২০২৫ সালে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জয়ের মুখ দেখেছে কদাচিৎ, হেরেছে বেশি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও একটিও ম্যাচ জেতা হয়নি তাদের। এবার নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে সিরিজের প্রথম ২টি টি-২০ ম্যাচে একতরভাবে পরাজিত হয় পাকিস্তান। তবে তৃতীয় ম্যাচে কার্যত রেগেমেগে ঘুরে দাঁড়ায় পাক দল। কিউয়িদের বিরাট রানের ইনিংস তাড়া করতে নেমে দাপুটে জয় তুলে নেন সলমন আঘারা।
শুক্রবার অকল্যান্ডে রীতিমতো আগ্রাসী ক্রিকেট উপহার দেন পাক ব্যাটাররা। বিশেষ করে হাসান নওয়াজ ব্যাট হাতে যে রকম তাণ্ডব চালান, তাতে বিপর্যস্ত দেখায় কিউয়ি বোলারদের। এই জয়ের সুবাদে ৫ ম্যাচের টি-২০ সিরিজে ভেসে থাকে পাকিস্তান। তারা সিরিজের ব্যবধান কমিয়ে ২-১ করে। এই ম্যাচে হারলেই টি-২০ সিরিজ হার নিশ্চিত হয়ে যেত পাকিস্তানের।
ইডেন পার্কে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নামে নিউজিল্যান্ড। তারা নিয়মিত অন্তরে উইকেট খোয়াতে থাকলেও রান তোলার গতি কমতে দেয়নি। মার্ক চাপম্যানের ব্যাটে ভর করে কিউয়িরা দলগত ২০০ রানের গণ্ডি টপকে যায়। নিউজিল্যান্ড ১৯.৫ ওভারে ২০৪ রানে অল-আউট হয়ে যায়।
শতরান হাতছাড়া চাপম্যানের
চাপম্যান নিশ্চিত শতরান মাঠে ফেলে আসেন। তিনি ৭টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ২৯ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতরান পূর্ণ করেন। শেষমেশ ৪৪ বলে ৯৪ রানের মারকাটারি ইনিংস খেলে আউট হন তিনি। চাপম্যান মোট ১১টি চার ও ৪টি ছক্কা মারেন। এছাড়া ১৮ বলে ৩১ রান করেন ক্যাপ্টেন ব্রেসওয়েল। তিনি ৩টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন।
টিম সেফার্ত ১৯, ডারিল মিচেল ১৭ ও ইশ সোধি ১০ রানের যোগদান রাখেন। পাকিস্তানের হয়ে ৪ ওভারে ২৯ রান খরচ করে ৩টি উইকেট নেন হ্যারিস রউফ। ৪ ওভারে ৩৬ রান খরচ করে ২টি উইকেট নেন শাহিন আফ্রিদি। ৩ ওভারে ৪৩ রান খরচ করে ২টি উইকেট সংগ্রহ করেন আবরার আহমেদ। আব্বাস আফ্রিদি নেন ২৪ রানে ২টি উইকেট। ১টি উইকেট পকেটে পোরেন শাদব খান।
দাপুটে শতরান নওয়াজের
পালটা ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান ১৬ ওভারে মাত্র ১ উইকেটের বিনিময়ে ২০৭ রান তুলে ম্যাচ জিতে যায়। অর্থাৎ, ২৪ বল বাকি থাকতে ৯ উইকেটে ম্যাচ জেতে তারা। বিধ্বংসী শতরান করেন হাসান নওয়াজ। তিনি ৪টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে মাত্র ২৬ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতরান পূর্ণ করেন। নওয়াজ শতরানের গণ্ডি টপকান ৪৪ বলে। শেষমেশ ১০টি চার ও ৭টি ছক্কার সাহায্যে ৪৫ বলে ১০৫ রান করে অপরাজিত থাকেন হাসান।
বাবরের রেকর্ড ভাঙলেন হাসান
পাকিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে সব থেকে কম বলে শতরান করার রেকর্ড গড়েন নওয়াজ। তিনি ভেঙে দেন বাবর আজমের রেকর্ড। বাবর ২০২১ সালে সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৪৯ বলে শতরান করেন। কেরিয়ারের মোটে তিন নম্বর আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচে মাঠে নেমেই বাবরের থেকে দ্রুততম শতরানের রেকর্ড ছিনিয়ে নেন নওয়াজ।
এছাড়া নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে এদিন দাপুটে হাফ-সেঞ্চুরি করেন ক্যাপ্টেন সলমন আঘা। তিনি ৩১ বলে ৫১ রান করে নট-আউট থাকেন। মারেন ৬টি চার ও ২টি ছক্কা। ২০ বলে ৪১ রান করে আউট হন মহম্মদ হ্যারিস। তিনি ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন। সঙ্গত কারণেই ম্যাচের সেরা হন হাসান নওয়াজ।