পুরো গ্রীষ্মের ছুটিতে পড়ুয়াদের জন্য বিশেষ ক্লাস নিতে হবে শিক্ষকদের। সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই) পরিচালিত বিদ্যাজ্যোতি স্কিমের অধীনে ত্রিপুরার মোট ১২৫টি স্কুলের জন্য এই নিয়ম জারি করা হয়েছে। শিক্ষা বিভাগ জানিয়েছে যে বোর্ড পরীক্ষায় খারাপ পারফরম্যান্স করেছে যে সমস্ত পড়ুয়ারা, বোর্ড পরীক্ষায় যথাযথ যোগ্যতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে যারা, সেই সমস্ত শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ক্লাস পরিচালনা করতে হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যে বিষয়ে ছাত্রছাত্রীরা কম্পার্টমেন্টাল ফল করেছে, তাদের জন্য ক্লাস শুরু হবে।
রাজ্য সরকার ২০২১ সালে মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদানের জন্য অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সহ মোট ১০০টি স্কুলকে বিদ্যাজ্যোতি স্কুল-এ রূপান্তর করার অনুমোদন দিয়েছিল৷ এই সমস্ত স্কুলগুলি মিশন ১০০-এর অধীনে সিবিএসইয়ের আওতায় ছিল৷ পরে আরও ২৫ টি স্কুলকে এই বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছিল৷
সিবিএসসি ফলাফল অনুসারে, এই বছর স্কুলগুলির দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে ৬১ শতাংশ এবং ৫৫ শতাংশ পাসের রেকর্ড করা হয়েছে, যা অন্যান্য ফলাফলের তুলনায় অত্যন্ত কম। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা এ প্রসঙ্গে বলেছেন, তিনি বোর্ড পরীক্ষায় ছাত্রদের খারাপ পারফরম্যান্স সম্পর্কে সচেতন এবং শীঘ্রই শিক্ষা বিভাগের সঙ্গে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার করবেন।
যদিও সিপিআইএম এবং কংগ্রেসের মতো বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো এই খারাপ পাসের হারের জন্য বিজেপিকেই দায়ী করছে। বলা হচ্ছে, মূলত যোগ্য শিক্ষকের অভাবের কারণেই এই খারাপ হাল হয়েছে পড়ুয়াদের। সঠিক কোনও পরিকল্পনা ছাড়াই, বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলিকে ইংরেজি মাধ্যমে রূপান্তরের জন্য বিজেপির সমালোচনা করা হচ্ছে। সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী এই পরিস্থিতির জন্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এবং প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথের সমালোচনা করে বলেছেন, বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলিকে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের আওতায় আনার সরকারের অপরিকল্পিত সিদ্ধান্তের কথাআমরা বহুদিন ধরেই বলে আসছি। তাদের পূর্বপরিকল্পিত উদ্যোগে এমন একটি অপরিকল্পিত পরিস্থিতি তৈরি করা নিয়ে ইতিমধ্যেই ছাত্র সংগঠন প্রতিবাদ করেছে।
কংগ্রেসের মুখপাত্র পার্থ আচার্য বলেছেন, ‘আমরা মনে করি যে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পটি সমাজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করছে, কারণ শুধুমাত্র অর্থ প্রদান করতে পারে, এমন পড়ুয়াই এই স্কুলগুলিতে পড়তে পারে৷ আমরা শিক্ষাবিদদের নেতৃত্বে একটি প্যানেল গঠন করার আবেদন করছি যাতে এই প্রকল্পটি কীভাবে বিনামূল্যে পরিচালনা করা সম্ভব হয়, তা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে৷ এর দরুণ সকল ছাত্ররাই বিনামূল্যে ভালো স্কুলে পড়াশোনা করতে পারবে।’