড়তি ঝোঁক আছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তথা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের প্রতি। তবে চানুর কথায়, 'কোডিং শেখার জন্য আমার কম্পিউটার বা ল্যাপটপ নেই। কিন্তু আমি নিশ্চিত যে একদিন সেই সুযোগ আসবে আমার।'

সোমবার দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষার ফলপ্রকাশ করেছে অসমের মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। রাজ্যে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে চানু। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, জেনারেল সায়েন্সের ১০০ নম্বর পেয়েছে শিলচরের মেয়ে। অঙ্ক এবং সোশ্যাল স্টাডিজে পেয়েছে ৯৮ নম্বর। মণিপুরিতে ৯৭ নম্বর এবং ইংরেজিতে ৮৮ নম্বর পেয়েছে। দুটি বিষয়ে তো রাজ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে চানু।

তবে সেই কাজটা সহজ ছিল না। চানুর পরিবারের আর্থিক অবস্থা একেবারেই স্বচ্ছল নয়। দক্ষিণ অসমের কাছাড় জেলার শিলচর টাউনের ৪৬ কিমি দূরে সোনাই নদীর চাঁদপুর গ্রামে কোনওক্রমে সংসার চলে চানুদের। বাবা সিনোম ইবোজা সিনহার একটি ছোট্ট দোকান আছে। ট্রাকও চালিয়ে দিন গুজরান করে থাকেন প্রাক্তন গ্রাাম পঞ্চায়েত প্রধান। মা ইবেমা দেবী অসম সরকারের টিচার্স এলিজিবিটি টেস্টে (টেট) পাশ করেছিলেন। কিন্তু সরকারি কলেজের শিক্ষকতার জন্য বয়সের সর্বোচ্চসীমা পার করে যাওয়ায় চাকরি হয়নি। ফলে পরিবারের আর্থিক দুর্দশা কাটেনি। পরিস্থিতি এমনই যে স্বচ্ছ পানীয় জল মেলে না। সোনাই নদী থেকে জল সংগ্রহ করে তা ঘরোয়া উপায়ে শুদ্ধ করে জল পান করতে হয়।

আরও পড়ুন: ISC 2023 Topper Manya Gupta: ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং নয়, মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চান ISC টপার তথা কলকাতার মেয়ে

ছোটবেলা থেকেই সেই কষ্টের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছে চানু। তার বাবা জানিয়েছেন, পরিবারের আর্থিক অবস্থা একেবারেই স্বচ্ছ্বল না হওয়ায় চানু ও তার ছোট ভাইকে খুব সামান্য সাহায্য করতে পেরেছেন। তবে হাল ছাড়েনি চানু। স্কুলের অন্য বন্ধুদের মতো গাড়িতে চেপে স্কুলে যেতে পারত না। চানুর কথায়, 'আমার বাড়ি থেকে যে পথ দিয়ে স্কুলে যেতে হয়, সেটা ভাঙাচোরা এবং কর্দমাক্ত। রোদ উঠলে বা বৃষ্টি হলে সাইকেলে চেপে স্কুলে যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হত। কিন্তু আমি জানতাম যে আমায় পড়াশোনা করতে হবে। নিজেকে দ্বিতীয় কোনও বিকল্প দিইনি।'

আরও পড়ুন: হাড়ের সমস্যায় বাড়েনি উচ্চতা, একাধিক রোগকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ISC-তে সফল ঈশিতা

সত্যিই নিজেকে দ্বিতীয় কোনও বিকল্প দেয়নি চানু। নিজের ইচ্ছাশক্তি এবং মানসিক দৃঢ়তার পরিচয় দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে। আর এতদিন সেই যে ইচ্ছাশক্তি ও মানসিক দৃঢ়তার পরিচয় দিয়ে এসেছে চানু, সেটার ফল আজ পেয়েছে। তবে সেখানেই থামতে চায় না ১৬ বছরের মেয়ে। আগামিদিনে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে নিজের স্বপ্নপূরণ করতে চায়। 

(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)

বন্ধ করুন