দাবি উঠছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। আইপিএল ২০২৪-এর আগে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সেই দাবি আরও জোরালো হয়। এমন ক্ষেত্রে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি উঠতে থাকে। শুধু ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকরাই নন, বরং বিশেষজ্ঞরাও বিষয়টির বিরুদ্ধে জোরালো আওয়াজ তোলেন। শেষমেশ সমবেত সেই দাবিকে স্বীকৃতি দিল বিসিসিআই। নিলামে কম দাম পেয়ে আইপিএল থেকে সরে দাঁড়ানো আটকাতে কড়া নিয়ম করল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
প্রায় প্রতি মরশুমেই আইপিএল শুরুর আগে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে ব্যক্তিগত কারণে টুর্নামেন্ট থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে দেখা যায়। বলা বাহুল্য, শুধুমাত্র বিদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যেই এই প্রবণতা চোখে পড়ে। আইপিএল খেলতে না আসার পিছনে ক্রিকেটাররা যাই কারণ দেখান না কেন, এমন বিশ্বাস দৃঢ় হতে শুরু করেছে যে, নিলামে পছন্দ মতো দাম না পেলেই বিদেশি তারকারা টুর্নামেন্ট থেকে নিজদের সরিয়ে নেন।
বিদেশি তারকাদের এমন প্রবণতার ফলে ক্ষতি হয় ফ্র্যাঞ্চাইজিদের। অনেক পরিকল্পনা করে নিলাম থেকে পছন্দমতো ক্রিকেটার কেনে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে গুরুত্বপূর্ণ বিদেশি ক্রিকেটার সরে দাঁড়ালে তাদের গেমপ্ল্যান ধাক্কা খায়। ভেস্তে যায় যাবতীয় পরিকল্পনা। শেষ মুহূর্তে যথাযথ পরিবর্ত ক্রিকেটার খুঁজে পাওয়াও মুশকিল হয়।
আইপিএল ২০২৪ এর আগে মূলত ব্রিটিশ ক্রিকেটারদের একের পর এক টুর্নামেন্ট থেকে সরে দাঁড়াতে দেখা যায়। কলকাতা নাইট রাইডার্সের দুই ব্রিটিশ তারকা গাস অ্যাটকিনসন ও জেসন রয় ইন্ডিয়ান প্রিমিয়র লিগ থেকে নাম তুলে নেন। লখনউ সুপার জায়ান্টসের মার্ক উড সরে দাঁড়ান। তারা দলে পায়নি ডেভিড উইলিকেও। দিল্লি ক্যাপিটালসের হ্যারি ব্রুক আইপিএল খেলতে আসবেন না বলে জানিয়ে দেন। রাজস্থান রয়্যালসের অজি তারকা অ্যাডাম জাম্পা শেষ পযর্ন্ত আইপিএল খেলতে আসেননি।
সব দেখে শুনে কড়া পদক্ষেপ নিতে কার্যত বাধ্য হয় বিসিসিআই। আইপিএল ২০২৫-এর মেগা নিলামের আগে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড যে নির্দেশিকা জারি করেছে, তাতে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে যে, যদি কোনও ক্রিকেটার নিলামে দল পাওয়ার পরে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে নিজেকে সরিয়ে নেন, তবে ২টি মরশুম তিনি আইপিএল খেলতে পারবেন না। এমনকি নির্বাসিত থাকাকালীন নিলামেও অংশ নিতে পারবেন না।
এক্ষেত্রে বোর্ড শুধু বিদেশি ক্রিকেটারদের জন্য নয়, বরং সমস্ত ক্রিকেটারদের জন্যই এই নিয়ম চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, বিদেশি ক্রিকেটারদের টাইট দিতেই বিসিসিআইয়ের এই সিদ্ধান্ত। এখন দেখার যে, বোর্ডের এই কড়া নিয়মের পরে বিদেশি তারকাদের টুর্নামেন্ট থেকে সরে দাঁড়ানোর প্রবণতা কমে কিনা।