চিরশত্রুর দাক্ষিণ্যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে পৌঁছে গেল ইংল্যান্ড। সেন্ট লুসিয়ায় অস্ট্রেলিয়া স্কটল্যান্ডকে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে দেওয়ার পরেই বিশ্বকাপের সুপার এইটে ইংরেজদের টিকিট নিশ্চিত হয়ে যায়। চারটি ম্যাচেই জিতে গ্রুপের শীর্ষে শেষ করেছে অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ড চারটি ম্যাচের শেষে পাঁচ পয়েন্টে আটকে থাকল। নেট রানরেট বেশি হওয়ার সুবাদে সুপার এইটে পৌঁছে গেলেন ইংরেজরা। সেইসঙ্গে চরম লজ্জার হাত থেকে রেহাই পেলেন। কারণ ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে খেলতে এসে ২০২৩ সালের একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপের গ্রুপ লিগ থেকেই ছিটকে গিয়েছিলেন। আর ২০২৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে খেলতে এসে গ্রুপ পর্যায় থেকেই ছিটকে যাওয়ার মুখে দাঁড়িয়েছিলেন। সেখান থেকে তাঁদের বাঁচালেন চিরশত্রু অজিরা।
একটা সময় ইংল্যান্ড ছিটকে যাবে মনে হচ্ছিল
অথচ অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের অর্ধেক পথ পেরনোর পরও মনে হয়েছিল যে ‘ইটস কামিং হোম’-র জায়গায় ব্যাগপত্তর গুছিয়ে ইংরেজদের বলতে হবে যে ‘উই আর রিটার্নিং’। কারণ ১৮১ রানের পুঁজি রক্ষা করতে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত করে স্কটল্যান্ড। দ্বিতীয় ওভারেই আউট হয়ে যান ডেভিড ওয়ার্নার। তখন অজিদের স্কোরবোর্ডে মাত্র দু'রান উঠেছিল। তারপর ১০ ওভারে অজিদের স্কোর দাঁড়ায় তিন উইকেটে ৭৪ রান। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আউট হওয়ার পরে তখন অজিদের ইনিংস টানতে থাকেন ট্র্যাভিস হেড এবং মার্ক স্টইনিস।
আরও পড়ুন: ম্যাকমুলেন-বেরিংটনদের বিরুদ্ধে ৬টি ক্যাচ মিস অজিদের! কাকতালীয় না ইচ্ছাকৃত? প্রশ্ন ইংরেজদের
তাঁদের জুটিতেই ম্যাচে ফেরে অস্ট্রেলিয়া। চতুর্থ উইকেটে ৪৪ বলে ৮০ রান যোগ করেন হেড এবং স্টইনিস। ৪৯ বলে ৬৮ রান করেন হেড। ২৯ বলে ৫৯ রান করেন স্টইনিস। তাঁরাই খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেন। ৮.২ ওভারে তিন উইকেটে ৬০ রান থেকে ১৫.৩ ওভারে তিন উইকেটে ১৪০ রানে পৌঁছে দেন। তারপর হেড আউট হয়ে গেলেও ততক্ষণে ম্যাচটা স্কটিশদের হাত থেকে কার্যত বেরিয়ে গিয়েছিল।
গুরুত্বপূর্ণ সময় ক্যাচ মিস স্কটল্যান্ডের
যদিও ২০ তম ওভারে ক্রিস সোল যদি সহজ ক্যাচটা না ফেলতেন, তাহলেও ম্যাচের ভাগ্য পালটে দেওয়ার সুযোগ পেয়ে যেতে পারত স্কটল্যান্ড। তিন বলে তিন রান বাকি থাকা অবস্থায় টিম ডেভিডের সহজ ক্যাচ ফস্কে দেন তিনি। ওই ক্যাচটা ধরতে পারলে স্কটল্যান্ডের বাজে ফিল্ডিংয়ের বিষয়টি ঢাকা পড়ে যেতে পারত। অজিদের স্নায়ুচাপ বাড়ত। হয়ত জিতে যেতেও পারতেন স্কটিশরা। কিন্তু সেটা হয়নি। ১৯.৪ বলে ছক্কা মেরে অজিদের পাঁচ উইকেট জিতিয়ে দেন ডেভিড।
স্কটল্যান্ডের প্রথম ইনিংস
সেন্ট লুসিয়ায় গ্রুপ 'বি'-র ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে পাঁচ উইকেটে ১৮০ রান তোলে স্কটল্যান্ড। একটা সময় অবশ্য মনে হচ্ছিল যে রানটা অনায়াসে ২০০-র গণ্ডি পার করে যাবে। কিন্তু শেষ পাঁচ ওভারে মাত্র ৪২ রান খরচ করেন অজিরা। জর্জ মুনসে এবং রিচি ম্যাকমুলেনরা যে ভিত্তিপ্রস্তর তৈরি করে দেন, সেটার ফায়দা তুলতে ব্যর্থ হন স্কটল্যান্ডের ব্যাটাররা।
স্কটিশদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৪ বলে ৬০ রান করেন ম্যাককুলেন। ছ'টি ছক্কা মারেন। দুটি চার হাঁকান। স্ট্রাইক রেট ছিল ১৭৬.৪৭। প্রথম ওভারেই উইকেট হারানোর পরে দ্বিতীয় উইকেট জর্জ মুনসির সঙ্গে মাত্র ৪৮ বলে ৮৯ রান যোগ করেন ম্যাককুলেন। মুনসি যখন আউ ২৩ বলে ৩৫ রান করে আউট হন, তখন স্কটিশদের স্কোর ছিল নয় ওভারে ৯২ রানে দু'উইকেট।
কিন্তু সেই ছন্দ আর ধরে রাখতে পারেননি স্কটিশরা। ফলে শেষ ১১ ওভারে মাত্র ৮৮ রান তোলেন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুটি উইকেট নেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তবে তিনি যথেষ্ট রান খরচ করেন। চার ওভারে দেন ৪৪ রান। অন্যদিকে, একটি করে উইকেট পান অ্যাস্টন অ্যাগর, অ্যাডাম জাম্পা এবং নাথান এলিস। চার ওভারে বল করে ৩১ রান দেন মিচেল স্টার্ক। কোনও উইকেট পাননি তিনি।
আরও পড়ুন: T20 World Cup-এর বিপর্যয়ে বাবর, রিজওয়ান, শাহিনদের বেতন কমানোর কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে PCB- রিপোর্ট