অবিলম্বে সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা (NEET) বাতিল করে দেওয়া হোক। আইনি পথে হেঁটে অথবা আইনসভার মাধ্যমে সেই কাজটা করার পক্ষে সওয়াল করেছেন মাদ্রাজ হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি একে রাজন। তামিলনাড়ু সরকারকে জমা দেওয়া রিপোর্টে তিনি সওয়াল করেছেন যে স্নাতক স্তরে মেডিক্যাল কোর্সে ভরতি হওয়ার জন্য দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রাপ্ত নম্বরকে একপ্রাপ্ত মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হোক। আর বিভিন্ন বোর্ডের পড়ুয়াদের যাতে একই মাপকাঠিতে বিচার করা যায়, সেজন্য বিশেষ ফর্মুলা চালু করার সুপারিশ করেছেন মাদ্রাজ হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রাজন।
বিষয়টি বিশ্লেষণ করতে গেলে বলা যায় যে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে যেমন উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই), কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ান সার্টিফিকেট এগজামিনেশনের (CISCE) পড়ুয়াদের প্রাপ্ত নম্বরের মধ্যে বড়সড় ফারাক থাকত। কারণ বাকি দুটি বোর্ডের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গ বোর্ডে অতটাও হাত খুলে নম্বর দেওয়া হত না। সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে কলেজের ভরতির সময় সংসদের পড়ুয়াদের কিছুটা সমস্যা হত। মেডিক্যাল কোর্সে ভরতির ক্ষেত্রে সেটা যাতে নয়, সেজন্য বিভিন্ন বোর্ডের পড়ুয়াদের প্রাপ্ত নম্বরকে একই মাপকাঠিতে বিবেচনা করার জন্য একটি ফর্মুলা প্রণয়নের সুপারিশ করেছেন মাদ্রাজ হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি।
NEET নিয়ে তামিলনাড়ু সরকারের কমিটি
২০২১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরই নিটের ভিত্তিতে মেডিক্যাল কোর্সে ভরতির প্রভাব খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করেছিল শাসক দল ডিএমকে। বিভিন্ন তথ্য-পরিসংখ্যান, পড়ুয়াদের মতামত, অভিভাবকদের মতামত, জনগণের মতামত নিয়ে সেই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
আর সেই রিপোর্ট জমা পড়ার পরই তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকের প্রধান এমকে স্টালিন বলেন, ‘নিটের ক্ষেত্রে যে বিপদ আছে, সেটা প্রথম অনুভব করতে পেরেছিল ডিএমকে। সেইসঙ্গে নিটের বিরুদ্ধে বৃহাদাকারে কর্মসূচি শুরু করেছিল।’
তিনি আরও জানিয়েছেন যে কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নিট বাতিলের জন্য সর্বসম্মতিক্রমে একটি বিল পাস করে ফেলেছে তামিলনাড়ু বিধানসভা। এখন রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে সেই বিল। যে বিল নিয়ে চূড়ান্ত টালবাহানা করেছেন তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল।
কমিটির রিপোর্টে কী কী সুপারিশ করা হয়েছে?
ওই কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে, 'প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ বা আইনসভার মাধ্যমে মেডিক্যাল কোর্সে ভরতির মাপকাঠি হিসেবে নিট বাতিল করার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ করতে পারে রাজ্য সরকার।' সেইসঙ্গে ওই কমিটি সুপারিশ করেছে যে ডাক্তারির কোর্সের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিট বাতিলের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আইন পাস করতে পারে রাজ্য সরকার। মেডিক্যাল কোর্সে অ্যাডমিশনের ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের যাতে বৈষম্যের শিকার না হতে হয়, তাই সেই কাজটা করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: MPPSC Result: 'একাদশ ফেল' হয়ে গেলেন ডেপুটি কালেক্টর, কৃষকের মেয়ে প্রিয়াল যাদবের গল্প পুরো ফিল্মি