আইপিএলে কেকেআর মেন্টর হিসেবে গম্ভীরের সাফল্যই তাঁকে জাতীয় দলের হেড কোচের পদে বসিয়ে দেয়। তবে টিম ইন্ডিয়ার হেড কোচ হিসেবে গম্ভীরের শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতো। শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়ে ওয়ান ডে সিরিজ হার আড়ালে চলে যেত ভারতীয় দল ঘরের মাঠে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডকে হারালে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভারত নিউজিল্যান্ডের কাছে তিন টেস্টের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে গম্ভীরকে নিয়েও।
দ্রাবিড়ের কোচিংয়ে টি-২০ বিশ্বকাপ জয় যদি ভারতের সাফল্যের উত্তুঙ্গ শিখর হয়, তবে গম্ভীরের কোচিংয়ে ঘরের মাঠে প্রথমবার ৩ টেস্টের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়া টিম ইন্ডিয়ার ব্যর্থতার অতল খাদ হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এই দুইয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান নিতান্ত কম।
নিউজিল্যান্ডের কাছে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পরে ভারতের সিনিয়র ক্রিকেটারদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। বিসিসিআই মোটেও বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখছে না। ভারতীয় বোর্ড এই হারের ময়নাতদন্ত করবে নিশ্চিত। তবে শুধু সিনিয়র ক্রিকেটারদের ভূমিকাই নয়, বরং আতশ কাচের নীচে রাখা হবে কোচ গম্ভীরের পারফর্ম্যন্সকেও।
এক্ষেত্রে ভারতের হেড কোচ হিসেবে গৌতম গম্ভীরের ডানা ছাঁটতে পারে বিসিসিআই। গম্ভীরের ভাগ্য নির্ভর করছে বর্ডার-গাভাসকর ট্রফির উপর। প্রথমত, গত ২টি অজি সফরে গিয়ে ভারত টেস্ট সিরিজ জিতেছে। সুতরাং, এবারও বর্ডার-গাভাসকর ট্রফি নিজেদের দখলে রাখতে চাইবে টিম ইন্ডিয়া।
তাছাড়া বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে ভারত কেমন পারফর্ম্যান্স করে, তার উপর নির্ভর করছে টিম ইন্ডিয়ার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যাওয়া। সুতরাং, গম্ভীরের উপর চাপ থাকবে প্রবল।
অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতীয় দল ব্যর্থ হলে গম্ভীরের হাত থেকে কেড়ে নেওয়া হতে পারে এমন এক ক্ষমতা, যা রবি শাস্ত্রী ও রাহুল দ্রাবিড়কেও দেয়নি বিসিসিআই। তবে গম্ভীরের হাতে শুরু থেকেই সেই ক্ষমতা তুলে দিয়েছে ভারতীয় বোর্ড। আসলে দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে গম্ভীরের মতামত যতটা প্রাধান্য পায়, দ্রাবিড় ও শাস্ত্রী ভারতের কোচ থাকাকালীন টিম সিলেকশনে তাঁদের মতামতকে ততটা গুরুত্ব দেওয়া হতো না বা দল নির্বাচনে অকারণ নাক গলানোর অধিকার ছিল না দ্রাবিড়দের।
বোর্ডের সংবিধান অনুযায়ী দল নির্বাচনী বৈঠকে কোচের কোনও ভূমিকা থাকার কথা নয়। তবে অস্ট্রেলিয়া সফরের গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে গম্ভীরকে ছাড় দেয় বিসিসিআই। হার্দিক পান্ডিয়াকে টপকে সূর্যকুমার যাদবের টি-২০ ক্যাপ্টেন হওয়ার পিছনেও গম্ভীরের হাত রয়েছে বলে খবর। তাছাড়া অজি সফরে হর্ষিত রানার নির্বাচিত হওয়ার পিছনেও গম্ভীরের মতামতই স্বীকৃতি পায়।
তবে অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতীয় দল যদি ব্যর্থ হয়, তবে গম্ভীরের হাত থেকে কেড়ে নেওয়া হতে পারে দল নির্বাচনে নাক গলানোর ক্ষমতা। উল্লেখ্য, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে সিরাজকে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে ব্যাট করতে পাঠানো থেকে শুরু করে সরফরাজ খানকে ব্যাটিং অর্ডারে পিছিয়ে দেওয়ার মতো গম্ভীরের বেশ কিছু সিদ্ধান্তে খুশি নয় বিসিসিআই।