সময়ের সঙ্গে ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছিল পেশী। নড়াচড়াও কঠিন হয়ে উঠেছিল। হাঁটা এবং লেখার মতো দৈনন্দিন কাজগুলো খুব কষ্ট করেই করতে হত। তবে, শারীরিক চ্যালেঞ্জ মেধার সামনে হার মানল আরও একবার। অসাধ্য সাধন করে দেখালেন আমদাবাদের মালভ শাহ। সিএ ফাউন্ডেশন এবং ইন্টারমিডিয়েট ফলাফল বুধবার ঘোষণা করা হয়েছে। আর এই ১৮ বছর বয়সী ছাত্র চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি (সিএ) ফাউন্ডেশন পরীক্ষায় ৪০০ এর মধ্যে ৩২৮ স্কোর করেছেন।
মালভ আগাগোড়াই পড়াশোনায় ভালো। থালতেজের একটি সিবিএসই স্কুল জেবার স্কুল ফর চিলড্রেন পড়াশোনা করেছেন তিনি। দ্বাদশ বোর্ডে কমার্স নিয়ে পড়াশোনা করেছেন মালভ। পরীক্ষায় ৯৬ শতাংশ পেয়ে, তিনি জিএলএস বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকম প্রোগ্রামে যোগ দেন। ফিনান্স এবং অ্যাকাউন্টিং এর প্রতি তাঁর আগ্রহ, মালভকে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি করতে অনুপ্রাণিত করেছিল। সেই অনুপ্রেরণা এখন তাঁর সফলতার কারণ।
আরও পড়ুন: (মোটা টাকা পেলেও YouTube Video এডিট করতে নারাজ, নেপথ্যে কী কারণ?)
বিরল পেশীর রোগে আক্রান্ত হয়েও কীভাবে নিজেকে সামলেছেন মালভ
বয়স তখন সবে ছয়। বিরল পেশীর রোগে আক্রান্ত হন মালভ শাহ। তাঁর এই রোগের নাম, মাসকুলার ডিস্ট্রোফি। এই জিনগত রোগ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পেশীগুলিকে দুর্বল করে তোলে, যা ক্রমশ শক্তিক্ষয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নড়াচড়া করতেও অসুবিধা সৃষ্টি করে। হাঁটা এবং লেখার মতো দৈনন্দিন গুরুত্বপূর্ণ কাজও কঠিন করে তোলে।
এমন গুরুতর শারীরিক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময়, মালভের জন্য একটি স্বস্তির বিষয় ছিল, যে তাঁর পরিবারও চিকিৎসা পেশার সঙ্গে যুক্ত। মালভের বাবা, ডাঃ গোপাল শাহ, আমদাবাদের একজন বিখ্যাত নিউরোসার্জন এবং তাঁর মা, ডাঃ রুপাল শাহ একজন ফিজিওথেরাপিস্ট। মালভের বোন হেলি আবার আমেরিকায় গ্রাফিক ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা করছেন।
মালভের পরিস্থিতি সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে, তাঁর মা, অর্থাৎ ডাঃ রূপল শাহ জানান, 'মালভ ছয় বছর বয়সে পেশীবহুল ডিস্ট্রোফিতে আক্রান্ত হয়েছিল। তাঁর পেশী দুর্বল, এবং তিনি ঘোরাঘুরি করার জন্য হুইলচেয়ার ব্যবহার করেন। তবে, শরীর দুর্বল হলেও, তাঁর মন খুবই শক্তিশালী। তাই সবসময় সাহসিকতার সাথে জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছেন মালভ। কখনও অভিযোগ করেননি।'
আরও পড়ুন: (Google: কেন অফিসে ফ্রিতে ফাটাফাটি খাবার দেয় গুগল? উত্তর দিলেন সুন্দর পিচাই)
চার্টার্ড অ্যাকাউনটেন্ট হওয়ার স্বপ্নে কতটা বাধা এসেছিল
মালভের মা জানিয়েছেন, 'আমরা দেখেছি শারীরিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও, মালভ খুব স্মার্ট এবং অ্যাকাউন্টিং বিষয়ে সত্যিই উৎসাহী ছিলেন। তাঁর কাউন্সেলর তাঁকে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিং করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। যেহেতু মালভ কোচিং ক্লাসে যেতে পারেন না, তাই তিনি অনলাইনেই ক্লাস করতেন এবং নিজের চেষ্টায় পড়াশোনা করেছেন। মালভের কঠোর পরিশ্রম এবং মনোযোগ খুবই ভাল ফল দিয়েছে।'