একেই বলে হয়তো ভাগ্যে যা লেখা থাকে তাই হয়। শুক্রবার পুণেতে চতুর্থ টি-২০ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত এবং ইংল্যান্ড। ম্যাচ শুরুর সময় দলের প্রথম একাদশে ছিলেন না হর্ষিত রানা। কিন্তু হঠাৎ এক ঘটনার জেরে কিছুটা অপ্রস্তুত ভাবে আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে অভিষেক হয় তাঁর। তবে মাঠে নেমেই তিনি বুঝিয়ে দিলেন খেলার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত ছিলেন। শিবম দুবের পরিবর্তে 'কনকাশন সাব' হিসেবে এসে ‘হিরো’ হয়ে ওঠেন রানা। বল হাতে চার ওভারে ৩৩ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন তিনি। আউট করেন লিয়াম লিভিংস্টোন, জেকব বেথেল এবং জেমি ওভারটনকে।
ছাত্রের এই সাফল্যে খুশি গুরু গৌতম গম্ভীরও। হবেনই বা না কেন। এই হর্ষিতকে জাতীয় দলে সুযোগ দেওয়ায় কম সমালোচনা শুনতে হয়নি তাঁকে। অনেকেই অভিযোগ করেছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের খেলোয়াড় হওয়ার কারণেই তাঁকে নাকি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে খুব বেশি ম্যাচ না খেলা হর্ষিতকে কেন অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য বাছাই করা হয়েছিল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। সেই কারণেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বল হাতে সফল হতেই আবেগের বিস্ফোরণ ঘটে গম্ভীরের। ভাইরাল হয়েছে সেই মুহূর্ত। দেখা যাচ্ছে, হর্ষিত উইকেট নিতেই ডাগ আউট উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন ভারতীয় দলের হেড কোচ।
উল্লেখ্য, হর্ষিতের নেওয়া তিনটি উইকেট ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ম্যাচের ১৯ তম ওভারে ছয় রান দিয়ে ওভারটনকে আউট করে ইংরেজদের যাবতীয় লড়াই শেষ করে দেন হর্ষিত। তাঁর এই অনবদ্য বোলিংয়ের কারণে ১৫ রানে ম্যাচ জিতে টি-২০ সিরিজ পকেটে পুরে নিয়েছে ভারত। আপাতত সিরিজের ফল ৩-১। সিরিজের শেষ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ২ ফেব্রুয়ারি মুম্বইয়ে।
শুক্রবারের ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইংল্যান্ড। ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো ছিল না ভারতের। দ্বিতীয় ওভারে একসঙ্গে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পরে যায় টিম ইন্ডিয়া। পরপর আউট হন সঞ্জু স্যামসন, তিলক বর্মা এবং সূর্যকুমার যাদব। ব্যাট হাতে হাফ সেঞ্চুরি করে ভারতকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনেন শিবম দুবে এবং হার্দিক পান্ডিয়া। দু’জনেই ৫৩ রান করেছিলেন। এছাড়াও ৩০ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন রিঙ্কু সিং। ইংল্যান্ডের হয়ে বল হাতে ৩৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন সাকিব মেহমুদ। ৩২ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন জ্যামি ওভারটন।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল ইংল্যান্ড। হাফ সেঞ্চুরি করেন হ্যারি ব্রুক। তবে ভারতীয় বোলারদের দাপটে ধস নামে ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডারে। শেষ পর্যন্ত সব উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান তুলতে সক্ষম হয় তারা। বল হাতে ভারতের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন হর্ষিত এবং রবি।