দিল্লি ক্যাপিটালসের আইপিএল ২০২৪ অভিযান ধারাবাহিক ছিল না মোটেও। কোনও কোনও ম্যাচে দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স উপহার দিয়েছে ক্যাপিটালস। আবার বেশ কিছু ম্যাচে কার্যত অসহায় আত্মসমর্পণ করেছেন ঋষভ পন্তরা। সব মিলিয়ে ১৪টি লিগ ম্যাচে ৭টি জয় তুলে নেয় দিল্লি। তারা ১৪ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের ৬ নম্বরে থেকে প্লে-অফের দৌড় থেকে ছিটকে যায়। টুর্নামেন্টের শেষে দিল্লি ক্যাপিটালসের সার্বিক পারফর্ম্যান্সের বিশ্লেষণে চোখ রাখা যাক।
দিল্লি ক্যাপিটালসের ১৪টি লিগ ম্যাচের ফলাফল:-
১. মুল্লানপুরে পঞ্জাব কিংসের কাছে ৪ উইকেটে পরাজিত হয়।
২. জয়পুরে রাজস্থান রয়্যালসের কাছে ১২ রানে হেরে যায়।
৩. বিশাখাপত্তনমে চেন্নাই সুপার কিংসকে ২০ রানে হারিয়ে দেয়।
৪. বিশাখাপত্তনমে কেকেআরের কাছে ১০৬ রানে হার মানে।
৫. ওয়াংখেড়েতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে ২৯ রানে হেরে যায়।
৬. লখনউয়ে এলএসজিকে ৬ উইকেটে হারিয়ে দেয়।
৭. আমদাবাদে গুজরাট টাইটানসকে ৬ উইকেটে পরাজিত করে।
৮. দিল্লিতে সানরাইজার্সের কাছে ৬৭ রানে হেরে যায়।
৯. দিল্লিতে গুজরাট টাইটানসকে ৪ রানে হারিয়ে দেয়।
১০. দিল্লিতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে ১০ রানে পরাজিত করে।
১১. ইডেনে কেকেআরের কাছে ৭ উইকেটে হেরে যায়।
১২. দিল্লিতে রাজস্থান রয়্যালসকে ২০ রানে হারিয়ে দেয়।
১৩. চিন্নাস্বামীতে আরসিবির কাছে ৪৭ রানে পরাজিত হয়।
১৪. দিল্লিতে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে ১৯ রানে হারিয়ে দেয়।
দিল্লি ক্যাপিটালসের সেরা পাঁচ ব্যাটার:-
১. ঋষভ পন্ত ১৩টি ইনিংসে ৪৪৬ রান করেছেন।
২. ত্রিস্তান স্টাবস ১৩টি ইনিংসে ৩৭৮ রান করেছেন।
৩. জ্যাক ফ্রেজার ম্যাকগার্ক ৯টি ইনিংসে ৩৩০ রান করেছেন।
৪. অভিষেক পোড়েল ১২টি ইনিংসে ৩২৭ রান করেছেন।
৫. অক্ষর প্যাটেল ১২টি ইনিংসে ২৩৫ রান করেছেন।
দিল্লি ক্যাপিটালসের সেরা পাঁচ বোলার:-
১. মুকেশ কুমার ১০টি ইনিংসে ১৭টি উইকেট নিয়েছেন।
২. খলিল আহমেদ ১৪টি ইনিংসে ১৭টি উইকেট নিয়েছেন।
৩. কুলদীপ যাদব ১১টি ইনিংসে ১৬টি উইকেট নিয়েছেন।
৪. অক্ষর প্যাটেল ১৪টি ইনিংসে ১১টি উইকেট নিয়েছেন।
৫. ইশান্ত শর্মা ৯টি ইনিংসে ১০টি উইকেট নিয়েছেন।
দিল্লি ক্যাপিটালসের ব্যর্থতার ৫ কারণ:-
১. দিল্লির হয়ে ব্যক্তিগতভাবে পর্যাপ্ত রান করছেন অনেকেই। তবে দলগতভাবে দিল্লির ব্যাটিং বিভাগকে একজোট দেখায়নি। জ্যাক ফ্রেজার ম্যাকগার্ক, ঋষভ পন্ত ও ত্রিস্তান স্টাবস ছাড়া অভিষেক পোড়েলও ব্যাট হাতে নজর কেড়েছেন। তবে একই ম্যাচে সকলে মিলে প্রতিপক্ষকে চেপে ধরতে পেরেছেন গুটিকয়েক ম্যাচে।
২. সাতটি হোম ম্যাচের মধ্যে ৫টিতে জয় পায় দিল্লি। তবে অ্যাওয়ে ম্যাচে ঋষভ পন্তদের পারফর্ম্যান্স ভালো হয়নি। তারা ৭টি অ্যাওয়ে ম্যাচের মধ্যে জিতেছে মোটে ২টি।
৩. দিল্লি ১৪ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফের দৌড় থেকে ছিটকে যায়। অথচ ১৪ পয়েন্ট নিয়েই প্লে-অফে ওঠে আরসিবি। দিল্লিকে আসলে নেট রান-রেটে পিছিয়ে পড়তে হয়। তার জন্য দায়ি তিনটি ম্যাচে বিরাট ব্যবধানে পন্তদের হেরে যাওয়া। দিল্লি ভাইজ্যাগে কেকেআরের কাছে হারে ১০৬ রানের ব্যবধানে। তারা কোটলায় সানরাইজার্সের কাছে ৬৭ রানে। শেষে চিন্নাস্বামীতে আরসিবির কাছে ৪৭ রানে পরাজিত হয় ক্যাপিটলস। এত বড় বড় ব্যবধানে ম্যাচ হারের প্রভাব পড়ে তাদের নেট রান-রেটে।
৪. ডেভিড ওয়ার্নার পরিচিত ছন্দে ছিলেন না। তার উপর চোট পেয়ে বেশ কিছু ম্যাচে মাঠের বাইরে থাকতে হয় তাঁকে। মিচেল মার্শ চোট পেয়ে দেশে ফিরে যান। চোট ভোগায় কুলদীপকেও। একটি ম্যাচে নির্বাসনের জন্য মাঠে নামতে পারেননি ক্যাপ্টেন পন্ত। সব মিলিয়ে পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে মাঠে নামার তেমন সুযোগই পায়নি দিল্লি।
৫. সারা টুর্নামেন্ট জুড়ে লোয়ার অর্ডার ব্যাটিং দিল্লির অন্যতম মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শুরুতেই পরপর উইকেট হারালে সেই ধাক্কা সামলে ওঠা সম্ভব হয়নি দিল্লির পক্ষে।