মেয়েদের বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে আজ সবচেয়ে প্রতীক্ষিত লড়াই-ভারত বনাম পাকিস্তান। এক মাসে চতুর্থবার মুখোমুখি দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ, মঞ্চ এবার কলম্বো। যদিও বাইশ গজের উত্তেজনার বাইরেও আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার সানা মীর। সম্প্রতি তিনি ‘আজাদ কাশ্মীর’ মন্তব্য করে চরম বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। চড়ে রাজনৈতিক পারদ, সোশ্যাল মিডিয়ায় ওঠে নিন্দার ঝড়। তবু রবিবার কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ভারত-পাক ম্যাচে তিনি রয়ে গিয়েছেন কমেন্ট্রি প্যানেলে।
ঘটনার সূত্রপাত
গত বৃহস্পতিবার২০২৫-এর মেয়েদের ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময়, পাকিস্তানি ধারাভাষ্যকার এবং প্রাক্তন অধিনায়ক সানা মীরের মন্তব্যে বিতর্কের ঝড় ওঠে। ঘটনাটি ঘটে পাকিস্তানের টুর্নামেন্ট ওপেনারে, বাংলাদেশ ম্যাচে। পাকিস্তানি ক্রিকেটার নাতালিয়া পারভেজকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে সানা মীর ক্রিকেটের রাজনীতি এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। নাটালিয়া প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সানা জানান, ‘নাটালিয়া কাশ্মীর থেকে এসেছে... আজাদ কাশ্মীর… ওকে বেশিরভাগ সময় ক্রিকেট খেলতে হলে লাহোর আসতে হয়।’ এমন মন্তব্যেই তোলপাড় হয় সোশ্যাল মিডিয়া। তুমুল সমালোচনা শুরু হয়। অভিযোগ ওঠে, সানা মীর আন্তর্জাতিক সম্প্রচারে রাজনৈতিক মন্তব্য করেছেন। অনেকেই আইসিসির কাছে সানা মীরকে ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার প্যানেল থেকে অপসারণের দাবি জানাতে থাকেন।
বিতর্কের মুখে শেষ পর্যন্ত মুখ খোলেন সানা। এক্স-এ নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে লেখেন, ‘পরিস্থিতিকে যেভাবে অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে তাতে এটাকে দুঃখজনক বলতেই হয়। এটা করে ক্রিকেটারদের অপ্রয়োজনীয় চাপের মুখে ফেলা হচ্ছে। জনসাধারণকে ব্যাখ্যা দিতে হচ্ছে বলে খারাপ লাগছে। আমি কেবল একজন পাকিস্তানি খেলোয়াড়ের জন্মস্থান সম্পর্কে মন্তব্য করেছি। বোঝাতে চেয়েছি যে, সে কত চ্যালেঞ্জ জয় করে একটি অঞ্চল থেকে উঠে এসেছে। আমি তার অবিশ্বাস্য যাত্রা তুলে ধরতে চেয়েছি। ধারাভাষ্যকার হিসেবে আমরা যে গল্প বলি–খেলোয়াড়রা কোথা থেকে আসে, এটাও তারই অংশ ছিল। একই সঙ্গে আমি অন্য অঞ্চল থেকে আসা আরও দুই খেলোয়াড়ের কথাও বলেছি। তাই এটা নিয়ে দয়া করে রাজনীতি করবেন না।’ অশান্তি ধামাচাপা দিতে ও নিজের বক্তব্যের সাফাই ঘোষণায় সানা নাটালিয়ার প্রোফাইলের একটি স্ক্রিনশটও পোস্ট করেন। তাঁর দাবি, তথ্য হিসেবে তিনি যেখান থেকে রেফারেন্স নিয়েছেন, সেটাতেই এই উল্লেখ ছিল। পরে নাকি সেটা বদলে ফেলা হয়েছে। কিন্তু তাঁর এই ব্যাখ্যার পরও সমালোচনার ঢেউ থামেনি। অনেকেরই বক্তব্য, আন্তর্জাতিক সম্প্রচারে রাজনৈতিক ভূগোলের উল্লেখ অপেশাদার আচরণ।
ফের কমেন্ট্রি প্যানেলে সানা মীর
যদিও আপাতত আইসিসি বা কোনও সম্প্রচার সংস্থা সানা মীরের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়নি। আর তাই, ভারত–পাক ম্যাচের দিন আবারও দেখা গেল সানাকে। সব মিলিয়ে বিতর্ক কমার বদলে আরও তীব্র হচ্ছে। যদিও ভারতের সরকারি সম্প্রচারক ‘স্টার স্পোর্টস’-এ নন, পাকিস্তানের অফিসিয়াল ওয়ার্ল্ড ফিডে উপস্থিত ছিলেন বিতর্কিত ধারাভাষ্যকার। টসের পর প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক মিতালি রাজের পাশে দাঁড়িয়ে ম্যাচ বিশ্লেষণ করতেও দেখা যায় তাঁকে। সেই দৃশ্যের স্ক্রিনশট মুহূর্তে ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এদিকে টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়েছে পাকিস্তান। ভারতীয় দলে একটিমাত্র পরিবর্তন-অমনজোতের জায়গায় ফিরেছেন রেণুকা ঠাকুর।
