নেপালের বিরুদ্ধে বিশাল জয় দিয়ে এশিয়া কাপ ২০২৩ অভিযান শুরু করল পাকিস্তান। অল্পের জন্য টুর্নামেন্টের ইতিহাসে বৃহত্তম জয়ের রেকর্ড হাতছাড়া হয় বাবর আজমদের। তবে ওয়ান ডে ফর্ম্যাটের এশিয়া কাপের ইতিহাসে রানের নিরিখে নিজেদের বৃহত্তম জয় ছিনিয়ে নেয় পাকিস্তান।
বুধবার মুলতানে নেপালের বিরুদ্ধে এশিয়া কাপ ২০২৩-এর উদ্বোধনী ম্যাচে মাঠে নামে আয়োজক পাকিস্তান। টস জিতে শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন পাক দলনায়ক বাবর আজম। মাত্র ২৫ রানের মধ্যে দুই ওপেনারের উইকেট হারিয়ে বসে পাকিস্তান। তবে বাবর আজম ও ইফতিকার আহমেদের জোড়া শতরানে ভর করে তারা বিরাট রানের ইনিংস গড়ে তোলে।
পাকিস্তান নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ৩৪২ রান সংগ্রহ করে। বাবর আজম ৪টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৭২ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতরান পূর্ণ করেন। ১০টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১০৯ বলে শতরানের গণ্ডি টপকে যান তিনি। শেষমেশ ১৪টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে ১৩১ বলে ১৫১ রান করে আউট হন পাক দলনায়ক। বাবরের ওয়ান ডে কেরিয়ারের এটি ১৯তম শতরান।
টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এটি কোনও ক্যাপ্টেনের খেলা সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। এর আগে কোনও ক্রিকেটার ক্যাপ্টেন হিসেবে এশিয়া কাপে ব্যাট করতে নেমে দেড়শো রানের গণ্ডি টপকাতে পারেননি। সার্বিকভাবে বিরাট কোহলির ১৮৩ রানের (২০১২ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে) পরে এশিয়া কাপের ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ড।
ইফতিকার ৪টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৪৩ বলে ব্যক্তিগত হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। তিনি ১০টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৬৭ বলে ব্যক্তিগত শতরানের গণ্ডি টপকে যান। শেষমেশ ১১টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৭১ বলে ১০৯ রান করে অপরাজিত থাকেন ইফতিকার। এটি তাঁর ওয়ান ডে কেরিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। এশিয়া কাপের ইতিহাসে চতুর্থ দ্রুততম শতরানের রেকর্ড গড়েন ইফতিকার।
এছাড়া মহম্মদ রিজওয়ান ৬টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৫০ বলে ৪৪ রানের যোগদান রাখেন। নেপালের সোমপাল কামি ২টি উইকেট নেন। করণ কেসি ও সন্দীপ লামিছানে ১টি করে উইকেট পকেটে পোরেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে নেপাল ২৩.৪ ওভারে মাত্র ১০৪ রানে অল-আউট হয়ে যায়। ২৩৮ রানের বিশাল ব্যবধানে ম্যাচ জেতে পাকিস্তান। এশিয়া কাপের ইতিহাসে পাকিস্তানের এটি সব থেকে বড় ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড। এর আগে ২০০০ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ২৩৩ রানে ম্যাচ জেতে পাকিস্তান। এতদিন সেটিই ছিল এশিয়া কাপে পাকিস্তানের সব থেকে বড় জয়।
সার্বিকভাবে এশিয়া কাপের ইতিহাসে সব থেকে বড় ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড রয়েছে ভারতের নামে। তারা ২০০৮ সালে হংকংকে ২৫৬ রানের ব্যবধানে পরাজিত করে। সুতরাং অল্পের জন্য এশিয়া কাপে ভারতের সর্বকালীন রেকর্ড ভাঙতে পারল না পাকিস্তান।
রানের নিরিখে এশিয়া কাপের ইতিহাসে সব থেকে বড় জয়:-
১. হংকংকে ২০০৮ সালে ২৫৬ রানে হারায় ভারত।
২. নেপালকে ২০২৩ সালে ২৩৮ রানে হারায় পাকিস্তান।
৩. বাংলাদেশকে ২০০০ সালে ২৩৩ রানে হারায় পাকিস্তান।
ওয়ান ডে ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি পাকিস্তানে তৃতীয় বৃহত্তম জয়। ২০১৬ সালে তারা আয়ারল্যান্ডকে ২৫৫ রানে পরাজিত করে। ২০১৮ সালে জিম্বাবোয়েকে ২৪৪ রানে হারিয়ে দেয় পাকিস্তান। এবার নেপালকে ২৩৮ রানে হারায় তারা।
ওয়ান ডে ক্রিকেটে পাকিস্তানের সব থেকে বড় ব্যবধানে ম্যাচ জয়:-
১. আয়ারল্যান্ডকে ২০১৬ সালে ২৫৫ রানে হারায় পাকিস্তান।
২. জিম্বাবোয়েকে ২০১৮ সালে ২৪৪ রানে হারায় পাকিস্তান।
৩. নেপালকে ২০২৩ সালে ২৩৮ রানে পরাজিত করে পাকিস্তান।
নেপালের হয়ে সব থেকে বেশি ২৮ রান করেন সোমপাল কামি। ২৬ রানের যোগদান রাখেন আরিফ শেখ। শাদব খান ২৭ রানে ৪টি উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট পকেটে পোরেন শাহিন আফ্রিদি ও হ্যারিস রউফ। নাসিম শাহ ও মহম্মদ নওয়াজ ১টি করে উইকেট সংগ্রহ করেন। ম্যাচের সেরা হন বাবর আজম।