গুগল, মাইক্রোসফ্ট এবং আমাজনের অফিসে গেলেই চারদিকে খালি ভারতীয় কর্মী। ইউরোপ-মার্কিন মুলুকে বুদ্ধির কাজে ভারতীয় কর্মীদের কদর অনেকটাই বেশি। এদিকে সাম্প্রতিক বড় সংস্থাগুলির ছাঁটাই পর্বে চাপে এই প্রবাসী কর্মীরাই। বড় বড় সংস্থাগুলি থেকে হঠাত্ই মোটা বেতনের চাকরি হারিয়েছেন তাঁরা। মার্কিন মুলুকে বর্তমানে বড় সংস্থাগুলিতে নিয়োগও কম। এদিকে ওয়ার্ক ভিসায় এতদিন সেদেশে ছিলেন এই কর্মীরা। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নতুন চাকরি খুঁজে বের করাটাই এখন তাঁদের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়। কারণ সময়ের মধ্যে নতুন চাকরি না পেলেই, মার্কিন মুলুকে আর থাকতে পারবেন না তাঁরা। ফিরে আসতে হবে দেশে। আরও পড়ুন: বিদেশে Microsoft-এ ২১ বছর চাকরি, হঠাত্ ছাঁটাই হয়ে গেলেন ভারতীয় সফটওয়্যার বিশারদ
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের নভেম্বর থেকে প্রায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ২ লক্ষ আইটি কর্মী ছাঁটাই হয়েছেন। গুগল, মাইক্রোসফ্ট, ফেসবুক এবং আমাজনের মতো কোম্পানি থেকে বিপুল সংখ্যক কর্মী বরখাস্ত হয়েছেন। এই কর্মীদের একটি বড় অংশ ভারতীয়। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, এই কর্মীদের ৩০-৪০% ভারতীয়। এঁদের অনেকেই H-1B এবং L1 ভিসায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। অনেকে পরিবারও নিয়ে গিয়েছেন।
H-1B ভিসা একটি অ-অভিবাসী ভিসা। এর অধীনে মার্কিন সংস্থাগুলিতে তাত্ত্বিক বা প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ বিশেষ পেশার কর্মীরা সেখানে চাকরি সূত্রে বাস করেন। প্রযুক্তি সংস্থাগুলি ভারত এবং চিনের মতো দেশ থেকে প্রতি বছর কয়েক হাজার কর্মী নিয়োগ করে। আর তাঁদের অস্ত্রই এই H-1B ভিসা।
অন্যদিকে L-1A এবং L-1B ভিসা হল অস্থায়ী ইন্ট্রাকোম্পানি হস্তান্তরকারীদের জন্য। এঁরা মূলত সংস্থার ম্যানেজারিয়াল পদে উচ্চস্তরে কাজ করেন। অথবা, এঁদের বিশেষভাবে প্রতিভাবান হিসাবে গণ্য করা হয়।
বিপুল সংখ্যক ভারতীয় আইটি কর্মী H-1B-র মতো নন-ইমিগ্র্যান্ট ওয়ার্ক ভিসায় সেদেশে রয়েছেন। তাঁদের আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই নতুন চাকরি খুঁজতে হবে।
আমাজন কর্মী গীতা (নাম পরিবর্তিত) মাত্র মাস তিনেক আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সংস্থার ছাঁটাইপর্বে নাম এসেছে তাঁরও। চলতি সপ্তাহেই তাঁকে চিঠি ধরিয়েছে সংস্থা। বলা হয়েছে, আগামী ২০ মার্চ-ই আমাজনে তাঁর শেষ দিন।
H-1B ভিসার ক্ষেত্রে, চাকরি হারালে সর্বোচ্চ ৬০ দিন সময় দেওয়া হয়। তার মধ্যেই তাঁধের নতুন চাকরি খুঁজে বের করতে হবে। অন্যথায় তাঁদের ভারতে ফিরে আসা ছাড়া কোনও বিকল্প থাকবে না। সংস্থাগুলি যদিও অনেক ক্ষেত্রেই এমন ভিসাধারী কর্মীদের ২-৩ মাস হাতে থাকতে বরখাস্তের বিষয়ে জানাচ্ছে। এর ফলে সংস্থায় শেষ কয়েকদিন কাজ করতে করতেই নতুন চাকরির খোঁজ করার সুযোগ পান কর্মীরা। আরও পড়ুন: বছরে বেতন ছিল ৪-৮ কোটি টাকা! Google, Microsoft-র ছাঁটাইয়ে বেকার অনেকে: রিপোর্ট
এই বিষয়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রবাসী ভারতীদের সংগঠনগুলিও। রবিবার গ্লোবাল ইন্ডিয়ান টেকনোলজি প্রফেশনালস অ্যাসোসিয়েশন (GITPRO) এবং ফাউন্ডেশন ফর ইন্ডিয়া অ্যান্ড ইন্ডিয়ান ডায়াস্পোরা স্টাডিজ (FIIDS) আইটি পেশাদারদের চাকরি খুঁজতে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছে। US সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেসকেও (USCIS) সামগ্রিক পরিস্থিতি ব্যাখা করার চেষ্টা করছেন তাঁরা।