এটাই কি মহিলা ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ক্যাচ? একদম ‘বেস্ট’ না হলেও নিশ্চিতভাবে অন্যতম সেরা ক্যাচের তালিকায় থাকবে। আর থাকারই কথা, শুক্রবার হোবার্টে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তৃতীয় একদিনের ম্যাচে বাউন্ডারিতে দাঁড়িয়ে অ্যাশলে গার্ডনার যে ক্যাচটা নিলেন, সেটা বাঁধিয়ে রাখার মতো। বাউন্ডারির ঠিক সামনে শূন্যে ঝাঁপিয়ে বলটা ধরেন অস্ট্রেলিয়ান তারকা। কিন্তু ভারসাম্য রাখতে পারবেন না বুঝতে পেরে বলটা বাউন্ডারির আগে শূন্যে ভাসিয়ে দেন। তারপর ডাইভ দিয়ে বলটা তালুবন্দী করে নেন। যা দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, ‘অবিশ্বাস্য, অভাবনীয়’ ক্যাচ এটা।
নিশ্চিত ছক্কা ছিল, কিন্তু গার্ডনার অন্য উচ্চতায় পৌঁছে যান
আর সেই ঘটনাটি ঘটেছে ৪১ তম ওভারের তৃতীয় বলে। অ্যালানা কিংয়ের বলটা মোটেও আহামরি ছিল না। বরং ওরকম লোভনীয় বল দেখে বল শট মারতে যান ইংল্যান্ডের তারকা সোফি একলেস্টোন। তিনি নির্ঘাত ভেবেছিলেন যে ছক্কা হয়ে যাবে। কিন্তু ডিপ মিড-উইকেটের বাউন্ডারিতে দাঁড়িয়ে থাকা গার্ডনার নিজেকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়ে বলটা ধরে নেন।
শূন্যে লাফিয়ে একহাতে ক্যাচ, তারপর…….
বাউন্ডারির ঠিক সামনে লাফিয়ে একহাত দিয়ে বলটা ধরেন গার্ডনার। ভারসাম্য হারিয়ে ফেলায় তিনি যে বাউন্ডারি লাইন পেরিয়ে যাবেন, সেটা বুঝতে পেরেই বলটা শূন্যে ছুড়ে দেন। চলে যান বাউন্ডারি লাইনের বাইরে। তারপর সামনের দিকে ডাইভ দিয়ে মাটিতে বলটা ঠেকার কয়েক ইঞ্চি আগে ক্যাচ ধরে নেন। যা দেখে উত্তেজনায় ফেটে পড়েন ধারাভাষ্যকার। মুগ্ধ হয়ে গিয়েছেন গার্ডনারের অবিশ্বাস্য দক্ষতা, ক্ষিপ্রতায়।
আরও পড়ুন: Pratika Rawal: মেরেও খেলতে পারে, ধরতেও জানে, ইতিহাস গড়া প্রতিকার প্রশংসায় পঞ্চমুখ স্মৃতি
তবে শুধু ওই ক্যাচটা ধরে নয়, ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ইনিংস শুরু হওয়ার আগেই ক্রিকেট বিশ্বকে মুগ্ধ করে দেন গার্ডনার। যিনি ২০১৭ সালে অভিষেকের পরে নিজের ৫৫ তম ইনিংসের মাথায় একদিনের ক্রিকেট কেরিয়ারের প্রথম শতরান হাঁকান। ১০২ বলে ১০২ রান করেন। আর যে পরিস্থিতিতে প্রথম শতরান এসেছে, তা সেই মাইলস্টোনকে আরও ‘স্পেশাল’ করে তুলেছে।
৫৫ ইনিংসে প্রথম শতরান গার্ডনারের
কারণ আজ টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৪.২ ওভারে ৫৯ রানে চার উইকেটে ধুঁকছিল অস্ট্রেলিয়া। সেখান থেকে বেথ মুনির সঙ্গে ইনিংসের হাল ধরেন গার্ডনার। তাঁদের জুটিতে ৯৫ রান ওঠে। ৬৪ বলে ৫০ রান করে মুনি আউট হয়ে যাওয়ার পরে তাহিলা ম্যাকগ্রাথের সঙ্গে ৮৩ বলে ১০৩ রানের জুটি গড়ে তোলেন গার্ডনার। ম্যাকগ্রাথ করেন ৫৫ রান (৪৫ বলে)। আর তার ফলে নির্ধারিত ৫০ ওভারে আট উইকেটে ৩০৮ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। যে কাজটা একমাত্র অ্যালিসা হিলিদের পক্ষেই করা সম্ভব।
আরও পড়ুন: Pratika Rawal: একশোর আগে মন্থর হয়ে গিয়েছিলাম, সাড়া জাগিয়েও আত্মসমালোচনা প্রতিকার
সেই রানটা তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। কিছুক্ষণ পরে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান হেথার নাইটও। তারপর তৃতীয় উইকেটে ৯১ রান যোগ করেন ট্যামি বিউমন্ট এবং ন্যাট সিভার ব্রান্ট। সেটা ছাড়া আর কোনও তেমন জুটি গড়ে তুলতে পারেনি ইংল্যান্ড। শেষপর্যন্ত ৪২.২ ওভারে ২২২ রানে অল-আউট হয়ে যান ইংরেজরা। পাঁচ উইকেট নেন কিং। তবে গার্ডনার যে ইনিংসটা খেলেন, সেটার পরে তাঁকে ছাড়া আর কাউকে ম্যাচের সেরা হিসেবে নির্বাচিত করার কোনও সুযোগই ছিল না।