স্বামী সন্তান থাকা মানেই কেরিয়ার শেষ এই ধারণা যে মিথ্যে তা প্রমাণ করে দিলেন বিহারের পাটনার বাসিন্দা অনুপমা সিং। তিনি দেখিয়ে দিলেন সংসার সামলেও নতুন কেরিয়ার গড়ার স্বপ্ন সত্যি করা যায়, সব সামলে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সফল হওয়া যায়।
ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (UPSC) আয়োজিত সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা ২০১৯ এ তিনি ৯০তম স্থান দখল করেন।
পটনার কঙ্কর বাগের বাসিন্দা অনুপমা একজন ডাক্তার। পটনাতেই প্রাথমিক পড়াশোনা। ২০০২ সালে মাউন্ট কার্মেল হাই স্কুল থেকে দশম শ্রেণি পাশ করেন।
পটনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ২০১১ সালে MBBS পাশ করেন। ২০১৪ সালে বেনারস হিন্দু বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে গায়নোকলজি তে MS (Master of Surgery) করেন। MS এর আগে ২০১৩ সালে বিয়ে করেন চিকিৎসক রবীন্দ্র কুমারকে।
পড়াশোনার পর ৩ বছর তিনি কাজ করেন। আর সে সময়ই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সংস্কারের প্রয়োজন অনুভব করেন। কিন্তু ডাক্তার হিসেবে এ ক্ষেত্রে তাঁর সীমাবদ্ধতা ছিল। এই কারণেই তিনি মানুষের জন্য ভাল সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দেওয়ার কথা ভাবেন।
২০১৮ সালে কাজ ছেড়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন। কিন্তু এ কাজ মোটেই সহজ ছিল না। ৩ বছরের ছেলে নিয়ে একটা চিন্তা ছিল। কারণ শ্বশুর-শাশুড়ি মারা গিয়েছেন। শেষমেষ ননদ এসে তাঁর ছেলের দ্বায়িত্ব নেন।
অনুপমা দিল্লি গিয়ে কোচিং ও পড়াশোনা শুরু করেন। করোল বাগে তিনি একাই থাকতেন। অনুপমার কথায়, সেটা ছিল সবচেয়ে কঠিন সময়। তিনি বলেন, এই সময় ছেলের শৈশব ও ওর জীবনের ওঠাপড়ার মুহূর্তের সঙ্গী থাকতে পারিনি। সব সময় ভাবতাম, তাড়াতাড়ি লক্ষ্যপূরণ করেই বাড়ি ফিরতে হবে। এই কারণেই হয়তো প্রথম চেষ্টাতেই পরীক্ষায় সফল হই।
পরীক্ষায় সাফল্যের পিছনে স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের ভূমিকা যে অনস্বীকার্য, তা তিনি বার বার জানিয়েছেন। ছেলে অনয়ের বয়স এখন ৫ বছর। অনুপমা বলেন, সে যখন আরও বড় হবে তখন নিজের হার-না-মানা জীবনের গল্প শোনাবেন ছেলেকে। নিজের অভিজ্ঞতা শুনিয়ে অনয়কে শেখাবেন, ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়।