আইপিএল নিলামে কোনও ঘরোয়া ক্রিকেটারের কোটি টাকা দাম ওঠা নতুন কিছু নয়। তবে সেই ক্রিকেটারের বসয় যদি মাত্র ১৩ বছর হয়, তবে চমকে যাওয়া স্বাভাবিক। আইপিএল ২০২৫-এর মেগা নিলামে এমনই চমক দিয়েছেন বৈভব সূর্যবংশী। বিহারের টপ অর্ডার ব্যাটারকে আইপিএল নিলাম থেকে ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকার বিরাট অঙ্কে দলে নেয় রাজস্থান রয়্যালস।
৩০ লক্ষ টাকা বেস প্রাইসের বৈভবের কোটি টাকা দাম ছাড়িয়ে যাওয়াতেই স্পষ্ট যে, তাঁর দিকে নজর ছিল একাধিক আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির। অবশ্য শুধু আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির নয়, বরং বেশ কিছুদিন ধরেই ভারতীয় ক্রিকেটমহলের নজর রয়েছে বৈভবের দিকে। এত কম বয়সে ব্যাট হাতে যে রকম সম্ভাবনা দেখিয়েছেন বৈভব, তাঁকে ভবিষ্যতের সম্পদ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে তো বটেই, দুর্দান্ত প্রতিভার জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্য দলের হয়ে ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটেও হাতেখড়ি হয়েছে বৈভবের। ভারতীয় যুব দলের হয়ে ইতিমধ্যেই চমকপ্রদ পারফর্ম্যান্স মেলে ধরেছেন বৈভব। অস্ট্রেলিয়ার অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিরুদ্ধে যুব টেস্টে আবির্ভাবেই অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেছেন বৈভব। সব থেকে কম বয়সে কোনও আন্তর্জাতিক দলের বিরুদ্ধে শতরান করার বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন তিনি।
আইপিএল নিলামে যেখানে ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথ, কেন উইলিয়ামসনের মতো সুপারস্টাররা অবিক্রিত থাকেন, সেখানে মাত্র ১৩ বছরের একজন ক্রিকেটার কোটি টাকায় বিক্রি হচ্ছেন, বিষয়টা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটমহলের নজরে পড়া স্বাভাবিক। সঙ্গত কারণেই অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের মঞ্চে বৈভববের কাছে এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয় অফিসিয়াল ব্রডকাস্টারদের তরফে।
সোনি স্পোর্টসের সাক্ষাৎকারে বৈভব স্পষ্ট জানান য, সবাই তাঁকে নিয়ে কী বলছেন, কোথায় কী চর্চা হচ্ছে, এইসব ভাবার এটা যথাযথ সময় নয়। কেননা এই মুহূর্তে তাঁর একমাত্র লক্ষ্য অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে ভালো খেলা ও দলকে চ্যাম্পিয়ন করানো। বৈভব বলেন, ‘আপাতত অমি নিজের লক্ষ্য স্থির রাখার চেষ্টা করছি। সোশ্যাল মিডিয়া বা এদিক-ওদিকে ঘাড় ঘোরাতে চাই না। অন্য কোনও বিষয়ে আমার ধ্যান নেই। এখন এশিয়া কাপ খেলছি। কীভাবে এশিয়া কাপ জিতব, সেই দিকেই শুধু লক্ষ্য রয়েছে।’
বৈভব আরও জানান যে, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যুব টেস্টে নিজের প্রথম ইনিংসেই সেঞ্চুরি করার অভিজ্ঞতা দারুণ ছিল। শেষে বৈভব নিজের আদর্শ ক্রিকেটারের নামও জানিয়ে দেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সচিন তেন্ডুলকর, রোহিত শর্মা বা বিরাট কোহলি নন, বৈভবের আদর্শ ক্রিকেটার হলেন এমন একজন, যিনি খেলা ছেড়েছেন তাঁর জন্মের আগে। বৈভবের আদর্শ ক্রিকেটার হলেন ব্রায়ান লারা, যিনি ২০০৭ সালে শেষবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেন। অন্যদিকে বৈভবের জন্ম হয় ২০১১ সালে।
এই প্রসঙ্গে বৈভব বলেন, ‘আমার আদর্শ ক্রিকেটার হলেন ব্রায়ান লারা। ওঁর মতো ইনিংস খেলার চেষ্টা করি। বাকিটা নিজের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টার উপর ভরসা রাখি। প্র্যাক্টিসে যেটা করতে পারি, সেটাই ম্যাচে প্রয়োগ করার চেষ্টা করি।’