কর্পোরেট সংস্থাগুলোর মন রাখতে অমানবিক হয়ে উঠছে সরকার। আইটি কর্মীদের কাজের সময় ১৪ ঘণ্টা করে দেওয়ার কথা উঠতেই, প্রতিবাদে সামিল আইটি সেক্টর ইউনিয়নগুলি। কর্ণাটকে বেসরকারি খাতে চাকরির জন্য সংরক্ষণ প্রদানকারী বিল নিয়ে গণ্ডগোল একটু থিতিয়ে যেতেই আরও একটি নতুন বিতর্ক দানা বেঁধেছে। জানা গিয়েছে, এই রাজ্যের সরকার আইটি কর্মীদের কাজের সময়সীমা বর্তমানের ১০ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে প্রতিদিন ১৪ ঘণ্টার বেশি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
কিন্তু কাজের সময় এইভাবে বৃদ্ধি করলে কর্মীদের মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর বিপজ্জনক প্রভাব পড়তে পারে বলে দাবি করেছে ইউনিয়ন। এরই পাশাপাশি, কর্ণাটক রাজ্য আইটি/আইটিইএস এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ লাডের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং এই পদক্ষেপ নিয়ে তাঁদের উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন। এককথায়, সরকারের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার গুঞ্জন উঠতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে কর্ণাটক শপস অ্যান্ড কমার্শিয়াল এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্টের প্রস্তাবিত সংশোধন আইটি সেক্টর ইউনিয়নগুলি।
যা বলছে কর্ণাটক সরকার
এদিকে, ইউনিয়নের বিরোধিতা সামাল দিতে পাল্টা যুক্তি দিয়েছে রাজ্য সরকার। কর্ণাটকের শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ লাড জানিয়েছেন, কর্ণাটক সরকার কর্মঘণ্টা বাড়ানোর প্রস্তাব রাখেনি। রাজ্যের কর্পোরেট কোম্পানি এবং শীর্ষ আইটি কোম্পানির প্রধানরা বিদ্যমান শ্রম আইনে এই সংশোধন করার জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। যেহেতু এটি সর্বত্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, তাই কর্পোরেট প্রধান এবং কর্মচারীদের সঙ্গে অবশ্যই অভ্যন্তরীণভাবে এটি নিয়ে আলোচনা করতে হবে এবং সরকার জনগণের স্বার্থ অনুযায়ীই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
আরও পড়ুন: (Job in America: দেড় কোটি বেতনের চাকরিতে আমেরিকা গেলেন না বাংলার যুবক, বাবা-মা একলা হয়ে যাবেন…)
জনগণের স্বার্থ রক্ষার্থে ইউনিয়ন কী চাইছে
তাদের দাবি 'আইটি/আইটিইএস/বিপিও সেক্টরে কর্মরত কর্মচারীদের দিনে ১২ ঘণ্টার বেশি কাজ করার অনুমতি দেওয়া হতে পারে। কিন্তু পরপর তিন মাস ধরে ১২৫ ঘণ্টা বেশি কাজ করতে বলা যাবে না। এ প্রসঙ্গে কেআইটিইউর সাধারণ সম্পাদক সুহাস আদিগা এ প্রসঙ্গে বলেছেন, এটি আইটি/আইটিইএস কোম্পানিগুলিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দৈনিক কাজের সময় বাড়াতে সাহায্য করবে৷ এই সংশোধনী কোম্পানিগুলোকে বর্তমানে বিদ্যমান তিন শিফট পদ্ধতির পরিবর্তে দুই শিফট পদ্ধতি নেওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করবে এবং এক-তৃতীয়াংশ কর্মচারী তাঁদের চাকরি ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হবেন। এটি আইটি কর্মীদের স্বাস্থ্যের জন্যও বিপজ্জনক হবে। এর ফলে এবং স্ট্রোক, হৃদরোগ এবং মানসিক হতাশার মতো স্বাস্থ্য ঝুঁকির কোপে পড়তে পারেন তাঁরা, এমনটাই দাবি করছে কেআইটিইউ।
এরই পাশাপাশি, কেআইটিইউ সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য আরও কর্মচারী ইউনিয়নকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলছে, এই সংশোধনী, যদি কার্যকর করা হয়, তাহলে কর্ণাটকের আইটি শিল্পে কর্মরত ২০ লক্ষ কর্মচারীর উপর অনেকটা আক্রমণের সমান এটা। তাই কেআইটিইউ সমস্ত আইটি সেক্টরের কর্মচারীদেরকে একত্রিত হওয়ার এবং আমাদের উপর দাসত্ব আরোপ করার এই অমানবিক প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে৷