মাত্র কদিন আগেই বাংলাদেশের বিপক্ষে লজ্জাজনকভাবে সিরিজ হেরেছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। ঘরের মাঠে প্রথম টেস্টে পর্যুদস্ত হওয়ায় পর দ্বিতীয় টেস্টেও হেরে গেছে শান মাসুদের দল। একটা সময় বাংলাদেশের ইনিংসে ৬ উইকেট পড়ে গেছিল ২৬ রানের মধ্যে, সেখান থেকে লিটন দাসরা কামব্যাক করতে পারলেও পাকিস্তান খেলা ধরতে পারেনি। ঘরের মাঠে এই প্রথম বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে হেরেছে বাবর আজম, শান মাসুদদের পাকিস্তান। এই সফরের আগে পর্যন্ত পাকিস্তানে গিয়ে একটি টেস্টও জিততে পারেনি বাংলাদেশ, আর সেখান থেকেই তাঁরা এবারে ফিরেছে সিরিজ হোয়াইটওয়াশের কৃতিত্ব নিয়ে। পাকিস্তান ক্রিকেটারদের যতই মুন্ডপাত চলুক না কেন, শুধু ক্রিকেটারদেরই এই ব্যর্থতার আসল কারণ হিসেবে মানতে নারাজ বর্ষিয়ান ধারাভাষ্যকার এবং সাংবাদিক হর্ষ ভোগলে।
আরও পড়ুন-দলীপ ট্রফিতে লাল বলের ক্রিকেটে ফেরার আগে আবেগঘন বার্তা পন্তের! বললেন কোনও আশা রাখছেন না!
হর্ষ ভোগলের মতে দেশের যদি অর্থনৈতিক উন্নতি না হয় তাহলে ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাসও ধাক্কা খায়। ছোটবেলায় ইংরেজদের দেখে তাঁদের মনে হত এরা হয়ত অনেক এগিয়ে রয়েছে, কিন্তু আসতে আসতে যত সময় গড়িয়েছে ভারতের উন্নতি হয়েছে ততই চোখে চোখ রেখে ক্রিকেটাররাও লড়াইয়ের আত্মবিশ্বাস পেয়েছে, ফলে পাকিস্তানের সামগ্রিকভাবে উন্নতি না হলে ক্রিকেটের উন্নতি হওয়া কঠিন বলেই মনে করছেন হর্ষ ভোগলে।
আরও পড়ুন-'কি ভাগ্যিস! ওটা আমার শেষ ম্যাচ ছিল, নাহলে ছেলেরা আমায়',কোন ভুলের কথা দ্রাবিড়ের গলায়?
পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার রশিদ লতিফের সঙ্গে এক আলোচনায় হর্ষ ভোগলে বলেন, ‘আমি যখ ৯০-এর দশকে প্রথম ইংল্যান্ডে যাই তখন দেখেছিলাম ওরা যা পারে আমরাও তা পারি। কিন্তু আমাদের একটা মাইন্ডসেট ছিল যে ইংরেজরা বুঝি আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে। আজ বিরাট কোহলি এমনি এমনি এত রান করছে না। আরও অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটারও ছিল অতীতে। কিন্তু বিরাট কোহলির মধ্যে এত আত্মবিশ্বাস রয়েছে কারণ দেশের উন্নতি হয়েছে। এখন ও গিয়ে বলবে আমি বছরে ২৫০ কোটি টাকা অর্জন করি। এটা করতে পারলে নিজের ওপর এমনিই আত্মবিশ্বাস আসবে। ৯০-এর দশক থেকে ভারতের উন্নতি হয়েছে, বিনিয়োগ বেড়েছে সামগ্রিকভাবে, শুধু খেলা বলে নয়। এরপর খেলাতেও স্পন্সরশিপ বেড়েছে, যেগুলো আখেরে খেলোয়াড়দেরও আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। ’
আরও পড়ুন-বিশ্বক্রিকেটে ভারত-অস্ট্রেলিয়াই তো রাজা! Border Gavaskar সিরিজের আগে বললেন ম্যাক্সওয়েল
স্পন্সর নিয়ে হর্ষ বলছেন, ‘স্পন্সররা বুঝতে পারল যে মানুষের কাছে পৌঁছাতে গেলে হয় খেলা নয় ছবি বানাতে হবে। তাই এখন ক্রিকেটকে হাতিয়ার করে মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে স্পন্সররা। আইপিএলে ৬ বিলিয়ন ডলার আসছে, আমি যখন পড়াশোনা করতাম তখন এক কোটিতে কতগুলো শূন্য হয় সেটাই মনে রাখতে পারতাম না। এই বদলটা ৯০ থেকে এসেছে। সেই সময় মাত্র তিন সপ্তাহের ফরেন এক্সচেঞ্জ ছিল। যখন অর্থনৈতিকভাবে ভারত উন্নত করতে থাকল,আমরাও সেই জাহাজে উঠে গেলাম। এরপর আমরা দেখলাম যেটা বিবিসি পারে সেটা আমিও পারি ’। এই ভিডিয়ো নিজের সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন রশিদ লতিফ। অর্থাৎ বিষয়টি যে তিনি মেনে নিয়েছেন, সেকথা বলাই যায়।