কোভিড পরিস্থিতিতে সিলেবাস ছাঁটার কারণে অসমে দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যক্রম থেকে বাদ পড়লেন জওহরলাল নেহরু। একই কারণে ছাঁটাই হয়েছে ১৯৮৪ সালের শিখ-বিরোধী দাঙ্গা, অযোধ্যার রাম মন্দির জমি সমস্যা এবং ২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গাও।
কোভিড পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের উপর থেকে অযথা চাপ কমাতেই পাঠ্যক্রমের ৩০ শতাংশ ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তের ফলেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে অসম উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ। প্রসঙ্গত, ছয় মাস বন্ধ থাকার পরে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে অসমে ফের স্কুলে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে শুধুমাত্র নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য।
‘স্বাধীনতা উত্তর ভারতীয় রাজনীতি’র পাঠ্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে প্রথম তিনটি সাধারণ নির্বাচন, রাষ্ট্র গঠনের উদ্দেশে নেহরুর চিন্তাধারা,নেহরুর বিদেশ নীতি এবং নেহরুর পরে রাজনৈতিক উত্তরাধিকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের ‘গরিবি হটাও’ নীতি। সেই সঙ্গেই ছেঁটে দেওয়া হয়েছে মণ্ডল কমিশন রিপোর্টের প্রয়োগ, ১৯৮৪ সালের পঞ্জাব সমস্যা ও শিখ-বিরোধী দাঙ্গা, ইউনাইটেড ফ্রন্ট ও এনডিএ সরকার, ২০০৪ সালের লোক সভা নির্বাচন ও ইউপিএ সরকার এবং অযোধ্যা জমি বিবাদ ও গুজরাত দাঙ্গা।
অসম উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছে, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রমের থেকে কোন কোন অংশ বাদ পড়বে, তা নির্ধারণ করেছে রাজ্যের স্বনামধন্য স্কুলের বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষকদের নিয়ে গড়া শিক্ষা কমিটি।
পর্ষদের এই সিদ্ধান্তে পুঠিমারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহ-অধ্যাপিকা সুজাতা হাতি বড়ুয়া ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন, ‘আমি শুধু উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যক্রম থেকে বাছাই করা বিষয় ছাঁটাই কমিটির সদস্যদের নাম ও চেহারাগুলি দেখতে চাই।’
উল্লেখ্য, এই সমস্ত বিষয় ছাড়াও পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য বিষয় যেমন ‘উত্তরাধিকার, জাত ও শ্রেণি’, ‘ভক্তি-সুফি পরম্পরা’ এবং ‘রাজারা এবং উপাখ্যান’ থেকে বেশ কিছু অংশ ছেঁটে ফেলা হয়েছে।
এ ভাবেই অসম ও উত্তর-পূর্ব ভারতের ইতিহাস ও ভূগোল সম্পর্কে জ্ঞান চর্চায় ২০১৮ সালে চালু করা ‘স্বদেশ অধ্যয়ন’ নামে বিষয়ের পাঠ্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ১৮২৬সালের ইয়ানদাবো চুক্তি, যার সুবাদে অসম ব্রিটিশ সরকারের অধীনে আসে, অহম রাজত্বের পতন এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ ও অসমে জনসংখ্যা স্ফীতি বিষয়ক অধ্যায়গুলি।