অলস ব্যক্তিরাই খালি বাড়ি থেকে কাজ করেন। তাঁদের কম বেতন দেওয়া উচিত্। টুইটারে এমনই দাবি করলেন ব্রিটেনের ধনকুবের অ্যালান সুগার। তাঁর এই মন্তব্যের জেরে উঠল বিতর্কের ঝড়।
এর সূত্রপাত সাংবাদিক অ্যান্ড্রিউ পিয়ার্সের একটি টুইট থেকে। তিনি লেখেন, কর্মীরা বাড়ি থেকে কাজ করছে, তাই ১.৫ বিলিয়ন পাউন্ডে সরকার(ব্রিটিশ) ওয়াইটহল অফিস বিক্রি করে দিচ্ছে। এরপরের লাইনেই তিনি 'বোমা' ফাটান। তিনি প্রশ্ন করেন, 'সরকার ওঁদের অফিসে ফেরার নির্দেশ দিচ্ছে না কেন?'
সেই টুইটটি রিটুইট করেন ধনকুবের অ্যালান সুগার। সঙ্গে নিজের মতামতও যোগ করেন। লেখেন, 'কাজ করার বদলে অলস অপদার্থগুলো বাড়িতে বসে গলফ আর টেনিস দেখছেন। আর আমরা করদাতারা তাঁদের বেতন দিয়ে চলেছি। তাঁদের অফিসে ফিরিয়ে আনুন, নয় তো বরখাস্ত করুন।'
এখানেই থামেননি তিনি। ব্রিটিশ ধনকুবের আরও লেখেন, বাড়ি থেকে কাজ করে এমন জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশই অলস অকর্মণ্য। তাদের মহামারীর সময়ের জীবনটাই পছন্দ। নার্স, ডাক্তার, সাফাইকর্মী, রেস্তোরাঁ কর্মী, নির্মাতা এবং ডেকোরেটর, ট্যাক্সি এবং ট্রাক চালকদের কী হবে? তাঁরা তো বাড়ি থেকে কাজ করতে পারেন না। কিন্তু তারা তো ঠিক এই অলস অকর্মণ্যগুলোকে পরিষেবা প্রদান করে।
তাঁর এই মন্তব্যের জেরে বিতর্কের ঝড় ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকেই জানান যে, ওয়ার্ক ফ্রম হোমে কাজের মান আরও ভাল হয়। তাছাড়া অফিস বাবদ সংস্থার যে খরচ, সেটাও বেঁচে যায়। বরং বাড়িতে কর্মীদের বিদ্যুতের খরচ দেওয়া উচিত্ সংস্থাগুলির।
বিদ্যুতের খরচের প্রসঙ্গে অ্যালান পাল্টা বলেন, 'বিদ্যুতের বিল এমনিতেও দিতে হত। বরং অফিস যাতায়াতের খরচ বেঁচে যাচ্ছে, বেতন থেকে সেই টাকাটা কেটে নেওয়া উচিত্।'
অপর এক ব্যক্তি লেখেন, আপনি লোককে অফিস ফিরতে বলছেন। এদিকে নিজে বাড়ি বা বিলাসবহুল জাহাজে বসে কাজ করছেন। গরীব আর বড়লোকের জন্য আলাদা আলাদা নিয়ম বুঝি? তার উত্তরে অ্যালান তাকে 'নির্বোধ' বলে রিপ্লাই দিয়েছেন।
৭৫ বছর বয়সী অ্যালান সুগার একজন ব্রিটিশ ব্যবসায়ী, লেখক, রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক উপদেষ্টা। অ্যালান অ্যামস্ক্রিন নামক এক বিজ্ঞাপন সংস্থার মালিক। তাঁর অ্যামসএয়ার নামের একটি চার্টার জেটের ব্যবসা আছে। তার পাশাপাশি ভিজলেন নামে একটি আইটি ফার্ম আছে তাঁর। গাড়ির যন্ত্রাদি, রেডিয়োর ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল টাকার মালিক তিনি। লেবার পার্টির সমর্থক। ব্রিটেনের ধনীতম ব্যক্তিদের মধ্যে তিনি অন্যতম। এক সময়ে জনপ্রিয় ফুটবল দল টটেমহ্যামের অন্যতম মালিক ছিলেন তিনি।