নিট পরীক্ষায় যে গ্রেস মার্কস দেওয়া হয়েছে, সেটা কি ফিরিয়ে নেওয়া হবে? সেই রাস্তা খোলা রাখল সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকার (NEET-UG) আয়োজক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)। নিটের রেজাল্টে যে তুমুল জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে, সেই বিতর্কের মুখে শনিবার এনটিএয়ের ডিরেক্টর জেনারেল সুবোধকুমার সিং জানিয়েছেন, নিটে যে গ্রেস মার্কস দেওয়া হয়েছিল, সেটা খতিয়ে দেখার জন্য চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে সেই কমিটি। এনটিএয়ের ডিরেক্টর জেনারেলের কথায়, 'এক সপ্তাহের মধ্যে ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (ইউপিএসসি) প্রাক্তন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বাধীন সেই কমিটি সুপারিশ জমা দেবে। আর ওই প্রার্থীদের রেজাল্ট পরিবর্তিত হতে পারে।'
তাহলে কি অ্যাডমিশন প্রক্রিয়া থমকে যাবে?
তবে ভরতির প্রক্রিয়া থমকে থাকবে না বলে জানিয়েছেন এনটিএয়ের ডিরেক্টর জেনারেল। নিটের আয়োজক সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল বলেছেন, 'গ্রেস মার্কস যে দেওয়া হয়েছে, সেটার কোনও প্রভাব পড়েনি পরীক্ষায় কোয়ালিফাই করার মানদণ্ডের উপর। আর ভুক্তভোগী পড়ুয়াদের রেজাল্ট খতিয়ে দেখা হলেও অ্যাডমিশন প্রক্রিয়ার উপর কোনও প্রভাব পড়বে না।'
কী নিয়ে বিতর্ক হয়েছে?
এবার নিটে পয়লা স্থান অধিকার করেছেন ৬৭ জন প্রার্থী। এতজন প্রার্থী কীভাবে প্রথম হতে পারেন, তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়। বিশেষত একই হরিয়ানার একটি পরীক্ষাকেন্দ্রের ছ'জন প্রার্থী প্রথম হওয়ায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ জোরালো হয়ে ওঠে। সেইসঙ্গে সময় নষ্টের কারণে ১,৫৬৩ জন প্রার্থীর নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ায় শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। মেঘালয়, হরিয়ানা, ছত্তিশগড়, চণ্ডীগড়-সহ কমপক্ষে ছ'টি রাজ্যের পড়ুয়াদের সময় নষ্ট হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
কোনওরকম জালিয়াতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে NTA
এনটিয়ের ডিরেক্টর জেনারেল জানিয়েছেন, পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে বৈঠকে বসেছিল এনটিএয়ের কমিটি। সমস্ত পরীক্ষাকেন্দ্র সংক্রান্ত তথ্য এবং সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। তাতে দেখা গিয়েছিল যে বিভিন্ন কেন্দ্রে কিছুটা সময় নষ্ট হয়েছে। তাই পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রার্থীদের গ্রেস মার্কস দেওয়া উচিত। সেই বিষয়ে ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ও আছে। সেইমতো কয়েকজন পড়ুয়ার নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই গ্রেস মার্কসের কারণেই কয়েকজন পড়ুয়ার প্রাপ্ত নম্বর ৭১৮ বা ৭১৯-তে দাঁড়িয়েছে। নির্দিষ্ট ফর্মুলার কারণেই সেই নম্বর উঠেছে।
তবে কোন ফর্মুলা ব্যবহার করা হয়েছে, তা খোলসা করে বলেননি এনটিয়ের ডিরেক্টর জেনারেল। তিনি শুধু জানিয়েছেন, দেশের মধ্যে যে ৪,৭৫০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল, সেগুলির মধ্যে মাত্র ছ'টিতে এই সমস্যা হয়েছিল। ২৪ লাখ প্রার্থীর মধ্যে ১,৬০০ জনকে এই সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল। দেশজুড়ে কোথাও পরীক্ষায় জালিয়াতি হয়নি।