কলেজে ফাইনাল টার্ম পরীক্ষা আয়োজন সংক্রান্ত UGC-র নির্দেশের বিরুদ্ধে আবেদন সমূহের রায় স্থগিত রাখল সুপ্রিম কোর্ট।
দেশজুড়ে কোভিড অতিমারী পরিস্থিতির মধ্যেই গত ৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় ও তাদের অধীনস্থ কলেজের চূড়ান্ত বর্ষের অন্তিম পরীক্ষা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয় UGC।
কমিশনের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একগুচ্ছ আবেদন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে। কোভিড অতিমারী পরিস্থিতির মধ্যে পরীক্ষা আয়োজন করলে তা শিক্ষার্থীদের ন্বাস্থ্যজনিত ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেবে, এই যুক্তি পেশ করা হয় আবেদনে। সেই সমস্ত আবেদনের শুনানির শেষে রায় ঘোষণা প্রক্রিয়া এ দিন স্থগিত রাখল শীর্ষ আদালত।
কমিশনের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একগুচ্ছ আবেদন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে। সেই সমস্ত আবেদনের শুনানির শেষে রায় ঘোষণা প্রক্রিয়া এ দিন স্থগিত রাখল শীর্ষ আদালত।
এ দিন সকাল ১০.৫৩ মিনিটে মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে আইনজীবী এম আর দাতার জানান, সারাদেশের মধ্যে ওই রাজ্যে কোভিড সংক্রমণের হার শীর্ষে। এই অবস্থায় UGC অবনমনের পথে হাঁটতে পারে কিন্তু তাই বলে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে কোনও মতেই বাধ্য করতে পারে না।
এর পর ওড়িশার অ্যাডভোকেট জেনারেল তাঁর সওয়ালে বলেন, ‘ওড়িশায় Covid-19 রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে UGC-র নির্দেশিকা মেনে পরীক্ষার আয়োজন করা রাজ্য সরকারের পক্ষে অসম্ভব।’
পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক সংগঠনের তরফে আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত তাঁর আবেদনে বলেবন, ‘গত ৬ জুলাই UGC-র নির্দেশিকা কোনও বিধিসম্মত নথি নয়। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ অযৌক্তিক। পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়ার আগে কোনও রাজ্যের কোনও ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা করেনি UGC। তা করলে আশল পরিস্থিতি বোঝা যেত।’
এই যুক্তি শুনে বিচারপতি অশোক ভূষণ মন্তব্য করেন, ‘আমরা আগেও বলেছি, অনুমতিক্রমে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিজস্ব নীতি নির্ধারণ করতে পারে।’
দিল্লি সরকারের পক্ষে আইনজীবী কে ভি বিশ্বনাথন তাঁর আবেদনে বলেন, ‘সব পরীক্ষার্থীর কাছে স্টাডি মেটেরিয়াল ও বইপত্র পৌঁছয়নি। এমনকি অনলাইন শিক্ষার ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। UGC-র পূর্বতন নির্দেশিকাগুলি ছিল শর্তাবলী। তাকে কখনই আবশ্যিক করা হয়নি।’
দুপুর ১.১২ নাগাদ UGC-র তরফে সওয়াল করা শুরু করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি বলেন, ‘ফাইনাল টার্ম পরীক্ষা আবশ্যিক। তাকে কখনই রাজ্যের ইচ্ছানুযায়ী বাতিল করা সম্ভব নয়। ফাইনাল ইয়ার হল ডিগ্রির বছর। তাকে কখনও উপেক্ষা করা যায় না।’
তিনি জানান, UGC-র নির্দেশিকায় পরীক্ষা আয়োজনের ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থী, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার স্বার্থে থার্মাল স্ক্যানিং, মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব বিধি পালন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সলিসিটর জেনারেল বলেন, ‘UGC উল্লিখিত চূড়ান্ত বর্ষের অন্তিম পরীক্ষার তারিখ পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই নির্দিষ্ট হয়েছে। তা কোনও হুকুম নয়।’
সব শেষে তিনি জানান, পরীক্ষা বাতিলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আবেদন জানাতেই পারে, কিন্তু বিনা পরীক্ষায় ডিগ্রি প্রদানের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এর পরেই দুপুর ২.০৯ মিনিটে বিচারপতি অশোক ভূষণ এই মামলার রায় ঘোষণা পরবর্তী শুনানির দিন পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করেন।