আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম দর্শনেই সকলকে মুগ্ধ করেছেন হর্ষিত রানা। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তাঁর পেস এবং বাউন্স সামলাতে ব্যর্থ হয়েছেন হেড-স্টার্করা। তাঁকে দেখে একবারের জন্যও মনে হয়নি প্রথমবার ভারতের হয়ে খেলছেন। পার্থে টিম ইন্ডিয়ার ২৯৫ রানে ম্যাচ জয়ের পিছনে অন্যতম বড় ভূমিকা ছিল তাঁর। প্রথম ইনিংসে ৪৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৯ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছিলেন রানা। বিগত ১২ মাসে তিনি যা কিছু অর্জন করেছে তা খুব কম ক্রিকেটারই করে দেখাতে পেরেছে। তাঁর এই উত্থান দেখে অবাক হয়েছেন অনেকেই, তবে মোটেও অবাক নন হর্ষিতের এক সময়ের কোচ এনএস নেগি। তিনি মনে করছেন, হর্ষিত ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য একজন সম্ভাব্য মাল্টি ফরম্যাট বোলার হয়ে উঠতে চলেছেন।
দিল্লির অনূর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে খেলার সময় হর্ষিতের সঙ্গে পরিচয় নেগির। শিষ্যের পার্থের পারফরম্যান্স দেখে নিজের খুশি চেপে রাখতে পারেননি তিনি। নেগি জানিয়েছেন, ওঁ ভারতের হয়ে কমপক্ষে ৭০-৮০টি টেস্ট খেলার দাবি রাখবে। তিনি বলেন, ‘হর্ষিত একজন খুবই প্রতিভাবান বোলার। গত দুই মরশুমে রঞ্জি ট্রফিতে দিল্লির হয়ে অনবদ্য পারফরম্যান্স করেছেন তিনি। গতবছর যখন আমি দিল্লির ফিল্ডিং কোচ ছিলাম তখন ওর অভিষেক হয়েছিল। খুবই ভালো বল করছে সে।’ PTI-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেগি বলেন, ‘এটা তো সবে শুরু, সে এমন একজন ক্রিকেটার যে ভারতের হয়ে ৭০-৮০টি টেস্ট খেলার ক্ষমতা রাখে। এমনকী আমার মনে হয় ও ক্রিকেটের ৩ ফরম্যাট খেলতেই সমান ভাবে সক্ষম।’
নেগির সঙ্গে রানার প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল ২০১৮ সালে। যখন তিনি প্রথমবার দিল্লির অনূর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে খেলার জন্য ডাক পেয়েছিলেন। এরপরে গুজরাট টাইটানস দলের যখন ফিল্ডিং কোচ ছিলেন নেগি, তখন হর্ষিত সেখানে নেট বোলার হিসেবে যোগ দেন। তিনি জানান, হর্ষিতের সব সময় স্বপ্ন ছিল জোরে বল করা। বোলার হিসেবে যোগ দেন। তিনি জানান, হর্ষিতের সব সময় স্বপ্ন ছিল জোরে বল করা। তাঁর ফিটনেসের উন্নতি তাঁকে নিজের লক্ষ্য পূরণে অনেকটা সাহায্য করেছে। নেগি বলেন, ‘২০১৮ সালে, যখন আমি দিল্লির অনূর্ধ্ব ১৯ দলের প্রধান কোচ ছিলাম, আমি লক্ষ্য করেছি যে তার একটি খুব মসৃণ অ্যাকশন এবং একটি ভালো ছন্দ ছিল। ভালো ব্যাটিং করতে পারত। সে তার ফিটনেস এবং গতির উপর কাজ করেছে এবং ধীরে ধীরে একজন বোলার হিসেবে উন্নতি করেছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে ও একজন ফাইটার। আমি যখন প্রথম মায়াঙ্ক (যাদব) এবং হর্ষিতকে দলে বাছাই করি, তখন তারা দু’জনেই খুব কাঁচা কিন্তু প্রতিশ্রুতিবান ক্রিকেটার ছিল। আমি শুধু আশা করি যে সে তার ফিটনেস নিয়ে কাজ করতে থাকবে এবং ধীরে ধীরে তার গতি বাড়াতে থাকবে।’ শেষে নেগি বলেন, ‘সে একজন ভালো ব্যাটার এবং আগামী বছরগুলিতেও ব্যাট হাতে ভালো পারফর্ম করতে পারে। ও এমন একজন যিনি ভারতের হয়ে নিচের দিকে ব্যাট করে সহজেই ৩০-৪০ রান করতে পারবে। হর্ষিতকে তার ফিটনেসের উপর নজর রাখা উচিত এবং আধুনিক দিনের কিংবদন্তি জসপ্রীত বুমরাহের থেকে অনেক কিছু শেখার চেষ্টা করা উচিত। বোলিং করার সময় তাকে কেবল তার ক্ষমতার ওপর ফোকাস থাকতে হবে এবং এটি তাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সফল হতে সাহায্য করবে... তার প্রতিভা, বাউন্স এবং গতি আছে।’