ইতালির তাসকানিতে অবস্থিত ছোটো দ্বীপ গিগলিও। জনসংখ্যা ৮০০। সারা বিশ্ব যেখানে করোনার প্রভাবে ধুঁকছে, খোশমেজাজে আছেন এই দ্বীপের বাসিন্দারা। কারণ এখানে দাঁত ফোটাতে পারেনি করোনা।
করোনা হওয়ার যথেষ্ট অনুকুল পরিবেশ ছিল এই সমুদ্র কুলবর্তী অঞ্চলে। গোটা গিগলিওতে একজনই চিকিৎসক আছেন। গত ৪০ বছর ধরে মানুষের শরীর স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখছেন আরমান্ডো শিয়াফিনো। তিনিও ভেবেছিলেন দ্রুত ছড়াবে করোনা যখন তিনজন বিদেশি পর্যটক করোনা আক্রান্ত হিসাবে এই দ্বীপে আসেন। শিয়াফিনো বলেন যে এর আগে মিজলস থেকে স্মল পক্স, খুব দ্রুত দ্বীপে রোগ ছড়িয়েছে।
ইতালিতে যখন কেসের সংখ্যা তুঙ্গে উঠেছিল, তখন সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা হয়েছিল। তখন এই দ্বীপে একজন ক্যানসার বিশেষজ্ঞ আটকে পড়েন। পাওলা মুটি অবাক হয়ে যান কীভাবে দ্বীপে ছড়ায়নি করোনা, যদিও বাইরে থেকে যারা এসেছেন, তাদের করোনা ধরা পড়ার আগে তারা অবাধে ঘুরেছেন, স্থানীয়দের সঙ্গে মিশেছেন। প্রশাসন টেস্ট করিয়েছে এখানকার মানুষদের করোনার জন্য, কিন্তু সবাই নেগেটিভ এসেছেন। জুন থেকে ফের খুলে দেওয়া হয়েছে গিগলিও দ্বীপ পর্যটকদের জন্য।
ঠিক কী কারণে এই দ্বীপের মানুষ করোনা মুক্ত থাকলেন তা স্পষ্ট নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটা হয়তো ভাগ্যের বিষয় যে সংক্রমণ ছড়ায়নি। হয়তো খুব বেশি করোনা আক্রান্ত ওই দ্বীপে আসেনি, এই কথাও বলছেন অনেকে। গিগলিও দ্বীপের মানুষ অবশ্য বিশ্বাস করেন তাঁরা প্রকৃতির কোলে থাকেন বলে তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। কোনও বিশেষ জেনেটিক ফ্যাক্টরের জন্যই কী তাঁরা করোনা মুক্ত, সেই নিয়েও চলছে জল্পনা। ফান্ডিং পেলে এই নিয়ে কাজও করতে আগ্রহী পাওলা। আপাতত অবশ্য তিনি এই আশ্চর্য ঘটনার কথা একটি বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশ করবেন। সত্যিটা যাই হোক, আপাতত গিগলিও-র মানুষ স্বস্তিতে আছেন, সেটাই বড় কথা।