পেশায় আসার ক্ষেত্রে প্রত্যেকের আলাদা আলাদা লক্ষ্য থাকে। কারও লক্ষ্য নিজের প্যাশনের পেছনে ছোটা। কেউ চান অনেক টাকা। আবার কারও লক্ষ্য পেটের জ্বালা মেটানো। চাকরি করার উদ্দেশ্য যা-ই হোক, তা করতে গিয়ে কোনও না কোনওভাবে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন অনেকেই। গোটা বিশ্বজুড়েই ছবিটা এমন। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা বলছে, বিশ্বের ১২১টি দেশের ৭৫ হাজার কর্মীর মধ্যে ২২%-ই জানিয়েছেন যে, তাঁরা কর্মক্ষেত্রে হেনস্থার শিকার হয়েছেন। অর্থাত্ প্রতি ৫ জনের মধ্যে একজনের অভিজ্ঞতা করুণ। সেটা যৌন হেনস্থাও হতে পারে, আবার মানসিক বা অন্য ধরণের আক্রমণও হতে পারে। সোমবার জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন, লয়েডস রেজিস্টার ফাউন্ডেশন এবং গ্যালাপ এই সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেছে। আরও পড়ুন: নিজের কোম্পানির প্রতি আগের মতো অনুগত নন, বলছেন IT কর্মীরা
মোট ৫৬ পাতার এই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, 'কাজের জায়গায় হেনস্থা, হয়রানি, হিংসার শিকার হওয়াটা বিশ্বব্যাপী এক বড় সমস্যা। এর গুরুতর শারীরিক এবং মানসিক প্রভাব পড়ে কর্মীদের উপর। শুধু তাই নয়। অনেকে উপার্জন এবং কর্মক্ষেত্র হারিয়ে ফেলেন। সামগ্রিকভাবে এটি অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয়েরও কারণ।'
সমীক্ষা অনুযায়ী, কর্মক্ষেত্রে হিংসা বা হেনস্থার সম্মুখীন হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ জানিয়েছেন যে, তাঁরা একাধিক ধরণের হেনস্থার শিকার হয়েছেন। ৬.৩% জানিয়েছেন, তাঁরা তিন ধরণের হেনস্থারই সম্মুখীন হয়েছেন- শারীরিক, মানসিক এবং যৌন।
মানসিক হেনস্থা এবং হয়রানিই বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি কমন। পুরুষ এবং মহিলা উভয়েই এর শিকার। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ১৭.৯%-ই জানিয়েছেন, তাঁদের কোনও না কোনও সময়ে এই জাতীয় তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে।
এঁদের মধ্যে প্রায় ৮.৫% জানিয়েছেন, তাঁরা কর্মক্ষেত্রে শারীরিক হেনস্থা এবং হয়রানির শিকার। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, শারীরিক হিংসার ক্ষেত্রে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে উল্লেখিত হয়েছে রিপোর্টে।
৮.২% মহিলা জানিয়েছেন যে তাঁরা কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছেন। পুরুষদের মধ্যেও ৫% যৌন হেনস্থার শিকার।
কর্মক্ষেত্রে হেনস্থার শিকার হয়েছেন যাঁরা, তাঁদের ৬০%-এরও বেশি জানিয়েছেন যে, তাঁদের সঙ্গে এমন ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই গত পাঁচ বছরের মধ্যেই শেষবার এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে। আরও পড়ুন: PepsiCo layoffs: কী দিন এল! এবার PepsiCo-তে ছাঁটাই করা হচ্ছে কয়েশো কর্মী
গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে যে, যাঁরা লিঙ্গ, শারীরিক অক্ষমতা, জাতি, বর্ণ বা ধর্মীয়ভাবে জীবনে কোনও না কোনও সময়ে বৈষম্যের সম্মুখীন হয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেই কর্মক্ষেত্রে হিংসা বা হেনস্থার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ছিল।