টেট বা নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে অভিযোগ আছে? এবার থেকে তা সরাসরি জানানো যাবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ওয়েবসাইট। আগামিকাল থেকেই সেই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। সেক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাও পর্ষদের ওয়েবসাইটে জানিয়ে দেওয়া হবে।
দুর্নীতিতে বিদ্ধ হয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির পদ থেকে অপসারিত হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। তাঁর বিরুদ্ধে লুক-আউট নোটিশ জারি করা হয়েছে। একাধিকবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েছেন। তারইমধ্যে গৌতম পালকে পর্ষদের নয়া সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত করেছে রাজ্য সরকার। দায়িত্বভার গ্রহণের পরই তিনি আশ্বাস দেন, ‘এবার থেকে প্রতি বছর টেট হবে। (নিয়োগ প্রক্রিয়া) নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকবে না।’
আরও পড়ুন: Soumitra Khan: ‘সবাইকে মানিক ভট্টাচার্য করে দেব’, হুমকি সৌমিত্রের ‘পাগল–ছাগল’ পাল্টা কুণাল
তবে টেট বা নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকলে তা পর্ষদের ওয়েবসাইটের মধ্যে জানানোর ব্যবস্থা থাকছে। সূত্রের খবর, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ওয়েবসাইটে সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাও ওয়েবসাইটে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর।
কেন মানিককে অপসারিত করা হয়েছিল?
- ২০১৪ সালের নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। পরের বছর ১১ অক্টোবর টেট হয়েছিল। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত হয়েছিল দ্বিতীয় মেধাতালিকা।
- সেই দ্বিতীয় মেধাতালিকায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করেছিলেন রমেশ আলি। তিনি দাবি করেন, দুর্নীতির জন্য দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল।
- সেই মামলায় সম্প্রতি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। ইতিমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীনসভাপতি মানিক এবং তৎকালীন সচিব রত্না চক্রবর্তী বাগচিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই।
- তারইমধ্যে ২৬৯ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে হাইকোর্ট। পর্ষদের আইনজীবী জানান, ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটের ১৬৯ জনকে অতিরিক্ত এক নম্বর দিয়ে পাশ করানো হয়েছিল। সেই নম্বরের ভিত্তিতে তাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন। তারপরই তাঁদের বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে হাইকোর্টে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেন।
- হাইকোর্টে সেই রিপোর্ট জমা পড়েছে। সেই রিপোর্টে পর্ষদের তরফে দাবি করা হয়েছে, ২৬৯ নয়, মোট ২৭৩ জনকে অতিরিক্ত এক নম্বর দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: Primary Education: অপসারিত মানিক ভট্টাচার্য, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নয়া সভাপতি গৌতম পাল
- প্রাথমিক পর্ষদের তরফে দাবি করা হয়েছিল, কেন নম্বর বাড়ানো হয়েছিল? পর্ষদের তরফে দাবি করা হয়েছিল, একটি প্রশ্নপত্রে ভুল ছিল। সেজন্য এক নম্বর বাড়ানো হয়েছিল। ভুল প্রশ্ন নিয়ে মোট ২,৭৮৭ টি আবেদন জমা পড়েছিল। তাঁদের মধ্যে ২৭৩ জন প্রশিক্ষিত ছিলেন। তাই তাঁদের বাড়তি এক নম্বর দেওয়া হয়েছিল। মোট ১৮ লাখ প্রার্থী অনুত্তীর্ণ হলেও তাঁদের খুঁজে বের করা সম্ভব ছিল না। তাই যাঁরা আবেদন করেছিলেন, তাঁদেরই বাড়তি নম্বর দেওয়া হয়েছিল।
- সেই সোমবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির পদ থেকে মানিককে সরিয়ে দেওয়া হয়। জাল নথি পেশের দায়ে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। হাইকোর্টের তরফে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের থেকে যে নথি চাওয়া হয়েছিল, তা সেদিনই জমা পড়ে। সেই প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট জানায়, যে নথি জমা পড়েছে, তা ভুয়ো। মানিকের থেকে ২০১৭ সালের নথি চাওয়া হয়েছিল। তিনি ২০২২ সালে বানানো নথি পেশ করেছেন।