নিয়োগের ২ বছর কেটে গেলেও স্থায়ী করা হয়নি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের কয়েক হাজার স্কুল শিক্ষককে। অভিযোগ, করোনা আবহে থমকে মেডিক্যাল টেস্ট এবং ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন’। তাই চাকরির ২ বছর পরেও স্থায়ীকরণ সম্ভব হয় নি। বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছেন এই শিক্ষকরা।
নিয়ম অনুযায়ী চাকরির দু বছর পর স্থায়ী করার কথা শিক্ষকদের। শিক্ষকদের একাংশ জানিয়েছেন, বেশ কিছু পদে নিয়োগের পরে দু’বছর কেটে গিয়েছে। কারও বা এক-দেড় মাসের মধ্যে নিয়োগের দু’বছর পূর্ণ হবে। কিন্তু কবে ওই সব পদে তাঁদের স্থায়ী করা হবে, সেই বিষয়ে তাঁরা অন্ধকারে।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করেছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। নতুন শিক্ষকদের পাশাপাশি, যে-সব শিক্ষক বদলির জন্য নতুন করে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন এবং পাশ করে নতুন ভাবে স্কুলে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদেরও স্থায়ীকরণ হয়নি বলে অভিযোগ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক শিক্ষক বলেন, ‘বাড়ির কাছে স্কুলে পড়াতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বদলির আবেদন করেও কোনও লাভ হয়নি। তাই শিক্ষকতা করতে করতেই নতুন করে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। পাশ করে বাড়ির কাছে স্কুলে নতুন নিয়োগপত্র পেয়েছিলাম, কিন্তু এখনও সেই পদে স্থায়ীকরণ হল না। ফলে যে-সব সুযোগ-সুবিধা এত দিন পেতাম, সেগুলি এখন পাচ্ছি না।’
অভিযোগ, স্থায়ীকরণ না-হওয়ায় এখন অনেকে আপস বদলির আবেদন করতেও ইতস্তত করছেন। বেশ কিছু ছুটির সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন অনেকে।
শিক্ষকদের বক্তব্য, লক ডাউনের পর এখন সরকারি দফতরগুলিতে কাজকর্মও হচ্ছে। কিন্তু এখনও মেডিক্যাল টেস্ট এবং ‘পুলিশ ভেরিফিকেশ নিয়ে শিক্ষা দফতরে কোনও উচ্চবাচ্য নেই। শিক্ষকদের অভিযোগ, শিক্ষা দফতরে বার বার দরবার করেও কোনও কাজ হয়নি।
শিক্ষকদের স্থায়ীকরণ নিয়ে ইতিমধ্যে সরব হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, 'অতিমারিতে পুলিশি যাচাই ও স্বাস্থ্যপরীক্ষার কাজ চালানো হয়তো কঠিন। তাই আমরা চাই, নিয়োগের পরে দু’বছর কেটে গেলে ডিআই অফিস মারফত অনলাইনে শিক্ষকদের স্থায়ীকরণের ব্যবস্থা করুক পর্ষদ।'
পর্ষদের এক আধিকারিক জানান, ‘নতুন শিক্ষকদের পুলিশি যাচাই ও স্বাস্থ্যপরীক্ষার কাজ করোনার জন্য বন্ধ হয়নি, কিছুটা ধীর গতিতে চলছে। স্কুলে যোগ দেওয়ার ঠিক দু’বছর পরে যে-দিন শিক্ষকদের স্থায়ী করার কথা, সেই তারিখেই তাঁদের স্থায়ীকরণ হবে।’