বাইশ গজে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করল আফগানিস্তান ক্রিকেট দল। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে একদিনের সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৭৭ রানে জিতল তারা। তিন ম্যাচের সিরিজে এটি তাদের দ্বিতীয় জয় এবং এর মাধ্যমে তারা প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে। এটি আফগানিস্তান ক্রিকেটের ওয়ানডে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়। এই জয়ের সবচেয়ে বড় নায়ক ছিলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ, যিনি সেঞ্চুরি ইনিংস খেলেছিলেন।
ঐতিহাসিক সেঞ্চুরি করেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এই ম্যাচে দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলেছেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। তিনি ১১০ বলে ১০৫ রান করেন, যার মধ্যে ১০টি চার ও ৩টি ছক্কা ছিল। এই সেঞ্চুরিটি অনেক দিক থেকেই বিশেষ ছিল রহমানউল্লাহ গুরবাজের জন্য। ওডিআই ক্রিকেটে এটি তার সপ্তম সেঞ্চুরি। এর মাধ্যমে তিনি আফগানিস্তানের হয়ে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যান হয়েছেন। মহম্মদ শাহজাদের রেকর্ড ভেঙেছেন তিনি। আফগানিস্তানের হয়ে ওয়ানডেতে ৬টি সেঞ্চুরি করেছেন মহম্মদ শাহজাদ।
আরও পড়ুন… IND vs BAN Test: টেস্টে কিন্তু আমি এত বাউন্স করি না- ৪ উইকেট নিয়ে কী বললেন জসপ্রীত বুমরাহ?
এই বিশেষ তালিকায় জায়গা করেছেন গুরবাজ-
রহমানউল্লাহ গুরবাজ ২২ বছর বয়সে সর্বাধিক ওয়ানডে সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের বাবর আজমকে ছাড়িয়ে গেছেন। বাবর আজম ২২ বছর বয়সে ছয়টি ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেছিলেন, এদিকে রহমানউল্লাহ গুরবাজ এখন তার চেয়ে এগিয়ে গিয়েছেন। একইসঙ্গে এই তালিকায় বিরাট কোহলির সমান হয়েছেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। বিরাটও ২২ বছর বয়সে সাতটি ওডিআই সেঞ্চুরি করেছিলেন। তবে বিরাটকে পিছনে ফেলে এখনও সুযোগ রয়েছে রহমানউল্লাহ গুরবাজের।
আরও পড়ুন… Duleep Trophy: অভিমন্যু ঈশ্বরন থেকে অভিষেক পোড়েল, বাংলার দুই তারকার ব্যাটে জমে উঠল দ্বিতীয় দিন
টস জিতেছিল কারা-
শারজাহ আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় আফগানিস্তান। এই সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণিত হয়েছিল। রহমানউল্লাহ গুরবাজের সেঞ্চুরির সুবাদে আফগানিস্তান ক্রিকেট দল ৩১১ রান করে। এই লক্ষ্য তাড়া করতে আসা দক্ষিণ আফ্রিকা দল মাত্র ১৩৪ রানে অলআউট হয়ে যায় এবং এর ফলে আফগানিস্তান ১৭৭ রানে হেরে যায়।
আফগানিস্তানের ব্যাটিং ছিল কেমন-
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় আফগানিস্তান। রিয়াজ হাসানের সঙ্গে ৮৮ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। পরে রহমত শাহের সঙ্গে ১০১ রানের জুটি গড়েন তিনি। এরপর অলরাউন্ডার আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বিস্ফোরক হাফ সেঞ্চুরির সুবাদে আফগানিস্তান ৫০ ওভারে ৪ উইকেটে ৩১১ রান তোলে। দলের সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। তিনি ১০৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার বাজে ব্যাটিং
বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা দলকে দারুণ সূচনা এনে দেন তেম্বা বাভুমা ও টনি ডি জর্জ। ৭৩ রানের একটি দুর্দান্ত ওপেনিং জুটি গড়েন তাঁরা। প্রোটিয়াদের দারুণ ইনিংসটিকে ভাঙতে শুরু করে দু'প্রান্ত থেকে আসা আফগান স্পিন। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের ঘিরে রশিদ খান ও নাঙ্গেলিয়া খারোতে। লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের শেষ ৬১ রানের মধ্যে সবকটি ১০ উইকেট হারায়। একটি কঠিন শুরুকে একটি বিপর্যয়পূর্ণ পরিণতিতে পরিণত করে তারা। তারা ১৩৪ রানে অলআউট হয় এবং এশিয়ান দল ১৭৭ রানের ব্যবধানে ম্যাচটি জিতে যায়। ওয়ানডেতে রানের দিক থেকে এটি আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় জয়। রশিদ খান, যিনি তার জন্মদিন উদযাপন করেছিলেন, তিনি দুর্দান্ত পাঁচ উইকেট নিয়ে শোয়ের তারকা ছিলেন, আর খারোতে চার উইকেট নিয়ে স্মরণীয় পারফরম্যান্স করেছেন।