লক ডাউনের সময়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ক্যাম্পাসগুলি যখন বন্ধ, সেই সময় পাস হয়েছিল নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০। এই শিক্ষানীতির অংশ হিসেবেই উচ্চশিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ একটি কোর্স এমফিল বাতিল করা হয়েছিল। এবার সেই নীতিই লাগু হতে শুরু করল দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে এমফিল-এর ভর্তিও স্থগিত হয়ে গেল এবছর থেকে। ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রি’র শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনেক আলোচনার পরেও কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিলের ভবিষ্যৎ নিয়ে। জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারে ইউজিসি জানিয়ে দিয়েছে কোনও এমফিল কোর্সকেই আর স্বীকৃতি দেবে না তারা। এর ফলে অনিশ্চিত রাজ্যের ক্লিনিকাল সাইকোলজির বহু ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন।
ইউজিসির এই ফতোয়া রাজ্য সরকার মানবে না বলে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানালেও বিষয়টির সমাধান বের করা বেশ কঠিন। অন্যদিকে রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া’র নিয়ম অনুসারে ক্লিনিকাল সাইকোলজিতে এমফিল ডিগ্রি না থাকলে কোনও শিক্ষার্থী প্র্যাকটিস করতে পারেন না, রেজিস্ট্রেশন নম্বরও জেনারেট করা হয় না তাদের নামে। ফলে এই কোর্স বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকটাই অনিশ্চিত কর্মসংস্থানের সুযোগও। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ভারপ্রাপ্ত ভিসি শান্তা দেবীর দিক থেকে কোনও সদর্থক প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘এই কোর্স আরসিআই-এর মঞ্জুরিতেই চলে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ামক সংস্থা ইউজিসি, তাই আমরা এখন আরসিআই এবং ইউজিসি দুই সংস্থাকেই ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করে দেখব।’ ভবিষ্যতে কোন পদ্ধতিতে এমফিল কোর্স চালু হয় নাকি, তা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায়, তার উত্তর দেবে সময়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে ঠিক হয়েছিল জানুয়ারি মাসে লিখিত প্রবেশিকা পরীক্ষার পরেই ওই মাসে ভর্তির জন্য ভাইবা পরীক্ষা নেওয়া হবে। কিন্তু ইউজিসি’র নির্দেশিকা আসার পর সার্বিকভাবে গোটা প্রক্রিয়াটাই প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়েছে। এখন দেখার কী পদ্ধতিতে জট কাটে সাইকোলজির এমফিল কোর্সের ক্ষেত্রে। প্রসঙ্গত, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ এর পাশাপাশি রাজ্য সরকারও রাজ্য শিক্ষানীতি ঘোষণা করে ২০২৩ সালে। শিক্ষা কেন্দ্র-রাজ্যের যৌথ তালিকাভুক্ত হওয়ায় আগামীতেই এমন বহু দ্বন্দ্বই দেখা দেবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে বিশেষজ্ঞ মহল।