আদিবাসী মহিলা ও শিশুদের অপুষ্টি রোধে মাছ ও মাছ ভিত্তিক পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে বিকল্প পুষ্টিকরণ বা সাপ্লিমেন্টারি নিউট্রিশন প্রকল্প চালু করল ওড়িশা। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের গর্ভবতী মহিলা, ৩ থেকে ৬ বছরের শিশু ও তদের মায়েদের এবং কিশোরী মেয়েদের জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে অলাভজনক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফিশ এর সঙ্গে একটি মৌ স্বাক্ষর করে ওড়িশা সরকার। চুক্তি অনুযায়ী রাজ্যের সবচেয়ে বড় জেলা ময়ূর ভঞ্জে ৫০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এই সাপ্লিমেন্টারি নিউট্রিশন প্রোগ্রাম চালু হচ্ছে। পাঁচ বছরের জন্য ওয়ার্ল্ড ফিশ সহায়তা দেবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের ডেভেলপমেন্ট কমিশনার সুরেশ মহাপাত্র।
ওয়ার্ল্ড ফিশ এর ডিরেক্টর জেনারেল জানান, ওয়ার্ল্ড ফিশ এর টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞরা কচিনের সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ ফিশারিজ টেকনোলজি র সহায়তায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মাছের পাউডার তৈরি করতে সাহায্য করবেন। জানা গিয়েছে, স্থানীয় ছোট মাছ শুকিয়ে প্যাকেটবন্দি করা হবে, বা শুকনো মাছের পাউডার তৈরি হবে।
বর্তমানে ওড়িশা সরকার কেন্দ্রের আর্থিক সহায়তায় শুরু করা সাপ্লিমেন্টারি নিউট্রিশন প্রোগ্রাম এর মাধ্যমে গর্ভবতী মহিলা, ৩ থেকে ৬ বছরের শিশু ও তদের মায়েদের এবং কিশোরী মেয়েদের বাড়ি বাড়ি রেশন দেওয়ার পাশাপাশি রান্না করা খাবার দেয়। রেশনে ছাতু, সুজির হালুয়া, গুড়ের লাড্ডু, বেসনের লাড্ডু দেওয়া হয়। এছাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে গরম গরম খাবার পরিবেশনের সময় সপ্তাহে ৩-৪ টে সেদ্ধ ডিম দেওয়া হয় শিশুদের। মরশুমি ফল যেমন কলা, পেঁপে, পেয়ারা, আনারস, তরমুজ, আম, কমলালেবু ইত্যাদিও শিশুদের দেওয়া হয়।
কিন্তু টা সত্ত্বেও সর্ব ভারতীয় হারের তুলনায় রাজ্যের আদিবাসী শিশুদের অপুষ্টির হার অনেকটা বেশি। এই কারণেই মাছ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ছোট মাছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকায় ব্রেনের উন্নতি হয়, চোখ ভাল রাখে, অ্যানিমিয়া রোধে সাহায্য করে। আয়রণ, জিঙ্ক ইত্যাদির অভাব পূরণ করে। সেই সঙ্গে ডায়রিয়া থেকে তাড়াতাড়ি সেরে উঠতে সাহায্য করে।
এই পাইলট প্রকল্প অনু্যায়ী অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে বাচ্চাদের প্রতিদিন খাবারে ১৫ গ্রাম মাছের পাউডার দেওয়া হবে। ছোট ভাজা মাছ দেওয়া হবে কিশোরী ও গর্ভবতী মহিলাদের। মাছ ও মাছ জাত পণ্য সরবরাহের জন্য সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।