প্রায় ১৭ বছর আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী আসরে সুপার এইটে উঠেছিল বাংলাদেশ। এরপর পেরিয়েছে সাতটি আসর। তবে এতদিন গ্রুপ পর্বের বাধা উৎরাতেই পারেনি টাইগাররা। এবার নেপালকে উড়িয়ে সেই আক্ষেপ শেষ করল বাংলাদেশ। দ্বিতীয়বারের মতো শেষ আটে খেলার যোগ্যতা অর্জন করল শান্ত বাহিনী। লঙ্কা-ডাচ ম্যাচের অপেক্ষায় না থেকে নিশ্চিত করেছে সুপার এইটের টিকিট।
নেপালের বিরুদ্ধে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশে। মাত্র ১০৬ রানে অলআউট হয়ে যায় শান্তরা। হারের শঙ্কা মাথায় নিয়ে তানজিম সাকিব ও মুস্তাফিজের দুর্দান্ত বোলিং করেন এবং ছোট্ট পুঁজি নিয়েও ২১ রানের জয় পায় টাইগাররা। এরফলে সুপার এইট খেলার যোগ্যতা অর্জন করে তারা।
আরও পড়ুন… বিরাট বা রোহিত নন হরভজনের মতে T20 WC 2024-এ এই তারকাই হলেন ভারতের সবচেয়ে বড় ম্য়াচ উইনার
এদিনের নেপালের বিরুদ্ধে ম্যাচে বেশ কিছু রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ-
১) এদিনের জয়ের ফলে বাংলাদেশ দল প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৩ ম্যাচ জয় পয়েছে।
২) এছাড়াও শাকিব আল হাসানরা এদিন স্কোর বোর্ডে মাত্র ১০৬ রান তুললেও নেপালকে পরাজিত করে। এটি হল সুপার এইটের যোগ্যতা অর্জনের জন্য টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বনিম্ন স্কোর।
৩) এদিনের ম্যাচে তানজিম হাসান সাকিবের ২১ ডট বল হল টুর্নামেন্টের আরও একটি বড় রেকর্ড)। অর্থাৎ নিজের কোটার চার ওভারে মানে ২৪ বলের মধ্যে এদিনের ম্যাচে তানজিম হাসান সাকিবের ২১টি বল ডট ছিল, অর্থাৎ এই ২১ বলে কোনও রান করতে পারেনি নেপালের ব্যাটাররা।
আরও পড়ুন… BAN vs NEP: তানজিমের দুরন্ত বোলিং, নেপালকে লো স্কোরিং ম্যাচে হারিয়ে সুপার ৮-এ গেল বাংলাদেশ
কেমন ছিল ম্যাচ-
টস হেরে ব্যাটে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই আউট ওপেনার তানজিদ তামিম। দলের ৭ রানে সাজঘরে নাজমুল শান্ত। এভাবে স্কোর ২১ থেকে ৩০ রান যেতে না যেতেই বাংলাদেশ তাদের তৃতীয় ও চতুর্থ উইকেট হারায়। রান পঞ্চাশ ছাড়াতেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশের ভক্তেরা ভাবতে থাকেন ইদের খুশি মাটি হল বলে। এই শঙ্কা আরও প্রকট হয় লোয়ার অর্ডারের ব্যাটাররা ব্যর্থতার কারণে। মাহমুদউল্লাহ (১৩) রান আউট হন। শাকিব আল হাসান ধীরে ধীরে ২২ বলে ১৭ রানের বেশি করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ৩ বল থাকতে ১০৬ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। রিশাদ হোসেন ১৩ ও তাসকিন ১২ রান যোগ না করলে স্কোর আরও কম হত।
আরও পড়ুন… T20 WC 2024: আমাদের ভালো খেলোয়াড় আছে, কিন্তু দল হিসেবে… পাকিস্তান টিম নিয়ে কি বিরক্ত বাবর আজম!
জবাব দিতে নামা নেপালের দশা আরও খারাপ হয়। তানজিম সাকিব ও মুস্তাফিজুর রহমান। মিডিয়াম পেস আর খানিকটা সুইংয়ের সঙ্গে আক্রমণাত্মক মনোভাবে বল করেন। তানজিম নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে জোড়া আঘাত করেন। পরের দুই ওভারে নেন দুই উইকেট। মাত্র ৭ রান দিয়ে ডানহাতি তানজিম তুলে নেন ৪ উইকেট। টি-২০ বিশ্বকাপে দেশের হয়ে সবচেয়ে কম রান দিয়ে ৪ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন। এই সময়ে ম্যাচে মাত্র সাত রান দিয়ে তিনটি উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান। নেপাল ২৬ রানে হারায় ৫ উইকেট। সেখান থেকে স্কোর বোর্ডে ৮৫ রান তোলে নেপাল।
আরও পড়ুন… T20 WC 2024 BAN vs NEP: নেপালের বিরুদ্ধে ১০৬ অলআউট! বাইশ গজে লজ্জার ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ
শেষ ৩ ওভারে নেপালের জয়ের জন্য ২৯ রান দরকার ছিল। সেই সময়ে তাদের হাতে ছিল ৪ উইকেট। আক্রমণে আসা তাসকিনের প্রথম বলে ছক্কা তুলে ভয় ধরালেও ৭ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়ে ওভার শেষ করেন তাসকিন। পরের ওভারে মুস্তাফিজুর কোন রান না দিয়ে ১ উইকেট নিয়ে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেন। ৪ ওভারে ৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তিনি। শেষ ওভারে বল হাতে নিয়ে ৩ বলের মধ্যে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচ শেষ করেন শাকিব আল হাসান।