শুভব্রত মুখার্জি: সাম্প্রতিক সময়ে ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচের আগে দুই শিবিরের মধ্যে যে চাপা উত্তেজনা, উন্মাদনা থাকে তা যেন একটু হলেও প্রশমিত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এশিয়া কাপের ম্যাচে পাল্লেকেলেতে ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচের আগে এই রকম সৌভ্রাতৃত্বের বেশ কিছু টুকরো টুকরো ছবি ধরা পড়েছে। বিরাট কোহলির সঙ্গে হ্যারিস রউফ, কোহলির সঙ্গে শাদাব খান এবং শাহিন শাহ আফ্রিদিকে রীতিমতো খোশমেজাজে আড্ডা দিতে দেখা গিয়েছে। রোহিতের সঙ্গে বাবর আজমকেও হালকা মেজাজে কথা বলতে দেখা গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আগেই মুখ খুলেছিলেন প্রাক্তন বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় ওপেনার গৌতম গম্ভীর। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য ছিল, বন্ধুত্ব মাঠের বাইরে থাকা উচিত, মাঠের মধ্যে নয়। এই বিষয়টি নিয়েই এবার মুখ খুলে গম্ভীরকে পাল্টা দিলেন প্রাক্তন পাক তারকা শহিদ আফ্রিদি।
আরও পড়ুন: ODI Rankings-এ বড় লাফ ইশানের, ক্যারিয়ার সেরা তিনে শুভমন, কোহলি-রোহিতদের কী হাল?
বিষয়টি নিয়ে বলতে গিয়ে গম্ভীর বলেছিলেন, ‘গেম ফেস (ম্যাচ নিয়ে চিন্তামগ্ন মুখ) থাকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচের সময়ে মাঠের মধ্যে কোনও রকম কোনও বন্ধুত্ব নয়। বন্ধুত্ব যা থাকার, তা থাকা উচিত মাঠের বাইরে। দুই দলের ক্রিকেটারদের চোখে মুখে বিষয়টি নিয়ে যেন একটা আক্রমণাত্মক ভাব থাকে। তবেই তো ম্যাচ জমবে। ম্যাচে মজা আসবে। লড়াই হবে। সেটা দেখতেই তো দর্শকেরা আসেন। তোমার যত খুশি বন্ধুত্ব থাকতে পারে। তবে তা থাকবে ওই ৬-৭ ঘন্টার ক্রিকেট ম্যাচের পরেই। ম্যাচের এই কয়েক ঘন্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তুমি শুধু নিজেকে প্রতিনিধিত্ব করছ না। তুমি দেশের কোটি কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছ। এখনকার দিনে তো দেখা যায়, বিপক্ষ দলের ক্রিকেটাররা একে অপরের পিঠ চাপড়ে দিচ্ছে। কয়েক বছর আগেও আমি নিশ্চিত, কেউ এইসব দেখতে অভ্যস্ত ছিলাম না। তাহলে তো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ নয়, আমরা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলছি মনে হবে।’
গম্ভীরের এই কথার জবাব দিতে গিয়ে স্পষ্ট ভাষায় আফ্রিদি বলেছেন, ‘এই ধরনের ভাবনা সম্পূর্ণই ওর (গম্ভীরের) ব্যক্তিগত। আমি একেবারেই এই ভাবে ভাবি না। আমরা ক্রিকেটার তো বটেই। পাশাপাশি আমরা আমাদের দেশের অ্যাম্বাসেডরও বটে। আমাদের প্রত্যেকের সমর্থক রয়েছে আলাদা আলাদা। যারা গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছে। তাই আমি মনে করে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়াটা খুব খুব গুরুত্বপূর্ণ। হ্যাঁ, এটা ঠিক মাঠে আক্রমণাত্মক মেজাজ থাকবে। তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে মাঠের বাইরেও একটা জীবন রয়েছে।’ প্রসঙ্গত পাল্লেকেলেতে এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে যায়। ভারত এই ম্যাচে একটা সময়ে ৬৬ রানে চার উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল। সেই জায়গা থেকে শতরানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে লড়াইয়ের জায়গায় পৌঁছে দিয়েছিলেন ইশান কিষাণ এবং হার্দিক পান্ডিয়া। শেষ পর্যন্ত ওই ম্যাচে ভারত ২৬৬ রানে অলআউট হয়ে যায়। বৃষ্টির কারণে পাকিস্তান দল একটি বলও খেলতে পারেনি।