চাপমুক্ত থাকুন পড়ুয়ারা। পিঠে ওই ভারী ব্যাগের বোঝা বয়ে বেড়ানোর দরকার নেই আর। স্কুল শিক্ষাকে আরও আনন্দদায়ক, পরীক্ষামূলক করে তুলতে নতুন ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কয়েকদিনের জন্য দেশের সব স্কুলের ছেলেমেয়েদের ব্যাগের বোঝা কমবে। এ জন্য নতুন প্রস্তুতি শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যেই মন্ত্রক স্কুলগুলিতে ব্যাগ-বিহীন দিবস বাস্তবায়নের নির্দেশিকা পর্যালোচনা করেছে। আসলে এনসিইআরটি-এর একটি ইউনিট, পিএসএই সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ ভোকেশনাল এডুকেশন (PSSCIVE), 'ব্যাগ-লেস ডে' বাস্তবায়নের জন্য একটি নির্দেশিকা প্রণয়ন করেছিল। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, শিক্ষা মন্ত্রক ব্যাগ-বিহীন দিবস বাস্তবায়নের বিষয়ে এনসিইআরটি-এর এই নির্দেশিকাগুলিই পর্যালোচনা করে বলেছে যে সেগুলি আরও সংশোধন করা উচিত।
১০ দিনের জন্য ব্যাগ থেকে স্বস্তি পাবেন শিক্ষার্থীরা
৬-৮ শ্রেণীর সমস্ত শিক্ষার্থীদের ১০ দিনের জন্য ব্যাগ থেকে স্বস্তি দেওয়ার সুপারিশ করেছিল জাতীয় শিক্ষা নীতি। দাবি ছিল, এই সময়ে, শিক্ষার্থীরা স্থানীয় দক্ষতা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ইন্টার্নশিপ করবে এবং প্রথাগত স্কুল সেটিং এর বাইরে গিয়ে বিভিন্ন শিক্ষামূলক কার্যকলাপে নিযুক্ত হবে। নীতিতে আরও বলা হয়েছিল যে এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের তাদের স্কুলের অন্তর্গত বৃহত্তর ইকোসিস্টেমের জন্য উপলব্ধি তৈরি করতে সহায়তা করা। এই বিষয়টি নিয়েই ভেবে দেখছে মন্ত্রণালয়।
ব্যাগহীন দিবস চালু হলে কী কী সুবিধা নিশ্চিত
এক আধিকারিক বলেছেন, ব্যাগ-হীন দিনগুলি সারা বছর চালু থাকবে, যার মধ্যে শিল্প, কুইজ, খেলাধুলা এবং দক্ষতা-ভিত্তিক শিক্ষার মতো বিভিন্ন কার্যকলাপ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। পড়ুয়ারা সময়ে সময়ে শ্রেণিকক্ষের বাইরে ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে যুক্ত হবে, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও পর্যটন স্থান পরিদর্শন, স্থানীয় শিল্পী ও কলাকুশলীদের সঙ্গে আলাপচারিতা। তাদের গ্রাম, তহসিল, জেলা বা রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনও করানো হবে।
এছাড়াও, ব্যাগহীন দিনে শিক্ষার্থীদের জন্য সবজি বাজার পরিদর্শন এবং জরিপ পরিচালনা করা, পোষা প্রাণীর যত্নের উপর জরিপ এবং প্রতিবেদন লেখা, ডুডলিং, কিছু তৈরি করা, ঘুড়ি উড়ানো, বইমেলা আয়োজন, বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট এবং সৌর শক্তি পার্ক পরিদর্শন, ইত্যাদি বিষয়গুলোতে জোর দেওয়ার বিষয়ে সুপারিশ করেছিল এনসিইআরটি।
এ প্রসঙ্গে আলোচনা করার জন্য বৈঠকে বসেছিল শিক্ষা মন্ত্রক। এরপরেই শিক্ষা মন্ত্রকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, বৈঠকে শিক্ষার্থীদের স্থানীয় পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করা, জলের বিশুদ্ধতা পরীক্ষা করতে শেখানো। এছাড়াও তাদের স্থানীয় উদ্ভিদ ও প্রাণীর স্বীকৃতি এবং স্থানীয় স্মৃতিসৌধ সংরক্ষণসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সব শেষে মন্ত্রণালয় দাবি করেছে যে এই নির্দেশিকা আরও পরিমার্জিত করতে হবে অর্থাৎ আরও সুন্দর করে তুলতে হবে।