প্রবল বিতর্ক ও প্রতিবাদের জের। শেষ পর্যন্ত লিঙ্কডিনে ছেড়ে দিলেন বম্বে শেভিং কোম্পানির সিইও শান্তনু দেশপান্ডে। সম্প্রতি যুবসমাজকে কর্মজীবনের প্রথম ৫-৬ বছর দিনে ১৮ ঘণ্টা করে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাঁর সেই পোস্টের জেরে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
এক টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাত্কারের একটি ভিডিয়ো শেয়ার করেছেন শান্তনু দেশপান্ডে। সেটি শেয়ার করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে লিখেছেন, লিঙ্কডিনে এটি আমার শেষ পোস্ট। এতদিন বেশ ভালই কেটেছে।
এর আগে একটি লিঙ্কডিনে পোস্টে সবার অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন শান্তনু। এদিকে সাম্প্রতিক ভিডিয়ো সাক্ষাত্কারে তিনি নিজের অবস্থানও ব্যাখ্যা করেন। বলেন, আমি প্রতিদিন ১৮ ঘণ্টা কাজ করার কথা বলতে চাইনি। অন্য একটা দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আমার কথাটা অতিরঞ্জিত করা হয়েছে। আমি আসলে সবাইকে নিজের সম্পূর্ণটা দিয়ে মন দিয়ে কাজ করতে বলেছিলাম।
শান্তনু জানান, তাঁর এই পোস্টে জেরে তাঁর মা-বাবার পর্যন্ত হাজার হাজার অজানা মানুষ খারাপ মেসেজ করেছেন। তিনি বলেন, যাঁরা আমার মা-বাবাকে মেসেজ পাঠিয়ে বলছেন যে, 'আপনার ছেলে একজন দাস মালিক' তাঁদের একটাই কথা বলব, আপনারাই জিতলেন।
টিভি সাক্ষাত্কারে শান্তনু বলেন, আমার পোস্টটি যাঁদের অনুভূতিতে আঘাত করেছে, তাঁদের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমি আসলে আমার ভাবনাটা হয় তো সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারিনি। ঠিক কী পোস্ট করেছিলেন শান্তনু? জানতে হলে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে।
দেশপান্ডে বলেন, যে কোনও ক্ষেত্রেই- শিল্প, খেলাধুলা, ব্যবসা, নতুন চাকরি, যাই হোক না কেন... একমাত্র কঠোর পরিশ্রম করার বিষয়টাই আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকে। আপনার হাতে কত টাকা, আপনার বন্ধু, আপনার ঈশ্বর প্রদত্ত প্রতিভা, শহর না গ্রামে জন্মেছেন এগুলোর কোনওটাই কিন্তু আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। আপনি কতটা পরিশ্রম করবেন, শুধুমাত্র সেটাই আপনার নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে।
তাঁর মতে, ২২-২৭ বছর বয়সের মধ্যে, প্রত্যেকের জীবনে কাজ করার সুযোগ সবচেয়ে বেশি থাকে। এই সময়ে কোনও আলাদা দায়বদ্ধতাও থাকে না। কিন্ত ২৮ বছর বয়সের পর থেকে বিয়ে, সন্তান ও অন্য নানা দায়িত্ব এসে যায়। ফলে এই অল্প বয়সটাতেই সম্পূর্ণ পরিশ্রম করে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। তার ভিত্তিতে বাকি জীবনটা সহজে এগিয়ে যাওয়া যাবে।
যদিও শান্তনুর যুক্তি মানতে নারাজ লিঙ্কডিন ব্যবহারকারীদের এক বৃহত্ অংশ। অন্যান্য অনেক সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মীরাও তাঁর মানসিকতার বিরোধিতা করেছেন। তাঁদের মতে, কাজের সময়টুকু সঠিকভাবে পারফর্ম করলে অফিসে এত বেশি সময় থাকার প্রয়োজন হয় না। আর যে কোনও বয়সেই কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্যের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন তাঁরা।
এ বিষয়ে আপনার কী মতামত? জানান কমেন্টে।