‘নাগিন ডার্বি’ আসতেই হালুম করলেন ‘টাইগার’-রা। আমেরিকার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে লজ্জাজনক হারের পরে বিশ্বকাপের শুরুতেই শ্রীলঙ্কাকে দু'উইকেট হারিয়ে দিল বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করে নয় উইকেট ১২৪ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। এক ওভার বাকি থাকতেই সেই রানটা তুলে নেয় বাংলাদেশ। অথচ বাংলাদেশ যেভাবে শুরু করেছিল, তাতে ম্যাচটা এতদূর আসার কথা ছিল না। কিন্তু শেষের দিকে শ্রীলঙ্কার দুরন্ত বোলিংয়ের কারণে ম্যাচটা এতদূর গড়ায়। শেষের দিকে স্নায়ুর চাপ সামলে বাংলাদেশকে জিতিয়ে দেন বুড়ো ‘ঘোড়া’ মাহমুদুল্লাহ।
বাংলাদেশের রান তাড়া
তাঁর কাজটা অনেকটা সোজা করে দেন দাসুন শানাকা। যিনি ১৯ তম ওভারের প্রথম বলটাই ফুলটস করেন। তাতে ছক্কা হাঁকান বাংলাদেশের তারকা ব্যাটার। তার ফলে বাংলাদেশের উপর যে চাপ তৈরি হয়েছিল, সেটা পুরোপুরি কেটে যায়। সেইসঙ্গে জয়ের জন্য বাংলাদেশের টার্গেট দাঁড়ায় ১১ বলে পাঁচ রান। যদিও শানাকাকে (বা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ, যে দু'জনই ম্যাচে আগে কোনও ওভারে বল করেননি) বল দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় ছিল না শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার কাছে। নিজের সেরা বোলারদের আগে বল করানোর কারণেই ১৯ ওভারে ম্যাচটা শেষ হয়েছে। নাহলে আগেই শেষ হয়ে যেত।
চাপ বেড়েছিল বাংলাদেশের
কারণ ১২৫ রান তাড়া করতে নেমে একটা সময় বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১১.৩ ওভারে ৯১ রানে তিন উইকেট। তোহিদ হৃদয়ের ছক্কার হ্যাটট্রিকের কারণে হাসতে-হাসতে জয়ের দিকে এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ১১.৪ ওভারে হৃদয় আউট হতেই স্নায়ুর চাপে পড়ে যান টাইগাররা। কিছক্ষণ পরেই আউট হয়ে যান লিটন দাস। ১৭ তম ওভারে শাকিব আল হাসান আউট হয়ে যান। তারপর ১৮ তম ওভারে জোড়া উইকেট হারিয়ে চাপ বেড়ে যায় বাংলাদেশ। ১৯ তম ওভার শুরুর সময় বাংলাদেশের স্কোর ছিল আট উইকেটে ১১৪ রান। সেখান থেকে জিতে যায় বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং ইনিংস
ডালাসে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে শ্রীলঙ্কা। পাথুম নিশঙ্কার হাত ধরে দারুণ শুরু করে লঙ্কাবাহিনী। সেইসময় তাঁকে দেখে মনে হচ্ছিল যে এই পিচে অনায়াসে ২০০ রান উঠে যাবে। দু'উইকেট হারালেও মূলত তাঁর কারণেই পাওয়ার প্লে'তে ৫৩ রান তুলে ফেলে শ্রীলঙ্কা। তারপরও নিজের ছন্দ ধরে রাখেন নিশঙ্কা। কিন্তু ৮.৫ ওভারে নিশঙ্কা আউট হতেই খেলার মোড় ঘুরে যায়। নিশঙ্কা যেখানে ২৮ বলে ৪৭ রানের (সাতটি চার এবং একটি ছক্কা) দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন, সেখানে শ্রীলঙ্কার বাকি ব্যাটাররা পুরোপুরি নাকানিচোবানি খেতে থাকেন।
আরও পড়ুন: T20 World Cup-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হার! গালা ডিনার বাতিল পাকিস্তানের
তা সত্ত্বেও টুকটুক করে শ্রীলঙ্কাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন চরিথ আসালঙ্কা এবং ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। কিন্তু ১৫ তম ওভারের প্রথম দু'টি বলেই ম্যাচটা বাংলাদেশের দিকে নিয়ে চলে আসেন তরুণ লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন। প্রথম বলে আউট করে দেন আসালঙ্কাকে। পরের বলেই ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে ফিরিয়ে দেন। তার ফলে ১৪ ওভারে তিন উইকেটে ১০০ রান থেকে ১৪.২ ওভারে শ্রীলঙ্কার স্কোর দাঁড়ায় পাঁচ উইকেটে ১০০ রান।
সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। ২০ ওভারে নয় উইকেটে ১২৪ রানের বেশি তুলতে পারেনি। শেষ ছয় ওভারে মাত্র ২৪ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। হারায় ছ'টি উইকেট। বাংলাদেশের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন রিশাদ এবং মুস্তাফিজুর রহমান। চার ওভারে ২২ রান খরচ করেন রিশাদ। মাত্র ১৭ রান দেন মুস্তাফিজুর। চার ওভারে ২৪ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন তানজিম হাসান শাকিব।