সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়-সচিন তেন্ডুলকর ভারতীয় ক্রিকেটের দুই মহা নক্ষত্র। এই দুই তারকা ভারতীয় দলের হয়ে দীর্ঘকাল একসঙ্গে খেলেছেন। দুইজনই অধিনায়ক ছিলেন ক্রিকেট দলের। তবে সচিনের থেকে সৌরভ অধিনায়ক হিসেবে বেশি সফল। বলা চলে তাঁর অধীনে ভারত দেশের বাইরে জেতার ক্ষমতা দেখাতে শুরু করে। তবে সম্প্রতি চ্যাম্পিয়ন স্পোর্টস কাস্ট নামের একটি অনুষ্ঠানে সৌরভ বলেন, তিনি সচিনকে অনেক অল্প বয়সে দেখেছেন এবং তখনই বুঝতে পারেন মাস্টার ব্লাস্টার তাঁর থেকে অনেক উন্নত মানের ব্যাটার।
সচিন-সৌরভের ওপেনিংপার্টনারশিপে বিশ্বের এমন কোনও বোলার নেই যে তাদেরকে ভয় পাননি। সেই সময় ভারতীয় দলও খুব দ্রুতগতিতে উন্নতি করছে। আজ পর্যন্ত ক্রিকেটের ইতিহাসে ওপেনিং জুটি হিসেবে সর্বোচ্চ রান রয়েছে এই দুই প্রাক্তন ক্রিকেটারদের দখলে। সৌরভ ও সচিন ১৩৬টি একদিনের ইনিংসে একসঙ্গে ওপেন করেছেন। তাদের সংগ্রহ রান ৬৬০৯। সেই সময় তাদের মোট ২১টি সেঞ্চুরি রয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানে সৌরভ সচিনকে দেখার প্রথম দিনের কথা মনে করে বলেন, 'আমি সচিনকে প্রথম দেখি এমআরএফ পেস একাডেমিতে। তখন ওঁর বয়স ১৪ বছর। এরপরে আমরা বছরে ৬-৭ মাস একসঙ্গে কাঁটাতে শুরু করি। ধীরে ধীরে আমাদের বন্ধুত্ব গাঢ় হয়। এই সময়ে আমরা একে অপরের অনেক উন্নতিও করি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি একজন ক্রিকেটার হিসেবে সচিন আমার থেকে অনেকটাই এগিয়ে। নিজের খেলাকে উন্নত করতে নিজের থেকে ভালো পার্টনারের প্রয়োজন হয়। এরপরে আমরা একসঙ্গে অনেক ইনিংস খেলি এবং আমাদের বন্ধুত্ব গাঢ় হয়।'
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ফুটবল প্রেম সকলেরই জানা। আর তিনি যে ফুটবলার হতে চান এই বিষয়টাও অনেকেই জানেন। তবে তাঁর দাদা স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্য ক্রিকেটে আসা সৌরভের।প্রাক্তন বিসিসিআই জানান, ফুটবল খেলায় তাঁর বলের ধারণা ছিল অসাধারণ। তবে বাড়ির পিছনে ক্রিকেট খেলতে শুরু করার পরে তিনি এই খেলাটিকেও খুব সহজে রপ্ত করে ফেলেন। তিনি বলেন, 'আমার কাছে খেলাধুলার ছিল বাড়ি ও আমার মায়ের থেকে দূরে থাকার উপায়। কারণ মা সবসময় আমাকে পড়তে বসাতে চাইতেন। আমি সেই সময় ফুটবল খেলা শুরু করি তো তখনই বুঝতে পারি এই ফুটবলের ওপর আমার দারুণ ধারণা রয়েছে। আমি ক্রিকেট খেলা শুরু করি আমার দাদার জন্য। আমাদের বাড়ির পিছন দিকে সাতজনের টেনিস বলের ক্রিকেট ম্যাচ খেলতাম। সেখান থেকেই খুব অল্প বয়সে আমি এই খেলার সম্পর্কে ধারণা পাই।'
সৌরভ ভারতীয় এবং বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সফল অধিনায়কদের মধ্যে একজন। নিজের অধিনায়কত্বের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, 'আমার কাছে অধিনায়কত্ব হলো বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তিত্বকে হ্যান্ডেল করা। কারণ সবাই একই ধরনের মানুষ হন না। দিনের শেষে আমি একা ক্রিকেটের কোনও ম্যাচ জিততে পারবো না। তাই ম্যাচ জেতার লক্ষ্যে আমার সঙ্গে থাকা আরও ১০ জন প্লেয়ারকেই প্রয়োজন হবে। তাই সে ক্ষেত্রে সবাইকে ঠিকঠাক ভাবে পরিচালন করে এটা দেখা যে তারা যেন মাঠে পারফর্ম করতে পারে। এর সঙ্গে সঙ্গেই সহ প্লেয়ারদের ওপর যথেষ্ট ভরসা রাখতে হবে।'