শুভব্রত মুখার্জি:- ২০২৫ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসর বসবে পাকিস্তানে। তা বেশ কয়েক মাস আগেই নিশ্চিত করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল অর্থাৎ আইসিসি। সেই টুর্নামেন্ট শুরু হতে বাকি এখনও এক বছরেরও বেশি সময়। ২০১৭ সালে শেষবার খেলা হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। এরপর আইসিসি দীর্ঘদিন এই টুর্নামেন্টের আয়োজন করেনি। এবার ফের তারা এই টুর্নামেন্টের আয়োজন করতে চলেছে। তবে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে এই টুর্নামেন্ট কোন ফর্ম্যাটে হবে তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যদিও আইসিসি যখন এই টুর্নামেন্টের রাইটস অর্থাৎ সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করেছে তখন তারা ওয়ানডে টুর্নামেন্ট হিসেবেই বিক্রি করেছে, তবুও এই টুর্নামেন্টকে ৫০ ওভারের না ২০ ওভারের করা হবে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন… বাংলা ফুটবলে লক্ষ্মীলাভ, IFA-র সঙ্গে তিন বছরে সাড়ে সাত কোটি টাকার চুক্তি করল শ্রাচী গ্রুপ
গত মাসে দুবাইতে আইসিসির হেড কোয়ার্টারে এই বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়েছে। এই মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন আইসিসির কর্মকর্তারা, ছিল ব্রডকাস্টার ডিজনি স্টারের প্রতিনিধিরা। এই টুর্নামেন্টের ফর্ম্যাট এখন বদল করতে গেলে ব্রডকাস্টারদের মতামত সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আইসিসির তরফে যদিও জোর দেওয়া হয়েছে এই টুর্নামেন্টকে ৫০ ওভারের করতে। তবুও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ৫০ ওভারের ফর্ম্যাট এবং ২০ ওভারের ফর্ম্যাট উভয় ফর্ম্যাটের ভালো-মন্দ দিক বিচার করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ২০১৯ ওডিআই বিশ্বকাপের পর থেকে ৫০ ওভারের ফর্ম্যাটের ভিউয়ারশিপ কমেছে ২০ শতাংশ যা ভাবাচ্ছে সব পক্ষকেই। ২০২৩ ওডিআই বিশ্বকাপে যদিও তা বেড়েছে। তবে এর পিছনে দুটি কারণ আছে বলে মনে করা হচ্ছে। এক এই বিশ্বকাপের আয়োজক ছিল ভারত। দুই এই বিশ্বকাপে ভারত দুরন্ত পারফরম্যান্স করেছিল। ফলে টুর্নামেন্ট অন্যত্র হলেও এটা হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থাকছেই।
ব্রডকাস্টারদের সামনে তাদের ইনভেন্টরি অর্থাৎ বিজ্ঞাপনের স্লট সমস্ত বিক্রি করতে পারলে একটা ১০০ ওভারের ম্যাচ একটা ৪০ ওভারের ম্যাচের থেকে অনেকটাই লাভজনক। তবে শর্ত একটাই সব স্লট বিক্রি হতে হবে। এই মুহূর্তে ওয়ানডেতে সব বিজ্ঞাপন স্লট বিক্রি হওয়া বেশ চাপের। সেখানে ২০ ওভারের ম্যাচে সেই সমস্যা নেই। আইপিএলের ক্ষেত্রে একটি ১০ সেকেন্ডের স্লট বিক্রি হয়েছে ১৫ লক্ষ টাকাতে। অর্থনৈতিক দিকটা দেখলে একটি টি-২০ ম্যাচে যদি এক ওভারে ব্রডকাস্টার ১০০ টাকা উপার্জন করে সেটা ওয়ানডেতে এসে দাঁড়ায় ৫৭-৬০ টাকার মধ্যে। একটি টি-২০ ম্যাচে যেখানে ১০০টি বিজ্ঞাপনের স্লট বিক্রি হয় সেখানে একটি ওয়ানডে ম্যাচে বিক্রি হয় ১৬০ টি স্লট। ফলে ব্রডকাস্টারের সমস্ত স্লট যদি বিক্রি হয় ওয়ানডেতেই লাভ তাদের। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি এই ৮ দলীয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হওয়ার কথা রয়েছে।১৭-১৮ দিনের একটি উইন্ডো ধরা হয়েছে এই ট্রফি আয়োজনের।
আরও পড়ুন… দ্রাবিড়ের পরে কে হবে ভারতীয় দলের হেড কোচ ? গম্ভীর থেকে জয়াবর্ধনে, ভেসে উঠছে ৫টি নাম
তবে আরও একটি বিষয় আইসিসিকে মাথায় রাখতে হবে। আর তা হল ভারত হয়তো পাকিস্তানে খেলতে নাও যেতে পারে। সেক্ষেত্রে এশিয়া কাপের মতন পাকিস্তান এবং আরব আমিরশাহিতে যৌথভাবে আয়োজন হবে এই টুর্নামেন্ট।সেখানে ভারতের বিপক্ষে যে দলগুলো খেলবে তাদেরকে ঘনঘন ট্রাভেল করতে হবে। ফলে এমনটাও হতে পরে তিনদিনে দুটি ম্যাচ তাদের খেলতে হতে পারে। ওয়ানডে ফর্ম্যাট হলে যা খুব কষ্টকর। টি-২০ ফর্ম্যাট হলে এটা ম্যানেজ হতে পারে। ফলে টুর্নামেন্টের ফর্ম্যাট ঠিক করার আগে আইসিসিকে এই দিকটাও মাথাতে রাখতে হচ্ছে। তার উপর আইসিসি যেহেতু ওয়ানডে ফর্ম্যাট হিসেবেই এই টুর্নামেন্টের স্বত্ব বেচেছে ফলে তাদেরকে ব্রডকাস্টারদেরকেও রাজি করাতে হবে যদি তারা এই টুর্নামেন্টের ফর্ম্যাট বদলাতে চায়।