বিসিসিআই স্মারক হাতে দিয়ে সম্মানিত করল নাকি করল না, সেটা বড় কথা নয়। সচিন তেন্ডুলকর নামটাই যে ভারতীয় ক্রিকেটমহলের সম্ভ্রম আদায় করে নেয়, সেটা আলাদা করে বলে দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। শনিবার বিসিসিআইয়ের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যে ছবি দেখা যায়, তা বুঝিয়ে দেয় মুহূর্তে আবহ বদলে দিতে সচিনের উপস্থিতিই যথেষ্ট।
ভারতীয় ক্রিকেটে সারা জীবনের অবিস্মরণীয় অবদানকে কুর্নিশ জানাতেই বিসিসিআই এবছর জীবনকৃতি সম্মানে ভূষিত করে সচিন তেন্ডুলকরকে। তাঁর হাতে কর্নেল সিকে নাইডু লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্টের স্মারক তুলে দেন আইসিসি প্রধান জয় শাহ।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সচিনের নাম ঘোষিত হওয়া মাত্রই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে একযোগে উঠে দাঁড়াতে দেখা যায়। সুনীল গাভাসকর, রবি শাস্ত্রীরা তো বটেই, এমনকি বিসিসিআই সভাপতি রজার বিনিও উঠে দাঁড়িয়ে করতালিতে সম্মান জানান তেন্ডুলকরকে। ক্রিকেট জীবনে নিজের পারফর্ম্যান্স দিয়ে দর্শক তথা সতীর্থ ও প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের স্ট্যান্ডিং অভেশন আদায় করে নিয়েছেন সচিন। এবার জীবনকৃতি সম্মান গ্রহণের সময়েও দেখা গেল একই ছবি।
বোর্ডের জীবনকৃতি সম্মান পেয়ে আপ্লুত সচিন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের খুশি প্রকাশ করেন। টুইটে তেন্ডুলকর লেখেন, ‘কর্নেল সিকে নাইডু লাইফটাইম অ্য়াচিভমেন্ট পেয়ে অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি। ২৪ বছরের দীর্ঘ ক্রিকেটীয় সফর আমার একার নয়। সব কোচেদের গাইডেন্স, সতীর্থদের আস্থা, অনুরাগীদের অটুট সমর্থন এবরং পরিবারের বিশ্বাস, ভালোবাসা ও ত্যাগ স্বীকার, সবার মিলিত অবদান রয়েছে আমার কেরিয়ারে।’
সচিন আরও লেখেন, ‘এই সম্মান আমাকে মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, খেলাটাকে এবং যে সব মানুষ আমাকে সব কিছু দিয়েছেন, তাঁদের কিছু ফিরিয়ে দিতে হবে। উন্মুক্ত চিত্তে অসীম বাউন্ডারিতে আমাকে দেশের হয়ে ব্যাট করতে দেওয়ার জন্য বিসিসিআই ও সমস্ত ক্রিকেটপ্রেমীদের কৃতজ্ঞতা জানাই।’
বোর্ডের লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট সম্মানে ভূষিত হওয়ার পরেও সচিন বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর জীবনে মূল্যবোধের গুরুত্ব কতটা। তিনি পুরস্কার হাতে নিয়ে মঞ্চেই বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে দু’বছর ব্যাটে স্টিকার ছাড়াই খেলতে হয়েছে আমাকে। মদ ও তামাকের প্রচার বিরোধী অবস্থানের জন্যই আমার কোনও ব্যাট কন্ট্রাক্ট ছিল না। আমার পরিবার, বিশেষ করে আমার মা-বাবার শিক্ষাই আমাকে এমন অবস্থানে অনড় রাখে। আমার জীবন ও ক্রীকেটীয় যাত্রাপথে মূল্যবোধের গুরুত্ব অসীম।'