টিম ইন্ডিয়ায় কোচ-ক্যাপ্টেনের অটুট যুগলবন্দি যেমন দেখা গিয়েছে, ঠিক তেমনই কোচ ক্যাপ্টেনের দুই মেরুতে অবস্থানের ছবিও দেখেছে ভারতীয় ক্রিকেট। বর্তমানে ক্যাপ্টেন রোহিত ও হেড কোচ গৌতম গম্ভীরের যে জুটি দেখছে ক্রিকটমহল, তাতে মনে হওয়া স্বাভাবিক যে, ভারতীয় ক্রিকেটের দুটি চাকার অভিমুখ দু'দিকে। অর্থাৎ, ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মার সঙ্গে নতুন কোচ গৌতম গম্ভীরের জুটি শুরুতেই ফ্লপ দেখাচ্ছে।
প্রথমত, ক্যাপ্টেন কোহলি ও কোচ কুম্বলের মধ্যে বনিবনা না হওয়ার ছবি দেখা গিয়েছে সাম্প্রতিক অতীতে। যার জেরে কুম্বলেকে ভারতের হেড কোচের পদ থেকে সরে যেতে হয়। পরে ক্যাপ্টেন কোহলি ও কোচ রবি শাস্ত্রীর জুটিকে মানিকজোড় বলা শ্রেয়। দু'জনেই আগ্রাসী মেজাজের এবং ইটের জবাবে পথর ছোঁড়ার মুডে থাকতেন সর্বক্ষণ। কার্যত সব ক্ষেত্রেই কোচ-ক্যাপ্টেনকে দেখা যেত একই মেরুতে।
পরে রোহিত-দ্রাবিড়ের জুটিকে ঠিক একইভাবে বর্ণনা করা যায়। ক্যাপ্টেন রোহিত ও কোচ দ্রাবিড়কে ভাবনা-চিন্তা থেকে শুরু করে ক্রিকেটারদের সমর্থন করার মতো বিষয়ে সর্বদা একই সারিতে দেখা যেত। রোহিত ও দ্রাবিড় ভারতে পিচ নির্বাচনের ক্ষেত্রেও একই রকম মানসিকতা দেখাতেন। ঘূর্ণি পিচ পছন্দ করতেন বটে, তবে এমন পিচ কখনই চাইতেন না, যেখানে প্রতিপক্ষ দলের সাধারণ মানের স্পিনাররাও ছড়ি ঘোরান।
এবার ক্যাপ্টেন রোহিত ও কোচ গম্ভীর জুটির শুরুটা মোটেও ইতিবাচক হয়নি। এই জুটির কাঁধে ভর করে ভারত এখনও পর্যন্ত তিনটি সিরিজ খেলেছে। যার মধ্যে ২টিতে হারতে হয়েছে ভারতীয় দলকে। প্রথমে শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়ে ওয়ান ডে সিরিজ হারে ভারত। এবার ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের কাছে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় ভারতীয় দল।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, নিউজিল্যান্ডের কাছে টেস্ট সিরিজে ভরাডুবির পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, তবে কি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে কোচ-ক্যাপ্টেনের মধ্যে মতপাথর্ক্য রয়েছে এবং যার মাশুল দিতে হচ্ছে ভারতীয় দলকে। শোনা যাচ্ছে যে, মুম্বইয়ের ঘূর্ণি পিচ তৈরি নিয়ে গম্ভীরের সঙ্গে একমত ছিলেন না রোহিত।
তাছাড়া দল নির্বাচন নিয়েও কোচ-ক্যাপ্টেনের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে বলে খবর। গম্ভীর যে দল নির্বাচনে বিস্তর প্রভাব খাটাচ্ছেন, সেটা বোঝা যায় হর্ষিত রানার টেস্ট স্কোয়াডে ঢুকে পড়তেই। তাছাড়া শার্দুল ঠাকুরকে উপেক্ষা করে নীতীশ রেড্ডিকে অজি সফরের জন্য বিবেচনা করার ক্ষেত্রেও গম্ভীরের মতামতই প্রাধান্য পায় এক্ষেত্রে।
নিউজিল্যান্ডের কাছে হোম সিরিজ হারের পরেই বিসিসিআই কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। এখন বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে ভারত ব্যর্থ হলে তাদের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে বিসিসিআই কঠোর পদক্ষেপ নিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। অবশ্য তখন দেখার বিষয় হবে এটাই যে, ক্যাপ্টেন নাকি কোচ, কোপ পড়ে কার ঘাড়ে।