যে পড়াশোনা করে, সে খেলাধুলোও পছন্দ করে। এমনই বার্তা এবছরের জয়েন্ট এন্ট্রান্স এক্সাম অ্যাডভান্সের টপার বেদ লহোতি। দিল্লি আইআইটি জোনের পরীক্ষার্থী বেদ এবছর সর্বভারতীয় টপার হয়েছেন। ৩৬০ নম্বরের মধ্যে তিনি ৩৫৫ নম্বর পেয়েছেন। অর্থাৎ, ৯৮.৬১ শতাংশ। কোটার অ্যালেন ক্লাসরুমের ছাত্র বেদ গত দু'বছর ধরে একা একা জীবনযাপন করছেন। সর্বভারতীয় টপার হওয়ার জন্য বেদ কীভাবে পড়াশোনা করেছিলেন তিনি? প্রতিদিন তিনটি বিষয় তিন ঘণ্টা করে পড়তেন বলে জানান বেদ। পরে পরীক্ষা ঘনিয়ে এলে প্রয়োজনের ভিত্তিতে পড়ার সময় আরও কিছুটা বাড়িয়ে দেন বেদ। (আরও পড়ুন: একদিনে ৬০০০ পয়েন্টের পতন অতীত, ৭৭০০০-এর গণ্ডি পার করে ইতিহাস সেনসেক্সের)
আরও পড়ুন: বেতন বা ভাতা আটকে রাখা কি প্রতারণামূলক অপরাধ? বড় পর্যবেক্ষণ আদালতের
আরও পড়ুন: বাড়বে ইনসেন্টিভ! ভোট মিটতেই বদলে যাবে সরকারি কর্মীদের বেতন কাঠামো?
এদিকে টেস্ট সিরিজ, মক টেস্ট এবং স্টাডি ম্যাটেরিয়ালের সাহায্যে পড়াশোনা করেন বলে জানান বেদ। ক্লাস চলাকালীন সংক্ষিপ্ত নোট প্রস্তুত করার ওপরেও জোর দেন তিনি। এদিকে বেদ জানান, একটা সময়ে তিনি টেস্ট সিরিজে কম নম্বর পেয়েছিলেন। তবে তিনি কখনও হাল ছাড়েননি বলে জানান। এই আবহে আগামী বছর জেইই অ্যাডভান্সড নিতে আগ্রহী প্রার্থীদের জন্য বেদের বার্তা, লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হওয়া উচিত নয় এবং কোনও বিভ্রান্তি যেন থমকে না দিতে পারে। বেদ বলেন, ‘জীবনে একটা লক্ষ্য থাকা দরকার। আর সেই লক্ষ্য বড় হওয়া উচিত। তারপর পরিশ্রমটা ওই এতই পর্যায়ে করতে হবে। নিজের পরিশ্রমে ভরসা রাখতে হবে। যদি লক্ষ্য অর্জনের জন্য় পরিশ্রম করেন, তাহলে সাফল্য পাবেনই। শিখতে গেলে যথা সম্ভব প্র্যাকটিস দরকার।’ নিজের ছোটবেলার কথা বলতে গিয়ে বেদ জানান, স্কুলে কোনও বিষয়ে কম নম্বর পেলে দাদুকে সঙ্গে নিয়ে স্কুলে চলে যেতেন ছোট্ট বেদ। লক্ষ্য ছিল, দাদুর সঙ্গে গিয়ে তিনি শিক্ষকের কাছে জানতে চাইবেন, কেন পেলেন কম নম্বর? এই ঘটনার কথা নিজেই জানিয়েছেন জেইই অ্যাডভান্সের টপার ইন্দোর নিবাসী বেদ।
এবারের পরীক্ষায় ৪৮ হাজার ২৪৮ জন প্রার্থী পাশ করেছেন। উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের মধ্যে মাত্র ৭ হাজার ৯৬৪ জন ছাত্রী। দিল্লি জোন থেকে বেদ লাহোতি জয়েন্ট এন্ট্রান্স এক্সাম অ্যাডভান্স-এ প্রথম স্থান অর্জন করেছেন এবারে। উল্লেখ্য, দেশের ২৩টি আইআইটি-তে ভরতির জন্য জেইই অ্যাডভান্স পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করা হয়। এবারে এই পরীক্ষায় পেপার ১ ও ২-এর জবাব দিতে বসেছিবেন ১ লাখ ৮০ হাজার ২০০ জন পরীক্ষার্থী। এদিকে এবারে পরীক্ষায় সর্বভারতীয় স্তরে দ্বিতীয় স্থানে থাকা আদিত্যও দিল্লি জোনের পড়ুয়া বলে জানা গিয়েছে। এদিকে মেয়েদের মধ্যে সবথেকে বেশি মার্কস পেয়েছেন দ্বিজা ধর্মেশকুমা রপ্যাটেল। তিনি ৩৬০ নম্বরে ৩৩২ পেয়েছেন। তিনি বম্বে জোনের পরীক্ষার্থী। জোন ভিত্তিক ফলাফলের নিরিখে দিল্লি শীর্ষ স্থানে আছে এবার। দিল্লি জোনের ১০ হাজার ২৫৫ জন পরীক্ষার্থী এবার উত্তীর্ণ হয়েছেন জেইই অ্যাডভান্সে। এদিকে আইআইটি বম্বে জোনের ৯ হাজার ৪৮০, কানপুর জোনের ৪ হাজার ৯২৮ এবং ভুবনেশ্বরের ৪ হাজার ৮১১ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন এবারে।
মেধা তালিকায় প্রথম ১০ জনের মধ্যে চারজন আইআইটি-মাদ্রাজ জোনের এবং তিনজন করে আইআইটি-দিল্লি এবং বোম্বে জোনের। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে আদিত্য আইআইটি-দিল্লি জোন থেকে এবং তারপরে আইআইটি-মাদ্রাজ জোন থেকে ভোকগালাপল্লি সন্দেশ হয়েছেন তৃতীয়। বাকি শীর্ষ ১০ প্রার্থীরা হলেন - রিদম কেডিয়া (রুরকি), পুট্টি কুশল কুমার (মাদ্রাজ), রাজদীপ মিশ্র (বোম্বে), দ্বিজ ধর্মেশকুমার প্যাটেল (বোম্বে), কোডুরু তেজেশ্বর (মাদ্রাজ), ধ্রুভিন হেমন্ত দোশি (বোম্বে), এবং আল্লাদবোইনা এসএস ডিবি (মাদ্রাজ)। এদিকে শীর্ষ ৫০০ প্রার্থীদের মধ্যে মাদ্রাজ জোন থেকে ১৪৫ জন, বোম্বে জোন থেকে ১৩৬ জন, দিল্লি জোন থেকে ১২২ জন, রুরকি থেকে ৪৮ জন, ভুবনেশ্বরের ২৭ জন এবং গুয়াহাটি থেকে পাঁচজন উত্তীর্ণ হয়েছেন এবারে।