উচ্চশিক্ষা বিভাগের 'ভালোমানুষির' তীরে বিদ্ধ কলেজগুলি। বিনামূল্যে আবেদনকে কেন্দ্র করে অস্বস্তি বাড়ছে বলে দাবি করেছে একাধিক কলেজ। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, বিনামূল্যে কলেজে আবেদন করা যাওয়ায় অহেতুক অনেক পড়ুয়াই কলেজে আবেদন করে রাখছেন। তিনি চান, অন্য কোনও কলেজে ভরতি হতে। কিন্তু ‘ব্যাক-আপ’ হিসেবে একাধিক কলেজে আবেদন করছেন। ফলে চাপ বাড়ছে বলে একাধিক কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছে।
- ব্যাপারটা কী
নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে শুরু হচ্ছে চার বছরের অনার্স কোর্স। উভয়েরই আবেদন চলবে অনলাইনে। কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে ভরতি হবে। কলেজগুলির দাবি, বিনামূল্যে আবেদনে নিষেধাজ্ঞা চাই। নাহলে ভরতির চাপ সামলানো দায়। এক-একটি কলেজে খুব বেশি হলে ২৫০০টি সিট থাকতে পারে। এর বেশি নয়। কিন্ত এই কয়েক হাজার সিটে যদি হাজার হাজার আবেদন আসে, কী করে চলবে।
সূত্র বলছে, কোনও কলেজে ১৫০০ সিটে ৪৫,০০০ আবেদন, ২৮০০ সিটে ৬০,০০০, আবার কোথাও ২২০০ সিটে ৫২,০০০ আবেদন জমা পড়েছে। কোনও কোনও পড়ুয়া তো এক সঙ্গে ১০টিরও বেশি আবেদন করে ফেলেছেন। তার ফলে মেধাতালিকা তৈরির ক্ষেত্রে অত্যন্ত সমস্যা হচ্ছে। একাধিক মেধাতালিকা প্রকাশ করেও চাপ কমছে না। মেধাতালিকা দিলেও আসন ফাঁকা পড়ে থাকছে। ইতিমধ্যেই ওই তালিকা প্রকাশের আগে পড়ুয়ারা হয়ত অন্য কলেজে বা অন্য বিষয়ে ভরতি হয়ে গিয়েছে, তাই আসন ফাঁকা থেকে যাচ্ছে।
ইতিমধ্যে একাধিক কলেজের তরফে উচ্চশিক্ষা দফতরের কাছে সেই বার্তা পাঠানো হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে উচ্চশিক্ষা দফতরের এক আধিকারিকের স্পষ্ট বার্তা, এসব না করে যদি কেন্দ্রীয় ভাবে আবেদন নেওয়া হয়, তাহলে সমস্যাও বাড়বে না, অনায়াসে মেধাতালিকাও প্রকাশ করা যাবে।
প্রসঙ্গেত, ২০২০ সালের ১৩ অগস্ট, করোনা মহামারীতে ছারখার সবকিছু। এমন পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের আর্থিক বোঝা কমাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ঘোষণা করেছিলেন যে রাজ্য সরকার পরিচালিত কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্নাতক কোর্সে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনও আবেদন ফি নেওয়া হবে না। সেইসময় রাজ্য সরকার বলেছিল, তথ্য বইয়ের জন্যও কলেজে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া উচিত নয়। একইভাবে, স্নাতক কোর্স অফার করে এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও আবেদনকারীদের কাছ থেকে কোনও ফি নেওয়া উচিত নয়।