শুভব্রত মুখার্জি: জো রুট, বেন স্টোকসদের নাম আজ ক্রিকেট বিশ্বে জনপ্রিয় বললে মনে হয় অনেকটাই কম বলা হয়ে যাবে। ক্রিকেট খেলাটা দেখেন, ভালোবাসেন এমন কোন লোক নেই যারা তাদের নাম জানেন না। একটা পর্যায়ে এই দুই তারকার অধিনায়ক ছিলেন আজিম রফিক। অনূর্ধ্ব ১৯ পর্যায়ে তাঁর নেতৃত্বেই ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেছিলেন এই দুই তারকা। তবে তারা ইংল্যান্ডের সিনিয়র দলে সুযোগ পেয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলেও জাতীয় দলের হয়ে খেলার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গিয়েছে তাঁর। এর মাঝেই কয়েক বছর আগেই তিনি সামনে আনেন ইয়র্কশায়ার কাউন্টি দলের ড্রেসিংরুমে ঘটে যাওয়া বর্ণবৈষম্যের নানা ঘটনা। যা তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল ক্রিকেট বিশ্বে। সেই আজিম রফিক এবার তাঁর আত্মজীবনীতে জানিয়েছেন ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে তিনি মুখিয়ে ছিলেন।এতটাই তাঁর জেদ ছিল সিনিয়র দলের হয়ে খেলা যে যা খুশি করতে প্রস্তুত ছিলেন তিনি!
আরও পড়ুন… T20 WC 2024: ব্যর্থতার দায় নিয়ে কি এবার পাকিস্তান দলের নেতৃত্ব ছেড়ে দেবেন বাবর আজম?
পাশাপাশি নিজেকে সবার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সুরাপানও তাঁকে শুরু করতে হয়েছিল বলে জানান আজিম রফিক। এই ঘটনা কীভাবে তাঁর মানসিক সমস্যা বাড়িয়ে দিয়েছিল তাও জানিয়েছেন তিনি। জো রুট ইয়র্কশায়ারের বর্ণবৈষম্য বিতর্ক চলার সময়ে যে জবানবন্দি দিয়েছিলেন তাতেও যে তিনি হতাশ হয়েছিলেন তাও জানাতে ভোলেননি তিনি। একটা সময়ে ইয়র্কশায়ারের অধিনায়কত্ব ও করেছেন আজিম রফিক। তাঁকে যখন দল থেকে বসিয়ে দেওয়া হয় তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৩ বছর। এই ঘটনার দুই বছর আগেই প্রথম এশিয়ান ক্রিকেটার হিসেবে ইয়র্কশায়ারের অধিনায়ক হওয়ার নজির গড়েছিলেন আজিম রফিক। তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ারের দিকে তাকিয়েই তাঁর পরিবার ইংল্যান্ডে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন… ভিডিয়ো: BAN vs NEP ম্যাচে সেলিব্রেশন করতে গিয়ে সুইমিং পুলে পড়ে গেলেন ভক্ত! কী হল তারপর?
নিজের আত্মজীবনীতে স্মৃতিচারণা করেছেন তিনি।সেই বিষয়ে দ্য গার্ডিয়ানকে তিনি জানিয়েছেন, ‘একটা বিষয় নিয়ে আমার আক্ষেপ রয়েছে। আমি যদিও বিষয়টি উপভোগ করতাম। তা হল আমার একটা পাগলাটে স্বপ্ন ছিল। ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার জন্য মুখিয়ে ছিলাম আমি। তার জন্য যা খুশি করতে আমি প্রস্তুত ছিলাম। দক্ষিণ এশিয়ার লোকেরা বিশেষ করে মুসলিম মানুষদের মধ্যে দুটো আলাদা সংস্কৃতি রয়েছে। একটা ঘরে আর একটা বাইরে কাজের জায়গাতে। একটা সময় ছিল যখন আমি সবার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সুরাপানও করেছি। বিষয়টি আমাকে মানসিক সমস্যায় ফেলে দিয়েছিল। আমার মনে আছে আমার বয়স তখন ১৫। আমাকে গাড়ির ভিতরে সবাই মিলে জোর করে ধরে আমার গলায় রেড ওয়াইন ও ঢেলে দিয়েছিল।’ ইয়র্কশায়ারের বর্ণবৈষম্য বিতর্কে জো রুটের জবানবন্দি সম্বন্ধে বলতে গিয়ে রফিক বলেন, ‘আমার মনে হয় ওই জবানবন্দি দিয়ে ও(রুট) আমাকে নয় নিজেকে ছোট করেছিল। আমি ওইসময়ে খুব ভেঙে পড়েছিলাম। এই বর্ণবৈষম্য বিতর্ক থামানো যেত। যদি সেই সময়ে লোকেরা পিছনে সরে না যেত তাহলে এই বিতর্ক আমরা থামাতে পারতাম। এটা শুধু আমার কেরিয়ার শেষ করে দেয়নি ,গ্যারির(ব্যালেন্স) কেরিয়ার ও শেষ করে দিয়েছিল।’