শুধুমাত্র নিজের পুরস্কারটি গ্রহণ করে, আর শিক্ষকদের কৃতিত্ব দিয়েই ক্ষান্ত হননি, গাজায় হওয়া অত্যাচারের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন আইআইটির কৃতি ছাত্র ধনঞ্জয় বালাকৃষ্ণন। পুরস্কারের মঞ্চে দাঁড়িয়েই এই নিয়ে বাকিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
সম্প্রতি আইআইটি মাদ্রাজের ৬১ তম সমাবর্তনে, অলরাউন্ড দক্ষতার জন্য গভর্নরের পুরস্কার জিতেছেন বালাকৃষ্ণন, বলেছেন, 'আমি কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উত্থাপন করার জন্য প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার না করলে আমি নিজের এবং আমার নিজের সবকিছুর প্রতি অবিচার করব। প্যালেস্টাইনে গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে, যেখান বিপুল সংখ্যক নিরীহ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। এই হত্যাযজ্ঞের কোনও শেষ নেই।'
তিনি আরও বলেছেন, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গণিত ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো বিষয়কে বিধ্বংসী শক্তিতে পরিণত করে, ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে ইজরায়েল। ইজরায়েলের মতো সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে সাহায্য করে চলেছে বিভিন্ন টেক জায়েন্ট। যুদ্ধে টেক জায়ান্টদের ভূমিকা সম্পর্কে, তিনি আরও বলেছেন, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র হিসাবে, আমরা টেক জায়ান্ট কোম্পানিগুলিতে বড়- লেভেলের চাকরি পেতে কঠোর পরিশ্রম করি। যাতে প্রচুর সুবিধা সহ লাভজনক চাকরি পেতে পারি। অর্থাৎ, এই টেক জায়ান্টরা আজ আমাদের জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু আজ দেখা যাচ্ছে, হত্যা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহৃত প্রযুক্তি, ইজরায়েলকে সরবরাহ করে এই মর্যাদাপূর্ণ সংস্থাগুলির মধ্যে অনেকগুলিই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্যালেস্তাইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িত রয়েছে। তাদের কাছেও এর উত্তর নেই।
আরও পড়ুন: (Pollution control board: প্লাস্টিক জমিয়ে বিক্রির ব্যবস্থা করতে অ্যাপ আনার পরিকল্পনা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের)
তাই, ধনঞ্জয়ের দাবি, ‘যে ইঞ্জিনিয়াররা বাস্তব জগতে স্নাতক হচ্ছেন, ভবিষ্যতে ভালো কাজের জন্য এগিয়ে চলেছেন, কিন্তু কী কাজ করছেন, তার পরিণতি কী হতে পারে, সে সম্পর্কে সচেতন হওয়াও আমাদেরই কাজ। আমি আশা করি আমরা এই সচেতনতাকে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আরও যুক্ত করতে পারব, জাত, শ্রেণী, ধর্ম এবং লিঙ্গের ভিত্তিতে নির্যাতিতদের মুক্তির জন্য আমরা কী করতে পারি, তা বুঝে যথাযথ পদক্ষেপও করতে পারব।’এদিন ধনঞ্জয় বালাকৃষ্ণান, তাঁর অন্যান্য সহপাঠীদেরও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য, অবিরাম প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, দর্শকদের হাততালির মধ্য দিয়ে এদিন তাঁর বক্তব্য শেষ করেছেন ধনঞ্জয়। তাঁর দাবি, আইজ্যাক নিউটন বলেছিলেন যে তিনি যেখানে যেতে চেয়েছিলেন তাঁকে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি দৈত্যদের কাঁধের উপর দাঁড়িয়েছিলেন। আর আমি এটা বলতে চাই যে, আমরা এখন, বিশাল ভারতীয় জনসংখ্যার উপর দাঁড়িয়ে এবং প্রতিটি মানুষকে তাদের দুঃখ থেকে বের করে আনা আমাদের দায়িত্ব। নিষ্ক্রিয়তা হল জটিলতা এবং আমি আশা করি যে আপনি এবং আমি এবং আমরা সবাই সঠিক পদক্ষেপ করতে পারব, তা যত কঠিনই হোক না কেন।