টিম ইন্ডিয়ার তারকা পেসার মহম্মদ সিরাজ রবিবার বাংলাদেশ এবং নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে হোম টেস্ট সিরিজে তাঁর হতাশাজনক পারফর্ম্যান্স নিয়ে মুখ খোলেন। পরপর ২টি হোম সিরিজের খারাপ পারফর্ম্যান্সের ফলে তিনি চলতি বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে বল করার আনন্দ হারিয়ে ফেলেছিলেন বলা যায়। অবশেষে অস্ট্রেলিয়ার পরিস্থিতিতে তিনি আরও একবার নিজের বোলিং উপভোগ করছেন এবং তার জন্য কৃতিত্ব প্রাপ্য প্রাক্তন ভারতীয় বোলিং কোচ ভরত অরুণের, যিনি এই মুহূর্তে KKR-এর বোলিং কোচের দায়িত্ব রয়েছেন।
বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে চারটি ম্যাচ খেলে সিরাজ মাত্র ৬টি উইকেট নিতে সক্ষম হন। মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে কিউয়িদের বিরুদ্ধে উইকেটহীন থাকতে হয় তাঁকে। স্পিন সহায়ক পরিস্থিতিতে দাপট দেখাতে না পেরে নিজের উইকেটহীন স্পেল নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে শুরু করেন সিরাজ এবং নিজের পারফর্ম্যান্সে হতাশ হয়ে পড়েন বলে জানান নিজেই।
সিরাজের কথায়, ‘আমি অনুভব করতে পারছিলাম যে আমি আগের মতো নিজের বোলিং উপভোগ করছি না। যখন আমি নিজের বোলিং উপভোগ করি, তখন অন্যরকম অনুভূতি হয়। এমনকি যদি আমি উইকেট নাও পাই, আলাদা আনন্দ অনুভব করি নিজের বোলিংয়ে। আর এখন যখন উইকেট পাচ্ছিলাম না, তখন কেন উইকেট পাচ্ছি না, সেটা নিয়ে একটু বেশিই ভাবনা চিন্তা করছিলাম।’
সিরাজ আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, ভারতে স্পিনাররা বেশিরভাগ ওভার বোলিং করে। তাই পেসারদের পক্ষে পাঁচ ওভারের যে স্পেল আপনি পাবেন, তাতে উইকেট পাওয়া একটু কঠিন। তবু কেন উইকেট পাচ্ছি না তা নিয়ে একটু মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তবে এখন আমি নিজের বোলিং উপভোগ করছি।’
সিরাজ খারাপ সময়ে জাতীয় দলে নিজের প্রাক্তন কোচ ভরত অরুণের সঙ্গে কথা বলেন, যিনি তাঁকে উইকেটের পিছনে না দৌড়ে কেবল নিজের বোলিং উপভোগ করার পরামর্শ দেন। সঙ্গে কোথায় ভুল ভ্রান্তি হচ্ছে, সেটাও বুঝিয়ে বলেন।
সিরাজ বলেন, ‘আমার সঙ্গে কেন এমনটা হচ্ছে, সেই বিষয়ে আমি ভরত অরুণ স্যারের সঙ্গে কথা বলি। কারণ তিনি আমাকে বেশ কিছুদিন ধরে চেনেন এবং তিনি অনেক আগে থেকেই আমার বোলিং দেখেছেন। তিনি আমাকে কেবল নিজের বোলিং উপভোগ করতে বলেন এবং উইকেটের পিছনে দৌড়তে নিষেধ করেন।’
টিম ইন্ডিয়ার বর্তমান বোলিং কোচ তথা দক্ষিণ আফ্রিকার পেস কিংবদন্তি মর্নি মর্কেলের সঙ্গে নিজের সমীকরণের কথা বলতে গিয়ে সিরাজ বলেন, মর্কেল তাকে বরাবর 'লড়াকু' বলে অভিহিত করেন।
সিরাজের কথায়, ‘মর্নিও আমাকে সবসময় বলে, তুমি একজন যোদ্ধা। তুমি আমাদের উইকেট এনে দেবে, কিন্তু তুমি শুধু তোমার বোলিং উপভোগ করতে থাকো।’
গোলাপি বলে বোলিং প্রসঙ্গে সিরাজ বলেন, ‘এটার একটা সিনথেটিক ফিলিং আছে। আমরা যে লাল বল নিয়ে খেলি, এটা তার থেকে আলাদা। বলের কারণে কিছুটা বিভ্রান্তি থাকতে পারে, তবে এটি কেবল একটি ম্যাচ তাই আমাদের কেবল খেলার দিকে মনোনিবেশ করতে হবে এবং অনুশীলন করে নিজেদের প্রস্তুত করে তুলতে হবে। কঠোর অনুশীলনেই আমরা দিন দিন উন্নতি করব। গোলাপি বলের সিম খুব শক্ত। এটি উজ্জ্বল এবং বেশ বড়। এটা নিয়ে যত বেশি অনুশীলন করবেন, এর চরিত্র তত ভালো বুঝতে পারবেন।’
সিরাজ আরও যোগ করেন, ‘আমার মনে হয় গোলাপি বলে ব্যাক অফ লেংথে বল করা ভালো। কারণ এটা পিচ করার পরে খুব বেশি সুইং হয় না। তাই আপনি যত বেশি হিট দ্য ডেক বল করবেন এবং সিমের উপরে বল রাখবেন, ততই ভালো।’