শিক্ষিকাদের বদলির ব্যাপারে মানবিক হতে হবে। এবার কর্তৃপক্ষকে এমনটাই পরামর্শ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। নিয়ম ছিল, আছে, থাকবে। কিন্তু মানবিকতাও জরুরি। সম্প্রতি দু’টি আলাদা মামলায় দুই শিক্ষিকার বদলির আবেদন কার্যকরের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই বিচারেই মানবিকতার কথা বলেন তিনি।
(আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইংরেজি শব্দ আদতে এক রোগের নাম! কারা ভোগেন এই ব্যাধিতে)
প্রথম আবেদনকারীর বর্তমান পোস্টিং দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর। বাড়িতে তাঁর তিন বছরের একরত্তি শিশু। সন্তানের বেড়ে ওঠার সময় বাবা ও মা দু’জনকেই প্রয়োজন। বিশেষ করে জরুরি মায়ের স্নেহ। তাই আবেদনকারী মায়ের কলকাতার কাছাকাছি স্কুলে বদলির প্রয়োজন। স্কুল শিক্ষা সচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে তেমন একটা বদলির বিবেচনা করতে বলা হয়েছে । দ্বিতীয় আবেদনে অভিযোগ রয়েছে ডব্লিউবিসিএস স্বামীর বিরুদ্ধে জোর করে গর্ভপাত ও খুনের চেষ্টার। তাঁকে সেই সব অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি। এর ভিত্তিতেই তিনি বদলি চেয়েছিলেন। আদালত তা কার্যকর করার নির্দেশ দেন।
(আরও পড়ুন: সুগারের ঠেলায় চিন্তার ভাঁজ কপালে? রাতে ঘুমোনোর আগে ৫ কাজ করলেই হবে)
উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা সুপর্ণা রায়। ২০২১ সালে তিনি স্কুল শিক্ষা দফতরে বদলির আবেদন করেন। তাঁর চাকরির মেয়াদ পাঁচ বছর হয়নি। কিন্তু তিন বছরের সন্তানকে নিয়ে বাড়ি থেকে প্রায় চারশো কিলোমিটার দূরে চাকরি করতে যেতে হচ্ছে। যা তাঁর পক্ষে প্রায় অসম্ভব। তাঁর স্বামী কর্মসূত্রে শিয়ালদা ডিভিশনের ট্রেনের গার্ড। দক্ষিণ দিনাজপুরে গিয়ে তাঁর পক্ষে সন্তানকে দেখা সম্ভব নয়। ভার্চুয়ালেই বাবাকে দেখে সন্তান। তাই তিনি বদলি চেয়েছিলেন। এদিকে পাঁচ বছর চাকরির মেয়াদ হয়নি। তাই স্কুল শিক্ষা দফতর আবেদন গ্রাহ্য করেনি। এর পর সুপর্ণা হাইকোর্টে মামলা করেন।
অন্যদিকে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে কর্মরত ডব্লিউবিসিএস (গ্রুপ সি) অফিসার স্বামী ও স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী। নানা বিষয়ে অশান্তির জেরেভূমি দফতরের ওই অফিসার স্ত্রীকে খুনের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। এমনকী স্ত্রীর অমতে তাঁর গর্ভপাতও করান বলে দাবি। এই মর্মে ২০২০ সালে রায়গঞ্জ থানায় অভিযোগ করেন স্ত্রী। বর্তমানে তাঁর স্বামী আরামবাগ মহকুমায় কর্মরত।
কিন্তু মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তাঁকে নানাদিক থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। তিন বছর আগে তাই বদলির জন্য আবেদন করেন তিনি। কিন্তু তা গ্রাহ্য করা হয়নি। এই দাবিতে তিনিও মামলা করেন। সেই মামলাতে বিচারপতি বদলি কার্যকর করতে বলেন। গোটা ঘটনা মানবিক ভাবে বিবেচনা করতে বলেন স্কুল শিক্ষা দফতরকে।